বিজেপি-আরএসএস দেশে ঘৃণা ও সহিংসতা ছড়াচ্ছে: রাহুল গান্ধী
বিজেপি-আরএসএস ঘৃণা, হিংসা ও অন্যায় ছড়াচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের প্রধান বিরোধীদল কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধী এমপি। ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাহুল গান্ধী আজ (বৃহস্পতিবার) অসম থেকে পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহারে প্রবেশ করে ওই মন্তব্য করেন।
বাংলায় 'ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা' নিয়ে আসার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বিজেপি-বিরোধী জোটের পক্ষে সাফাই দেন রাহুল গান্ধী। তিনি বলেন, ‘ভারত জোড়োর’ সঙ্গে ‘ন্যায়’ শব্দটি যুক্ত করেছি আমরা। কারণ, বিজেপি এবং আরএসএস দেশে ঘৃণা ছড়াচ্ছে, সহিংসতা ছড়াচ্ছে, দেশবাসীর সঙ্গে অন্যায় করছে। এই ঘৃণা, সহিংসতা এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে লড়াই করতে চলেছে ‘ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টাল ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স’ (I.N.D.I.A)।’
প্রসঙ্গত, বিজেপি-বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ জোটের অন্যতম শরীক তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু গতকালই (বুধবার) বাংলায় আসন সমঝোতার ব্যাপারে কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের কথা জানিয়েছেন তৃণমূল সভানেত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলায় 'ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা' কর্মসূচি সম্পর্কে তাদের কিছু জানানো হয়নি বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন মমতা।
ওই ইস্যুতে এই মুহূর্তে কার্যত জাতীয় রাজনীতিতে তোলপাড় চলছে। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে অবশ্য তড়িঘড়ি বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, মমতাকে ছাড়া I.N.D.I.A জোটের কথা কল্পনাই করা যায় না। মমতা এবং তৃণমূল, জোটের অন্যতম শক্তিশালী স্তম্ভ। আসন নিয়ে এমন মতভেদ চলতেই থাকে। তাই বলে জোটে ভাঙন ধরার সম্ভাবনা নেই। আলোচনার মাধ্যমেই বিষয়টি মিটিয়ে ফেলা সম্ভব। মমতা তাদের কাছে অনুপ্রেরণা বলেও মন্তব্য করেন কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা ও সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়রাম রমেশ।
এদিকে, আজ প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী এমপি রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ করে বলেন, আমরা এখানকার পুলিশের সহযোগিতা পাইনি। মঞ্চ ওপারে করার কথা ছিল, এপারে নিয়ে এলো জোর করে। মানুষের ঢল নেমেছে। কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহের সৃষ্টি হয়েছে। রাহুলজী যত যাবেন, তত মানুষের ঢল বাড়বে। রাহুলজী যেখানে যাবেন সেখানে মানুষের ভিড় বাড়বে, সেখানে জনস্রোত হবে, কেউ আটকাতে পারবে না। কেউ মনে করলেও আটকাতে পারবে না, কারও ইচ্ছা থাকলেও আটকাতে পারবে না। কারও অভিলাষ থাকলেও আটকাতে পারবে না’ বলেও মন্তব্য করেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী এমপি।
এদিকে, 'ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা' সম্পর্কে তাদের কিছু জানানো হয়নি বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা যে মন্তব্য করেছেন, আজ তার পাল্টা জবাবে বিজেপির সিনিয়র নেতা দিলীপ ঘোষ এমপি বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী বলছেন আমাদের অনুমতি নেওয়া হয়নি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে জোটের শরীক তার রাজ্যে ঢুকতে পারছে না! তাহলে কেমন গণতন্ত্র আছে? অনুমতি নিতে হবে কেন? কেউ যদি যাত্রা করে, করতেই পারে। সারা দেশজুড়ে তুলকালাম হচ্ছে ওনাকে নিয়ে। এত খবর হয়েছে, আপনারা জানেন আসবে। কিন্তু কাউকে যাত্রা করতে দেবেন না, সভা করতে দেবেন না, তাহলে কংগ্রেসও দেখে নিক কী গণতন্ত্র এখানে আছে, কার সঙ্গে ওরা সমঝোতা করতে যাচ্ছে’ বলেও মন্তব্য করেন বিজেপির সিনিয়র নেতা দিলীপ ঘোষ এমপি।#
পার্সটুডে/এমএএইচ/এমএআর/২৫