অসমে ১২৮১টি মাদ্রাসাকে সাধারণ বিদ্যালয়ে পরিবর্তন, পাল্টে গেল নামও!
বিজেপিশাসিত অসমে ১২৮১টি মাদ্রাসাকে সাধারণ বিদ্যালয়ে পরিবর্তনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। পাল্টে দেওয়া হয়েছে তাদের পুরোনো নামও।
জানা গেছে, ধুবড়ি জেলায় সবচেয়ে বেশি মাদ্রাসার নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। সেখানে ২৬৫টি মাদ্রাসা সাধারণ বিদ্যালয়ে পরিবর্তিত হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বরপেটা এবং তৃতীয় স্থানে রয়েছে নগাঁও। জোরহাট এবং বিশ্বনাথ জেলায় একটি করে এবং গোলাঘাটে দুটি মাদ্রাসার নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।
গত বুধবার বিকেলে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী রণোজ পেগু এক নির্দেশ জারি করে বলেন, এবার থেকে এই ১২৮১টি মাদ্রাসা সেবা বোর্ডের অধীনে সাধারণ বিদ্যালয় হিসেবে চলবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া বার্তায় তিনি বলেন, ‘রাজ্যের আপার প্রাইমারি স্তরের ১২৮১টি মাদ্রাসার নাম পাল্টে দেওয়া হয়েছে। এবার থেকে এই বিদ্যালয়গুলো সাধারণ এমই স্কুলের মতো সেবা বোর্ডের অধীনে শিক্ষা দান করবে এবং শিক্ষার্থীরা অসম সরকারের নির্ধারিত কোর্সের অধীনে শিক্ষা গ্রহণ করবে।’ এ ব্যাপারে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে এবং আজ থেকেই সবক’টি বিদ্যালয়ের নাম পাল্টে দেওয়া হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন শিক্ষামন্ত্রী রণোজ পেগু।
এ প্রসঙ্গে আজ (শুক্রবার) অসমের হাইলাকান্দি জেলার বিশিষ্ট সমাজকর্মী আব্দুল মান্নান লস্কর রেডিও তেহরানকে বলেন, ‘এখানে দু’টি বিষয় আছে। একটা হল সরকারি মাদ্রাসা এবং আরকেটা হল মাদ্রাসার জমি। সরকারি মাদ্রাসাগুলো প্রাদেশিকীকরণ হয়েছিল নির্দিষ্ট আইনের মাধ্যমে। সরকার সাংবিধানিক অধিকারের উপর ভিত্তি করে এটা করেছিল। কিন্তু বর্তমান যে সরকার তারা সাম্প্রদায়িকতাকে উন্নীত করছে এবং তারা মানুষের মধ্যে ধর্মের ভিত্তিতে বিভেদ এবং বিভেদের প্রাচীর তৈরি করতে চাচ্ছে। দ্বিতীয়ত, মাদ্রাসার জমিগুলো হল ওয়াকফ সম্পত্তি। এই মাদ্রাসাগুলো কিন্তু দান করা জমির উপর তৈরি হয়েছিল। সরকারের জমি নিয়ে মাদ্রাসা তৈরি হয়নি। ওয়াকফ করা জমিতে মাদ্রাসা তৈরি হয়েছিল। সরকার সেগুলো অধিগ্রহণ করেছিল। সরকার সেই মাদ্রাসার কর্মীদের বেতন দিচ্ছিল, শিক্ষকদের বেতন দিচ্ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘ যদি মাদ্রাসা শিক্ষার প্রতি সরকারের এতই ঘৃণা থাকে তাহলে আমরা বলতে চাই আমাদের জায়গাকে কেন নিচ্ছে? আমরা যে জায়গাগুলো আল্লহার নামে দান করেছি, সেগুলোর প্রতি তাদের এত লোভ কেন? মাদ্রাসা বাঁচানোর জন্য আমরা শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত আন্দোলন করে যাব। জমিগুলো আমাদের ফিরিয়ে দেওয়া হোক। আমরা নিজেদের পকেটের টাকা দিয়ে সেগুলো পরিচালনা করব’ বলেও মন্তব্য করেন অসমের হাইলাকান্দি জেলার বিশিষ্ট সমাজকর্মী আব্দুল মান্নান লস্কর। #
পার্সটুডে/এমএএইচ/এমবিএ১৫
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন