দিল্লিতে তুলকালাম, তৃণমূল নেতা-মন্ত্রী-এমপিরা আটক
https://parstoday.ir/bn/news/india-i128922-দিল্লিতে_তুলকালাম_তৃণমূল_নেতা_মন্ত্রী_এমপিরা_আটক
ভারতের রাজধানী দিল্লিতে তৃণমূল কংগ্রেসের ধর্না-অবস্থান কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছে। 
(last modified 2025-11-11T14:44:42+00:00 )
অক্টোবর ০৪, ২০২৩ ১৫:২৪ Asia/Dhaka
  • দিল্লিতে তুলকালাম, তৃণমূল নেতা-মন্ত্রী-এমপিরা আটক

ভারতের রাজধানী দিল্লিতে তৃণমূল কংগ্রেসের ধর্না-অবস্থান কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছে। 

বিভিন্ন প্রকল্পে বাংলার বকেয়া পাওনা অর্থ দেওয়ার দাবিতে কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ২/৩ অক্টোবর দু’দিনের ধর্না-অবস্থান কর্মসূচি হাতে নিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন  তৃণমূল কংগ্রেস। প্রথম দিনের কর্মসূচি মোটামুটি শান্তিপূর্ণ হলেও দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ, গতকাল মঙ্গলবারের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে দিল্লি পুলিশ, কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনী সিআইএসএফ ও অন্যদের বাধার মুখে পড়তে হয়। এদিন রাতে একপর্যায়ে তৃণমূলের শীর্ষ নেতা-মন্ত্রী-এমপিদের জোর করে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। 

গতকাল (মঙ্গলবার) রাতের ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশ্যে তীব্র কটাক্ষ করে বলেন, ‘ওরা ভয় পেয়েছে! বাংলার মানুষ দ’দিনে যে ট্রেলার  দেখিয়েছে তাতে নরেন্দ্র মোদীর ৫৬ ইঞ্চি ছাতি ৬ ইঞ্চিতে পরিণত হয়েছে!’ 

তৃণমূল সভানেত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক বার্তায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বিজেপির হাত হিসেবে কাজ করা দিল্লি পুলিশ আমাদের  প্রতিনিধিদের নির্লজ্জ ভাবে হেনস্থা করেছে। যাদেরকে জোর করে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল তাদের অপরাধীদের মতো পুলিশ ভ্যানে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কারণ, তারা ক্ষমতার সামনে সত্য কথা বলার সাহস দেখিয়েছিল। তাদের ঔদ্ধত্যের কোনো সীমা নেই। অহংকার তাদের অন্ধ করে দিয়েছে। বাংলার কণ্ঠস্বরকে দমন করতে তারা এখন সব সীমা অতিক্রম করেছে!’  

মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারকে টার্গেট করে বলেন, ‘আজ গণতন্ত্রের জন্য একটি  অন্ধকার, অশুভ দিন। বাংলার মানুষের প্রতি বিজেপির ঘৃণা প্রকাশ্যে এসেছে। গরিবদের প্রতি তাদের অবজ্ঞা এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি তাদের অনাস্থা ফুটে উঠেছে।’

প্রসঙ্গত, গতকাল দিল্লির যন্তর মন্তরের দলীয় কর্মসূচি শেষে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী নিরঞ্জন জ্যোতির সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়সহ তৃণমূলের একটি প্রতিনিধি দলের। সেই অনুযায়ী তারা সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে পায়ে হেঁটে দিল্লির কৃষিভবনে পৌঁছন। কিন্তু কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তাদের সঙ্গে দেখা না করায় তারা কৃষিভবনেই অবস্থান শুরু করেন। রাত ৯টা নাগাদ  অবস্থানরত তৃণমূলের প্রতিনিধি দলকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ দিল্লি পুলিশ  জোর করে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করলে এ সময়ে  শুরু হয় তুমুল ধস্তাধস্তি। তৃণমূলের পক্ষ থেকে জানানো হয়,  সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়সহ দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে আটক করেছে দিল্লি পুলিশ। বাজেয়াপ্ত করা হয় তাদের মোবাইল ফোনও। কমপক্ষে দু’ঘণ্টা পর থানা থেকে অবশেষে রাত ১১টা নাগাদ তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।   

‘এনসিপি’ নেত্রী সুপ্রিয়া সুলে এমপি বলেছেন, ‘এদিন যা ঘটল তা  প্রতিহিংসাপরায়ণ। পশ্চিমবঙ্গের এমপিদের কৃষি ভবন থেকে জোর করে বের করে দিল্লি পুলিশ আটক করেছে! এটা স্পষ্ট যে দিল্লির কিছু অদৃশ্য হাত এর পিছনে রয়েছে। এটি একটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক কাজ যা আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে কলঙ্কিত করে।’ 

কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবি করেছেন, তিনি আড়াই ঘণ্টা ধরে তৃণমূল এমপিদের জন্য দফতরে অপেক্ষা করে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘আজ আড়াই ঘণ্টা  সময় আমার নষ্ট হল। আজ আমি তৃণমূল এমপিদের জন্য অপেক্ষা করতে  করতে সাড়ে আটটার সময় অফিস থেকে বেরিয়েছি। তারা সন্ধ্যা ৬টার সময়ে দেখা করার জন্য সময় নিয়েছিলেন।’

পাল্টা জবাবে তৃণমূল নেত্রী মহুয়া মৈত্র এমপি মন্ত্রীকে  মিথ্যাবাদী  এবং তিনি পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে গেছেন বলে মন্তব্য করেছেন।  এদিকে, দিল্লিতে হেনস্থার প্রতিবাদে আগামী (বৃহস্পতিবার)  কোলকাতায় রাজভবন অভিযানের ডাক দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এমপি। চলবে রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচিও।      #

এমএএইচ