উত্তর প্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনের আগে মুসলিমদের জন্য একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি কংগ্রেসের
https://parstoday.ir/bn/news/india-i97032-উত্তর_প্রদেশে_বিধানসভা_নির্বাচনের_আগে_মুসলিমদের_জন্য_একগুচ্ছ_প্রতিশ্রুতি_কংগ্রেসের
ভারতের উত্তর প্রদেশে আগামী বছরের শুরুতে বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতিতে বিরোধীদল কংগ্রেস মুসলিমদের জন্য ১৬ টি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। গতকাল (সোমবার) লক্ষনৌতে রাজ্য কংগ্রেস সদর দফতরে কংগ্রেসের সংখ্যালঘু বিভাগ আয়োজিত পরিবর্তন সংকল্প সম্মেলনে ওই প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।      
(last modified 2025-10-12T12:48:31+00:00 )
সেপ্টেম্বর ০৭, ২০২১ ১১:৪৭ Asia/Dhaka
  • উত্তর প্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনের আগে মুসলিমদের জন্য একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি কংগ্রেসের

ভারতের উত্তর প্রদেশে আগামী বছরের শুরুতে বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতিতে বিরোধীদল কংগ্রেস মুসলিমদের জন্য ১৬ টি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। গতকাল (সোমবার) লক্ষনৌতে রাজ্য কংগ্রেস সদর দফতরে কংগ্রেসের সংখ্যালঘু বিভাগ আয়োজিত পরিবর্তন সংকল্প সম্মেলনে ওই প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।      

 কংগ্রেস ঘোষণা করেছে উত্তর প্রদেশে তাদের সরকার গঠিত হলে, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) বিরোধী আন্দোলনের সময়ে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করা হবে এবং ক্ষতিপূরণও দেওয়া হবে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রত্যেকটি জেলায় ছাত্রাবাস খোলা হবে এবং প্রতিটি বিভাগে একটি ইউনানি মেডিকেল কলেজও খোলা হবে, সংখ্যালঘু ছাত্রদের বৃত্তি দেওয়া হবে। আম্বেদকর ছাত্রাবাসের আদলে প্রত্যেক জেলায় সংখ্যালঘু ছাত্রদের জন্য মাওলানা আজাদ ছাত্রাবাস খোলা হবে।  

এ ছাড়া, রাজ্যে সাবেক ক্ষমতাসীন সমাজবাদী পার্টিকে টার্গেট করার সময়, কংগ্রেস ঘোষণা করেছে, অখিলেশ যাদব সরকারের আমেলে (সমাজবাদী পার্টি) ঘটে যাওয়া ছোটো-বড় সব দাঙ্গার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করার পরে দোষীদের শাস্তি দেওয়া হবে। কংগ্রেস মব লিঞ্চিং বা গণপিটুনির বিরুদ্ধে আইন প্রণয়নেরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এ ব্যাপারে বিধানসভা থেকে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রস্তাব পাঠানো হবে।         

এ সম্পর্কে আজ (মঙ্গলবার) ‘সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মাদ কামরুজ্জামান রেডিও তেহরানকে বলেন,  ‘উত্তরপ্রদেশে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কংগ্রেস সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের উন্নয়নের বিষয়ে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সেটা বিবেচ্য বিষয় নয়। আজকে উত্তর প্রদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের সবথেকে প্রধান এবং জরুরী বিষয় তাদের 'ইনসাফ' দেওয়া এবং সেখানে ধর্মনিরপেক্ষতার  পরিবেশ বজায় রাখা, হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে সৌভ্রাতৃত্ব বজায় রাখা। এবং   হিন্দি বলয় বা গো-বলয় হিসেবে সেখানে যোগি আদিত্যনাথ (মুখ্যমন্ত্রী)  যে ঘৃণার পরিবেশ তৈরি করেছে তা দূর করা। আমি কংগ্রেসের এই প্রতিশ্রুতিকে অভিনন্দন এবং ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এর পাশাপাশি তাদেরকে অনুরোধ করছি ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করে একের বিরুদ্ধে একজন প্রার্থী দিয়ে বিজেপিকে পরাজিত এবং প্রতিহত করাই তাদের প্রধান এবং একমাত্র লক্ষ্য হোক।’  

মুহাম্মাদ কামরুজ্জামান

মুহাম্মাদ কামরুজ্জামান আরও বলেন, ‘  আমার আত্মবিশ্বাস আছে যে,   উত্তর প্রদেশের আপামর মুসলিম এবং ধর্মনিরপেক্ষ মানুষ তারা অবশ্যই কংগ্রেস এবং ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির সঙ্গেই থাকবে। পশ্চিমবাংলার মানুষ যেভাবে বিজেপিকে ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনাময় পরিস্থিতি মোকাবেলা করে বিজেপিতে পরাজিত করেছে, আমি আশা করব উত্তর প্রদেশের মানুষ সেই একই পথে তারা বিজেপির মোকাবেলা করার জন্য আগাম প্রস্তুতি নেবে।’  

কংগ্রেসের ঘোষণা, উত্তর প্রদেশে তাদের সরকার গঠিত হলে রাজ্য পুলিশ বাহিনীতে নিয়োগের জন্য সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় বিশেষ ক্যাম্প স্থাপন করা হবে। এছাড়া অনগ্রসর মুসলিমদের উন্নয়নে পাসমন্দা কমিশন গঠন করা হবে। মাদ্রাসার আধুনিকীকরণ এবং শিক্ষকদের বকেয়া বেতন প্রদানের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের ওপরে চাপ দেওয়া হবে। গত ৩০ বছরে ওয়াকফ সম্পত্তির কারচুপি তদন্ত করা হবে এবং দোষীদের শাস্তি দেওয়া হবে। কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সেলের ওই সম্মেলনে এভাবে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। 

সর্বভারতীয় কংগ্রেসের সম্পাদক ও উত্তর প্রদেশে কংগ্রেসের যুগ্ম দায়িত্বশীল   তৌকির আলম বলেন, ‘পরিবর্তন সংকল্প সম্মেলনে বিপুল সংখ্যক সাধারণ মানুষ বুঝিয়ে দিয়েছে যে রাজ্য ও দেশে কংগ্রেসই প্রকৃত কণ্ঠ এবং মজলুমদের ন্যায়বিচার প্রদানের কাজ কেবল কংগ্রেসই করবে।’  

লক্ষনৌতে ওই সম্মেলনে সর্বভারতীয় সংখ্যালঘু কংগ্রেসের জাতীয় সভাপতি ইমরান প্রতাপগড়ি, কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি অজয় কুমার লাল্লু, জাতীয় সম্পাদক ধীরজ গুর্জর, তৌকির আলম, সংখ্যালঘু সেলের রাজ্য চেয়ারম্যান শাহনওয়াজ আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।#

পার্সটুডে/এমএএইচ/এআর/৭

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।