অক্টোবর ২৪, ২০২৩ ১২:২২ Asia/Dhaka
  • উত্তর প্রদেশে ৪ হাজার মাদ্রাসায় তদন্ত চালাবে ‘এসআইটি’

ভারতে বিজেপিশাসিত উত্তর প্রদেশে কমপক্ষে ৪ হাজার মাদ্রাসায় তদন্ত চালাবে বিশেষ তদন্ত টিম (এসআইটি)। 

এসব মাদ্রাসায় বিদেশী অনুদান এবং যে কার্যকলাপে সেই অর্থ ব্যবহার করা হয়েছে তা তদন্ত করতে রাজ্য সরকার একটি বিশেষ তদন্ত দল (এসআইটি) গঠন করেছে। গতকাল (সোমবার) কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান।

সূত্রে প্রকাশ, উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নির্দেশে রাজ্য পুলিশের অ্যান্টি-টেররিস্ট স্কোয়াডের (এটিএস) অতিরিক্ত মহাপরিচালক (এডিজি) মোহিত আগরওয়ালের নেতৃত্বে তিন সদস্য সমন্বিত একটি ‘এসআইটি’ গঠন করা হয়েছে, যাতে সাইবার সেলের পুলিশ সুপার (এসপি) অধ্যাপক ত্রিবেণী সিং এবং সংখ্যালঘু কল্যাণ দফতরের পরিচালক ভারতীয় প্রশাসনিক পরিসেবা (আইএএস) কর্মকর্তা জে রীভাকে সদস্য করা হয়েছে।

এডিজি (এটিএস) মোহিত আগরওয়াল বলেন, তদন্তের জন্য ‘এসআইটি’ গঠন করা হয়েছে এবং এই তদন্ত করা হবে। কিন্তু তদন্তের বিষয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু জানাননি। তিনি বলেন, রাজ্যে প্রায় ২৪ হাজার মাদ্রাসা রয়েছে, যার মধ্যে ১৬ হাজার স্বীকৃত এবং ৮  হাজার অস্বীকৃত। এর মধ্যে যেসব মাদ্রাসা বিদেশ থেকে অনুদান নিচ্ছে সেগুলো তদন্ত করে দেখা হবে। অনুদানের অর্থ কোন খাতে ব্যবহার করা হয়েছে তাও পরীক্ষা করা হবে।

জানা গেছে, কমপক্ষে চার হাজার মাদ্রাসা তদন্তের আওতায় রয়েছে এবং চলতি সপ্তাহে তাদের নোটিশ পাঠানো হবে। উল্লেখ্য, গত কয়েক বছরে নেপাল সীমান্তবর্তী এলাকায় কিছু মাদ্রাসা খোলা হয়েছে। উত্তর প্রদেশের সাতটি জেলা, মহারাজগঞ্জ, সিদ্ধার্থনগর, শ্রাবস্তী, বলরামপুর, বাহরাইচ, লখিমপুর খেরি এবং পিলিভিটের সাথে সীমানা রয়েছে নেপালের।  ‘এসআইটি’  এ সব জেলার মাদ্রাসাগুলো থেকে তদন্ত শুরু করতে পারে।

বলা হচ্ছে, অভিযোগ পাওয়া গেছে, বিদেশ থেকে মাদ্রাসাগুলোকে আর্থিক অনুদান দেওয়া হয় এবং তা দেশবিরোধী কাজে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এর আগেও বিভাগীয় পর্যায়ে মাদ্রাসাগুলো নিয়ে তদন্ত করা হলেও উল্লেখযোগ্য কোনো ফল পাওয়া যায়নি। গত বছর মাদ্রাসাগুলো জরিপের পর কর্মকর্তারা দেখতে পান যে সীমান্ত এলাকার অধিকাংশ মাদ্রাসা সম্প্রতি বিপুল অর্থ পেয়েছে, কিন্তু তারা এর সঠিক হিসাব দিতে পারেনি।  

মুফতি আব্দুস সালাম

 

এ প্রসঙ্গে আজ (মঙ্গলবার) জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ সম্পাদক ও রাবেতায়ে মাদারিসে ইসলামিয়া আরাবিয়ার সম্পাদক মুফতি আব্দুস সালাম রেডিও তেহরানকে বলেন, ‘দেখুন মাদ্রাসা, আমরা যেটা জানি মাদ্রাসা ইসলাম ধর্মে শিক্ষার জায়গা। আমরা আজীবন মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেছি, মাদ্রাসায় পড়িয়েছি, এবং এখনও মাদ্রাসার সঙ্গে যুক্ত। এখানে কোনোরকম বিদ্বেষ, ব্যক্তি বিদ্বেষও প্রশ্রয় দেয়া হয় না, দেশের সঙ্গে বিদ্বেষ তো দূরের কথা! আমরা মুসলিম সমাজকে যে শিক্ষা দিই, সেটা হচ্ছে মানবপ্রেম। মানুষের প্রতি ভালোবাসা, মানুষের সমস্যা নিয়ে কাজ করা, তার মধ্যেই আমাদের দুনিয়া এবং আখেরাতের কল্যাণ নিহিত আছে। এখানে কোনো বেআইনি অর্থ অবৈধ জায়গায় ব্যবহৃত হবে, বা তারা কোনো সন্ত্রাসের সঙ্গে যুক্ত এমনটা আজ পর্যন্ত কোনো ধর্মীয় স্কলারের চরিত্রে আমরা দেখিনি।’ রাজ্য সরকারকে টার্গেট করে তিনি আরও বলেন, ‘এর আগেও তারা বিভিন্নভাবে তদন্ত করেছে, সর্বত্র তাদের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে, নজরদারি রয়েছে। কিন্তু তার পরেও যে কথা তারা বলতে চাচ্ছে আমরা তার কোনো কিছুই খুঁজে পাই না। মূলত দেখা যাচ্ছে, দেশের সার্বিক যে অধঃপতন, দেশের নাগরিক সমাজ যে কষ্টের মধ্যে রয়েছে, সেই বিষয়গুলো যাতে আলোচনার মধ্যে না আসে সেজন্য এসব করা হচ্ছে। আগেও যেমন তদন্ত করেছে কিছুই পায়নি, আবারও তাই হবে’ বলেও মন্তব্য করেছেন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ সম্পাদক ও রাবেতায়ে মাদারিসে ইসলামিয়া আরাবিয়ার সম্পাদক মুফতি আব্দুস সালাম।

সূত্রে প্রকাশ, ‘এসআইটি’ এ জাতীয় সমস্ত মাদ্রাসাকে নোটিশ দেবে এবং ফরেন এক্সচেঞ্জ আর্নিং অ্যাকাউন্টসে (ইইএফসি) হওয়া লেনদেন সম্পর্কে তথ্য চাইবে। এরপর যেসব মাদ্রাসা বিদেশ থেকে তহবিল নিচ্ছে সেগুলো তালিকাভুক্ত করে কোন দেশ থেকে অর্থ পাঠানো হয়েছে এবং কোন কাজে ব্যবহার করা হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হবে। সন্ত্রাস এবং জোরপূর্বক ধর্মান্তরকরণসহ কোনও বেআইনি কার্যকলাপে বিদেশী অর্থ ব্যবহার করা হয়েছে কী না তাও তদন্ত করবে ‘এসআইটি’।   #
পার্সটুডে/এমএএইচ/২৪

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ