বিহারে শপথ অনুষ্ঠানে ‘হিন্দুস্তান’ শব্দে আপত্তি, ‘মিম’ বিধায়ককে পাকিস্তানে চলে যাওয়ার পরামর্শ
ভারতের বিহার রাজ্যের বিধানসভা অধিবেশনের প্রথমদিনেই, ‘হিন্দুস্তান’ শব্দ ব্যবহার প্রসঙ্গে বিতর্কে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলেমিন (মিম) বিধায়ক আক্তারুল ইমান শপথ গ্রহণের সময়ে ‘হিন্দুস্তান’-এর পরিবর্তে ‘ভারত’ শব্দ ব্যবহার করতে চাওয়ায় কিছুক্ষণের জন্য বিধানসভায় কার্যত অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
গতকাল (সোমবার) ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিজেপি বিধায়ক নীরজ কুমার বাবলু বলেন, ‘হিন্দুস্তান’ বলতে যাদের সমস্যা হয় তাদের পাকিস্তানে চলে যাওয়া উচিত। এ জাতীয় লোকেদের ভারতে থাকার কোনও অধিকার নেই। ওঁদের বাড়ি ছেড়ে পাকিস্তানে চলে যাওয়া উচিত। এ ধরণের মানুষজন দেশ ভাঙতে চলেছে।
এদিন বিধানসভায় শপথগ্রহণের জন্য ‘মিম’ বিধায়ক আক্তারুল ইমানের নাম ডাকার সাথে সাথে তিনি উঠে দাঁড়িয়ে ‘হিন্দুস্তান’ শব্দে আপত্তি জানান। আক্তারুল ইমানের উর্দু ভাষায় শপথ নেওয়ার কথা ছিল। উর্দুতে ‘ভারত’ শব্দের পরিবর্তে ‘হিন্দুস্তান’ শব্দ ব্যবহৃত হয়। কিন্তু বিধায়ক আক্তারুল ইমান প্রোটেম স্পিকারের উদ্দেশ্যে ‘হিন্দুস্তান’ শব্দের পরিবর্তে ‘ভারত’ শব্দ ব্যবহার করার আবেদন জানান। ‘মিম’ বিধায়ক বলেন, হিন্দি ভাষায় ভারতের সংবিধানের শপথ নেওয়া হয়। মৈথিলী ভাষায়ও হিন্দুস্তানের পরিবর্তে ‘ভারত’ শব্দ ব্যবহার করা হয়। বিধায়ক আক্তারুল ইমানের এ ধরণের সাফাইতে শপথ প্রদানকারী প্রোটেম স্পিকার জিতন রাম মাঝিও বেশ অবাক হয়ে যান! পরে অবশ্য মিমের ওই বিধায়ক বলেন, তিনি আপত্তি জানাননি, পরামর্শ দিয়েছেন।
‘জেডিউ’ নেতা মদন সাহনী বলেছেন, ওই বিধায়ককে ‘হিন্দুস্তান’ বলা উচিত ছিল। হিন্দুস্তান বলায় কোনও ক্ষতি নেই। সাম্প্রতিক বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যটিতে জেডিইউ-বিজেপি সমন্বিত জোট ‘এনডিএ’ পুনরায় ক্ষমতায় এসেছে।
আসলে, মিমের ওই বিধায়কের উর্দুতে শপথ নেওয়ার কথা থাকায় তাঁকে যে কাগজ সরবরাহ করা হয় তাতে ভারতের পরিবর্তে ‘হিন্দুস্তান’ শব্দ ব্যবহৃত হয়েছিল। বিধায়ক আক্তারুল ইমান ‘হিন্দুস্তান’ শব্দের পরিবর্তে ‘ভারত’ শব্দ ব্যবহার করতে অনড় থাকায় কিছুক্ষণের জন্য কার্যত অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। শেষমেশ ওই বিধায়ক উর্দুতে শপথ নিলেও তিনি ‘হিন্দুস্তান’-শব্দের পরিবর্তে ‘ভারত’ শব্দই ব্যবহার করেন।
আক্তারুল ইমান পরে বিজেপি বিধায়কের মন্তব্য প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ওদের বিদ্বেষ ছড়ানো ছাড়া কোনও কাজ নেই। আমরা ভালোবাসা ছড়িয়ে দিতে চাই। আমরা বিদ্বেষের পরিবর্তে ভালোবাসার বার্তা দিতে চাই। এ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হলে তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে আমার প্রেম, হিন্দুস্তানের সঙ্গে ভালোবাসা এবং ইন্ডিয়ার সঙ্গে ‘লাভ’ রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তিনি এ ধরণের মন্তব্য করে ওই বিতর্কের অবসান চেয়েছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।#
পার্সটুডে/এমএএইচ/বাবুল আখতার/২৪
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।