অসমে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় চলা মাদ্রাসাশিক্ষা বন্ধের ঘোষণা, পাল্টা চ্যালেঞ্জ
https://parstoday.ir/bn/news/india-i77435-অসমে_সরকারি_পৃষ্ঠপোষকতায়_চলা_মাদ্রাসাশিক্ষা_বন্ধের_ঘোষণা_পাল্টা_চ্যালেঞ্জ
ভারতের বিজেপিশাসিত অসমে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় চলা মাদ্রাসা শিক্ষা বন্ধের ঘোষণা দিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। গতকাল (বুধবার) একইসঙ্গে তিনি সংস্কৃত টোল বন্ধের কথাও বলেছেন। আগামী ৩/৪ মাসের মধ্যে সরকার ওই সিদ্ধান্ত কার্যকর করবে।
(last modified 2025-09-11T14:06:22+00:00 )
ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২০ ১৬:৩৪ Asia/Dhaka
  • ভারতের একটি মাদ্রাসা
    ভারতের একটি মাদ্রাসা

ভারতের বিজেপিশাসিত অসমে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় চলা মাদ্রাসা শিক্ষা বন্ধের ঘোষণা দিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। গতকাল (বুধবার) একইসঙ্গে তিনি সংস্কৃত টোল বন্ধের কথাও বলেছেন। আগামী ৩/৪ মাসের মধ্যে সরকার ওই সিদ্ধান্ত কার্যকর করবে।

অসমের শিক্ষামন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা আগেই মাদ্রাসায় দীর্ঘকাল ধরে চলে আসা শুক্রবারের সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করেছেন। এবার মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাই বন্ধ করতে চান তিনি। তাঁর মতে, রাষ্ট্রের টাকায় আরবি ভাষা শেখানো, ধর্মগ্রন্থ শেখানো সরকারের কাজ নয়। সেজন্য খুব শিগগিরি মাদ্রাসা, সংস্কৃত টোল হাইস্কুলে রূপান্তর করা হবে। শুধু কুরআন কেন, স্কুলে তাহলে বাইবেল, গীতাও শেখাতে হবে বলে তিনি মনে করেন।    

মাওলানা আবদুল কাদির কাশেমি

এ প্রসঙ্গে আজ (বৃহস্পতিবার) রেডিও তেহরানকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় অসম রাজ্য জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক ও বেসরকারি মাদ্রাসা সংস্থা ‘সারা অসম তানজিম-এ-মাদারিসে কওমিয়া’র সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবদুল কাদির কাশেমি বিজেপিকে টার্গেট করে বলেন, ‘মসজিদ-মন্দির-পাকিস্তান-শাহীনবাগ ইস্যু বিফল হয়ে যাওয়ায় নতুন ইস্যু সৃষ্টির লক্ষ্যে এসব করা হচ্ছে। আর অসমে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ/ক্যা) বিরোধী যে আন্দোলন চলছে সেদিক থেকে মানুষের নজর অন্যদিকে ঘোরাতে এসব কথা বলা হচ্ছে।’

মাওলানা আবদুল কাদির কাশেমি আরও বলেন, ‘আরবি একটা আন্তর্জাতিক  ভাষা। ভারতের অনেক হিন্দু-মুসলিম আরবি ভাষা শিখে আরব দেশগুলোতে গিয়ে চাকরি করে অর্থ উপার্জন করে দেশে আনছে, একথা ওনার মাথায় নেই। হিমন্তবিশ্ব শর্মা এবং বিজেপি’র হিন্দুত্ববাদের সমস্ত এজেন্ডাকে ভারতবাসী ধীরে ধীরে অগ্রাহ্য করতে শুরু করেছে, সেজন্য হতাশা ও নিরাশায় ভুগে এসব অবান্তর কথা উনি বলছেন।’      

হিমন্তবিশ্ব শর্মা

এদিকে, মন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মাকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ জানিয়ে অসমের বিশিষ্ট আইনজ্ঞ হাফিজ রশিদ আহমেদ চৌধুরী বলেছেন, ‘কেবলমাত্র ভোটের সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের জন্যই হিমন্ত এটা বলেছেন। আমি চ্যালেঞ্জ করছি, মাদ্রাসা বন্ধ করে দেখান তিনি। প্রয়োজনে আদালতের আশ্রয় নেওয়া হবে।’

হাফিজ রশিদ আহমেদ চৌধুরী আরও বলেন, ‘সাংবিধানিক স্বীকৃত মৌলিক অধিকার রয়েছে নিজেদের ভাষা, ধর্ম পালনের। সেখানে সরকারে কোনও ধরণের বৈষম্য করতে পারে না। তাই মাদ্রাসা শিক্ষা বন্ধ করা যাবে না। টাকা বরাদ্দ করাও বন্ধ করা যাবে না। এরআগে সংবিধান সংশোধন করতে হবে।’     

এদিকে, মাদ্রাসা ও সংস্কৃত টোল বন্ধের সিদ্ধান্তে মূলত ক্ষতিগ্রস্ত হবেন মুসলিমরা। কারণ সংস্কৃত টোলগুলো শিক্ষার্থীর অভাবে ধুঁকছে। অন্যদিকে, মাদ্রাসায় প্রচুরসংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। রাজ্যে প্রাদেশিকৃত মাদ্রাসা রয়েছে ৪২৩ টি। অন্যদিকে, সংস্কৃত টোলের সংখ্যা মাত্র ৯৭।  

অসম মাদ্রাসা-শিক্ষক কর্মচারী সংস্থার পক্ষে ফকরুদ্দিন ইসলাম সরকারি ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নামার কথা জানিয়েছেন। এরফলে হাজার হাজার মাদ্রাসা শিক্ষিত শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়বে বলে তিনি মনে করছেন।#  

পার্সটুডে/এমএএইচ/এআর/১৩

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।