আস্থা ভোটের দাবিতে তোলপাড়, হিমাচল প্রদেশ বিধানসভা থেকে বহিষ্কৃত ১৫ বিজেপি বিধায়ক
(last modified Wed, 28 Feb 2024 10:42:19 GMT )
ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৪ ১৬:৪২ Asia/Dhaka
  • আস্থা ভোটের দাবিতে তোলপাড়, হিমাচল প্রদেশ বিধানসভা থেকে বহিষ্কৃত ১৫ বিজেপি বিধায়ক

ভারতের হিমাচল প্রদেশে আস্থা ভোটের দাবিতে বিধানসভার স্পিকারের ঘরে শ্লোগান দেওয়া এবং দুর্ব্যবহারের অভিযোগে ১৫ জন বিজেপি বিধায়ককে বহিষ্কার করা হয়েছে।

আজ (বুধবার) সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও বিরোধী দলনেতা জয়রাম ঠাকুরসহ ১৫ জন বিজেপি বিধায়ককে বহিষ্কারের নির্দেশ দেন স্পিকার কুলদীপ সিংহ পাঠানিয়া। রাজ্যসভার সদস্য  নির্বাচনে ক্রস ভোটিংয়ের ফলে  বিজেপি প্রার্থীর জয়ের পরদিনই রাজ্যে কংগ্রেস সরকার  ফেলার তোড়জোড় শুরু করেছে গেরুয়া শিবির।  আজ সকালে হিমাচল প্রদেশের রাজ্যপাল শিবপ্রতাপ শুক্লার সঙ্গে দেখা করেন বিরোধী দলনেতা জয়রাম ঠাকুরসহ বিজেপি বিধায়করা। রাজ্যপালের কাছে বাজেট পাশের সময় ধ্বনিভোটের বদলে ডিভিশন ভোটের দাবি জানায় বিজেপি। সেক্ষেত্রে সুখবিন্দর সিং সুখু সরকার বাজেট পাশে ব্যর্থ হলে স্বভাবতই সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণেও অসমর্থ হবে বলে মনে করছিলেন বিশ্লেষকরা। কিন্তু বিরোধীদের অনুপস্থিতিতে আজ বিধানসভায় ধ্বনি ভোটে বাজেট পাশ হয়েছে। 

গতকাল রাজ্যসভার সদস্য নির্বাচনে ৪০ বিধায়কের সমর্থনে কংগ্রেস প্রার্থী অভিষেক মনু সিংভির জেতা প্রায় নিশ্চিত হলেও শেষ মুহূর্তে ৬ কংগ্রেস ও ৩ সরকার পক্ষের নির্দলীয়  বিধায়ক বিজেপিকে ভোট দেওয়ায় জিতে যান বিজেপি প্রার্থী হর্ষ মহাজন। এই আবহে হিমাচল প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও বর্তমান বিরোধী দলনেতা জয়রাম ঠাকুর বলেন, ‘এরপর কংগ্রেসের সরকারে থাকার কোনও নৈতিক অধিকার নেই। সুযোগ কম থাকার পরও আমরা জয় ছিনিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি।’

এদিকে, আজ সকালে মন্ত্রিত্ব ছেড়েছেন কংগ্রেস নেতা বিক্রমাদিত্য সিংহ। মন্ত্রিত্ব ছাড়ার আগে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখুর বিরুদ্ধে বিক্রমাদিত্যের অভিযোগ, সুখবিন্দর নাকি বিধায়কদের উপেক্ষা করেন। এর পাশাপাশি তার বাবা ও হিমাচল প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াত বীরভদ্র সিংকেও সুখবিন্দর অসম্মান করেছেন বলে অভিযোগ করেন বিক্রমাদিত্য সিংহ। সব মিলিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখুর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকার রাজনৈতিক সংকটের মুখে পড়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

হিমাচলের রাজনৈতিক সংকট নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক  প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। তিনি বলেছেন, গণতন্ত্রে সাধারণ মানুষের অধিকার আছে তাদের পছন্দের সরকার বেছে নেওয়ার। হিমাচলের মানুষ এই অধিকার ব্যবহার করে স্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে কংগ্রেস সরকার গঠন করেছে। কিন্তু বিজেপি অর্থশক্তির জোরে, এজেন্সিগুলোর ক্ষমতা এবং কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা  অপব্যবহার করে হিমাচলের মানুষদের এই অধিকারকে চূর্ণ করতে চায়। এই উদ্দেশ্যে বিজেপি যেভাবে সরকারি নিরাপত্তা ও মেশিনারি ব্যবহার করছে তা দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন। 

তিনি আরও বলেন, ২৫ জন বিধায়ক নিয়ে একটি দল যদি ৪৩  জন বিধায়কের সংখ্যাগরিষ্ঠতাকে চ্যালেঞ্জ করে, তবে এর স্পষ্ট অর্থ হল এটি জনপ্রতিনিধিদের ঘোড়া-বাণিজ্যের উপর নির্ভরশীল। তাদের মনোভাব অনৈতিক ও অসাংবিধানিক। হিমাচল ও দেশের মানুষ সব দেখছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে রাজ্যের মানুষের পাশে না দাঁড়ানো বিজেপি এখন রাজ্যকে রাজনৈতিক বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিতে চায় বলেও মন্তব্য করেছেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী।    

পার্সটুডে/এমএএইচ/২৮

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন