অসমে বদরউদ্দিন আজমলের এআইইউডিএফের পক্ষ থেকে কঠিন চ্যালেঞ্জের আশঙ্কা বিজেপির
ভারতের অসমে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের মুখে বিজেপি বলেছে যে রাজ্যের কংগ্রেস নয়, বরং অন্য কোনও দলের থেকে বেশি হুমকি রয়েছে। বিজেপির মতে, রাজ্যে মাওলানা বদরউদ্দিন আজমলের ‘অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট’ (এআইইউডিএফ)--এর পক্ষ থেকে তারা কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারে। বিজেপি নেতা ও রাজ্যের প্রভাবশালী মন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা সম্প্রতি বলেছেন, অন্যান্য আঞ্চলিক দলের চেয়ে আজমল সবসময়ই ফ্যাক্টর হয়েছে।
গতকাল (সোমবার) অসমের গুয়াহাটিতে এক নির্বাচনী সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপির সিনিয়র নেতা অমিত শাহ এআইইউডিএফ প্রধান মাওলানা বদরউদ্দিন আজমলকে ‘কালাপাহাড়’-এর সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি বলেন, অসমের ইতিহাসের পাতা ওল্টালে জানা যায় সুদূর অতীতের কালাপাহাড়ের কথা। ভোটে জিতে ক্ষমতা দখল করার তাগিদে আজমলকে কোলে তুলে নিয়েছে কংগ্রেস। তাদের কোলেই দেখা যাচ্ছে আজকের কালাপাহাড়কে।
অমিত শাহ বলেন, ‘আমিও ইতিহাস পড়েছি। কালাপাহাড়কে জানি। কংগ্রেসের কোলেই আপনারা কালাপাহাড়কে দেখবেন। জেনে রাখুন এই কংগ্রেস-আজমল মিত্রতা কখনও শঙ্করদেব, মাধব দেব, ভূপেন হাজারিকার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে না। বরং তারা ক্ষমতায় এলে ফের অনুপ্রবেশ সমস্যায় জর্জরিত হবে এই রাজ্য।’
অন্যদিকে, রাজ্যের মন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা সম্প্রতি বলেন, নির্বাচনে বিজেপি এবং কংগ্রেস-এআইইউডিএফের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। আঞ্চলিক দলগুলো জনগণের কাছে যেমনভাবে পৌঁছনো উচিত তেমন সক্ষম নয়। কিন্তু আজমল সবসময়েই অসমের একটি অঞ্চলের ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটা সংস্কৃতি ও সভ্যতার জন্য হুমকিস্বরূপ!
এদিকে, বিজেপির জাতীয় সহ-সভাপতি এবং অসমের দলীয় ইনচার্জ বৈজয়ন্ত জয় পান্ডা বলেছেন, এখন কংগ্রেস এআইইউডিএফের সাথে জোট বেঁধেছে এবং তারা পরিচিতির রাজনীতির কথা বলেছে। আমি মনে করি কংগ্রেস নিজেদের অস্তিত্ব নিয়ে কথা বলছে। আমার মনে হয় ওদের ‘অসম বাঁচাও’ নয়, কংগ্রেসকে বাঁচাতে মনোনিবেশ করা উচিত। বিজেপি ভারতীয়তার পক্ষে দাঁড়িয়েছে এবং আমরা ডানদিকে আছি।
অসমে ১২৬ সদস্যের বিধানসভা আসনের জন্য ২৭ মার্চ, ১ এপ্রিল ও ৬ এপ্রিল তিন পর্যায়ে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের ফল ঘোষণা হবে ২৩ মে। রাজ্যে এবার, ক্ষমতাসীন বিজেপির সঙ্গে কংগ্রেস-এআইইউডিএফ সমন্বিত মহাজোটের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। অসমে ৩৩ হাজার পোলিং স্টেশন থাকবে। বিগত নির্বাচনের তুলনায় রাজ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ ভোটকেন্দ্র বাড়ানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, অসমের ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি মোট ১২৬ আসনের মধ্যে ৮৯ টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ৬০ টি আসনে জয়লাভ করেছিল। কংগ্রেস ১২২ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ২৬টি আসন জিতেছিল। এজিপি ৩০ টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ১৪ টিতে জয়লাভ করে। অন্যদিকে, মাওলানা বদরউদ্দিন আজমলের এআইইউডিএফ ৭৪ টি আসনে প্রার্থী দিয়ে ১৩ টি আসনে বিজয়ী হয়। সিপিআই ১৫ টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও দলটি খাতা খুলতে পারেনি।
অসমে ক্ষমতাসীন বিজেপিকে পরাজিত করার লক্ষ্যে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ৬ দলীয় ‘মহাজোট’ মাঠে নেমেছে। কংগ্রেসের পাশাপাশি ওই জোটে এআইইউডিএফ, সিপিএম, সিপিআই, সিপিআই(এমএল) এবং আঞ্চলিক গণমোর্চা রয়েছে।#
পার্সটুডে/এমএএইচ/এমবিএ/১৬
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।