কেন্দ্রে স্বৈরাচারী, ফ্যাসিস্ট, হিটলারি সরকার চলছে : শান্তনু সেন
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন তৃণমূলের মুখপাত্র শান্তনু সেন এমপি ভারতে স্বৈরাচারী, ফ্যাসিস্ট, হিটলারি সরকার চলছে বলে মন্তব্য করেছেন।
তিনি আজ (শনিবার) দিল্লিতে নীতি আয়োগের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপস্থিত থাকা প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করে ওই মন্তব্য করেন।
রাজ্য সচিবালয় ‘নবান্ন’ সূত্রে জানা গেছে, মুখ্যমন্ত্রীর পরিবর্তে রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী এবং অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য নীতি আয়োগের বৈঠকে যাবেন বলে স্থির হয়েছিল। সেই মতো কেন্দ্রীয় সরকারকে একটি চিঠি পাঠিয়ে প্রতিনিধিদের নাম জানানো হয়। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে উপস্থিত থাকলেই ভালো।
এ প্রসঙ্গে রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, ‘রাজ্যের বহু প্রকল্পের টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার। বৈঠকে এই বিষয়ে প্রশ্ন তুলতাম জেনেই কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকার চাচ্ছে না আমরা দিল্লি যাই।’
ওই ইস্যুতে আজ তৃণমূলের মুখপাত্র শান্তনু সেন এমপি বলেন, ‘বর্তমানে কেন্দ্রীয় শাসক দল তারা যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোকে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলোতে সমস্ত রকম ভাবে বঞ্চনা করা, তাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় এজেন্সির অপব্যবহার, এগুলো আমরা দেখছি। আমাদের বাংলার ক্ষেত্রে ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকা আটকে রেখেছে। বার বার আবেদন করা সত্ত্বেও আমাদের কোনও ভুল না থাকা সত্ত্বেও প্রাপ্য টাকা আটকে রেখে দিয়েছে। এর পরেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের অর্থমন্ত্রী, মুখ্য সচিব ও অর্থ সচিবকে নীতি আয়োগের বৈঠকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু সেখান থেকে জানিয়ে দেওয়া হল তাদেরকে বৈঠকে যোগ দিতে দেওয়া হবে না। অর্থাৎ, এটা আরও একবার ভারতবর্ষে একটা তুঘলকি, স্বৈরাচারী, স্বেচ্ছাচারী, ফ্যাসিস্ট, হিটলারি সরকার চলছে, তার নিদর্শন। বাংলাকে কীভাবে বঞ্চনা করা হচ্ছে, বাংলা সম্পর্কে কীরকম রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পোষণ করে সেটারও নিদর্শন কেন্দ্রীয় সরকার রেখে দিলো।’
ওই ইস্যুতে রাজ্য বিজেপি নেতা শমিক ভট্টাচার্য বলেন, ‘নীতি আয়োগের বৈঠক বয়কট করে আসলে নিজেদের রাজ্যকেই বঞ্চিত করছেন। রাজ্যবাসীর সঙ্গে প্রবঞ্চনা করছেন। রাজ্যবাসীও এদের বয়কট করে দেবে।’
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভাপতিত্বে আজ নীতি আয়োগের বৈঠক বিভিন্ন কারণে ‘বয়কট’ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও, পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন। এছাড়া রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট এবং কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন ব্যস্ততার কারণে বৈঠকে যোগ দেননি।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ওই বৈঠকে ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারতকে একটি উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য, দক্ষতা উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন এবং পরিকাঠামো উন্নয়ন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন বলে জানা গেছে।
পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান এটিকে শুধুমাত্র একটি ‘ফটো সেশন’ বলে অভিহিত করে বকেয়া সমস্যাগুলো সমাধান না করা পর্যন্ত সভায় যোগ দিয়ে কোনও লাভ নেই বলে মন্তব্য করেছেন। #
পার্সটুডে/এমএএইচ/এমবিএ/২৭
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।