বিহার ইস্যু
বিহারে অনুপ্রবেশ ইস্যুতে ক্ষমতাসীন বিজেপি ও জেডিইউয়ের মধ্যে মতবিরোধ
ভারতের বিহার রাজ্যে বেআইনিভাবে অনুপ্রবেশ ঘটছে বলে বিজেপি’র পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। অন্যদিকে, জেডিইউয়ের পক্ষ থেকে ওই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। আজ (বৃহস্পতিবার) গণমাধ্যমে ওই তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। বিহারে বিজেপি-জেডিইউ সমন্বিত ‘এনডিএ’ সরকার ক্ষমতায় রয়েছে।
গতকাল (বুধবার) রাজস্ব ও ভূমি সংস্কার মন্ত্রী এবং বিজেপি নেতা রামসুরত রাই বলেছেন, ‘সীমাঞ্চলে প্রচুর সংখ্যক অনুপ্রবেশ ঘটছে। অনুপ্রবেশকারীরা মন্দির, মঠ, ভূদানের জমি দখল করছে। বিদেশী অর্থায়নের মাধ্যমে তাদের সাহায্য করা হচ্ছে।’
অন্যদিকে, মন্ত্রীর ওই বিবৃতি প্রসঙ্গে জেডিইউ নেতা গোলাম রসুল বালিয়াভি বলেন, ‘এটি অপ্রয়োজনীয় মন্তব্য এবং মন্ত্রীকে এর প্রমাণ দিতে হবে। যদি মন্ত্রী এর প্রমাণ দেন, তাহলে ‘জেডিইউ’ অনুপ্রবেশকারীদের বের করে দেবে।’
মন্ত্রী রামসুরত রাই বলেন, ‘বিহার সরকার এবং বিজেপি উভয়ই বিহারে অনুপ্রবেশকারীদের ঠেকাতে কাজ করছে। ভূমি ও রাজস্ব বিভাগ দেশের জমি রক্ষায় কাজ করছে।’
এ প্রসঙ্গে জেডিইউ নেতা ও এমএলসি গোলাম রসুল বালিয়াভি বলেন, ‘এটি একটি অদ্ভুত ইস্যু! ভূমি মন্ত্রণালয় তার কাছেই আছে তাহলে এটাও জরিপ করা উচিত যে কতটা সরকারি জমি কোন সম্প্রদায়ের মানুষ বা কোন ধর্মের লোকজন ধর্মীয় স্থান তৈরি করে তা দখল করে রেখেছে। এই তালিকাটিও প্রকাশ করা উচিত। ভিত্তিহীন ও তথ্যহীন কথা বলে কোন লাভ নেই। কেন্দ্রে এবং রাজ্যে ‘এনডিএ’ সরকার ক্ষমতায় আছে এবং এ ধরণের কথা বলা অযৌক্তিক। সীমাঞ্চলে এ রকম কিছু নেই। কিন্তু যদি কারো ‘মনে কোনও ধরণের অনুপ্রবেশ’ হয়, তাহলে তার জন্য কোন ওষুধ নেই।’
সম্প্রতি, পাটনা হাইকোর্ট বিহারে অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করতে এবং ডিটেনশন সেন্টার তৈরির নির্দেশ দিয়েছে। আদালতের আদেশে বিহার সরকার রাজ্যে অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
মজলিশ-ই-ইত্তেহাদুল মুসলেমিন (মিম) প্রধান ব্যারিস্টার আসাদউদ্দিন ওয়াইসি এমপি বিহার সরকারের ওই পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে বিহার সরকার পিছনের দরজা দিয়ে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (সিএএ-এনআরসি) বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন।
মাস দু’য়েক আগে বিজেপি বিধায়ক বিদ্যাসাগর কেশরী বিহার বিধানসভায় বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। তিনি বলেন, সীমাঞ্চলের জেলায় বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা একটি বড় সমস্যা হয়ে উঠছে। তারা শহরের সব খাল ও রাস্তার পাশে ঘাঁটি গেড়েছে। একই সময়ে, বিজেপি বিধায়ক হরিভূষণ ঠাকুরও বিদ্যাসাগর কেশরির উত্থাপিত ইস্যুকে সমর্থন করে বলেন, সরকারের উচিত বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের আটকানো। এটি একটি বড় সমস্যা। এর পেছনে রয়েছে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই রয়েছে বলেও তিনি দাবি জানান।
কিন্তু সিপিআই-এমএল বিধায়ক মেহবুব আলম সে সময়ে বলেন, কোথাও বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী নেই। এ সব বিজেপি এবং আরএসএস দ্বারা তৈরি একটি সমস্যা। এই লোকেরা সীমাঞ্চলের মানুষদের বদনাম করতে চায় বলেও সিপিআই-এমএল বিধায়ক মেহবুব আলম মন্তব্য করেন।#
পার্সটুডে/এমএএইচ/এমবিএ/১৬
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।