বাংলা বললেই বিদেশি!
হিমন্তের মন্তব্যে ফুঁসছে তৃণমূল, ‘বাংলাবিরোধী’ বিজেপিকে তোপ কুণালের
ভারতের অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেছেন, 'বাংলা যাদের মাতৃভাষা, তারা নিজেদের বিদেশি হিসাবেই পরিচয় দিচ্ছেন।’ অসমের মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যের শাসকদলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন 'বিজেপি সর্বত্র বাঙালিদের ঘৃণা করে।'
বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর নতুন করে ভাষা বিবাদ মাথাচাড়া দিয়েছে অসমে। সম্প্রতি অসমের এক সংখ্যালঘু নেতা সে রাজ্যের সংখ্যালঘু মুসলিমদের উদ্দেশে আহ্বান জানিয়েছেন, আসন্ন জাতিগত জনগণনায় তারা যেন নিজেদের মাতৃভাষা হিসাবে ‘অসমীয়া’র পরিবর্তে বাংলাকে বেছে নেয়। এরফলে অসমীয়ারাই সেখানে সংখ্যালঘু হয়ে যাবেন।
ওই সংখ্যালঘু নেতার মন্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে আরও বিতর্কিত মন্তব্য করেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত। তিনি বলেন, 'অসমে অসমীয়াই স্থায়ী। এটাই সরকারি ভাষা, এটাই রাজ্য ভাষা। কিন্তু কেউ যদি বাংলাকে নিজেদের মাতৃভাষা হিসাবে দেখায়, তাহলে শুধু এটাই বোঝা যাবে যে রাজ্যে কতজন বিদেশি রয়েছে।' স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি বাংলাভাষী মানেই তাদের বিদেশি হিসাবে দেগে দিতে চাইছেন হিমন্ত?
হিমন্তর ওই মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। দলের সোশাল মিডিয়া হ্যান্ডেল থেকে পোস্টে লেখা হয়েছে, 'প্রথমে অসম সরকার একজন বৈধ নাগরিককে এনআরসি নোটিশ পাঠায়, যিনি ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কোচবিহারে বসবাস করছেন। সেই ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হলে এখন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলছেন, আদমশুমারি পত্রে মাতৃভাষা হিসেবে বাংলা লেখা দেখলেই অসমে বিদেশিদের সংখ্যা বোঝা যাবে। এই বিদ্বেষের উৎস কোথায়? কেন এত ঘৃণা বাঙালি ও বাংলা ভাষার প্রতি? শুধুমাত্র এই কারণে কি, যে বাংলার মানুষ বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করে অপমানিত করেছে? শাসকদলের হুঁশিয়ারি, “ঘৃণা, ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা এবং বহিরাগত বিদ্বেষ ছড়িয়ে যদি বাংলাকে দখল করতে চাও, তবে আমাদের করুণা রইল তোমাদের জন্য। বাংলার মানুষ এবার আরও বেশি জনসমর্থন নিয়ে বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করবে।'
তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষও সোশাল মিডিয়া পোস্টে প্রশ্ন লিখেছেন, 'এসব কী চলছে? একটা বাঙালীবিরোধী, বাংলাবিরোধী দল বিজেপি। বাংলা আমাদের মাতৃভাষা নয়? পশ্চিমবঙ্গবাসী, ভারতবাসী নই? কুণালের প্রশ্ন, আর যদি ওরা বাংলাদেশের কথা বলে, তাহলে অমিত শাহর বিএসএফ থাকতে বেআইনি অনুপ্রবেশ হয় কী করে? কার দায়? সেসব এড়িয়ে বাংলা বললেই বিদেশি তকমা লাগিয়ে দেওয়া হবে?'#
পার্সটুডে/জিএআর/১২