অসমের ঘটনার প্রতিবাদে কোলকাতায় বিক্ষোভ, মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তের পদত্যাগ দাবি, পুড়ল কুশপুতল
(last modified Sat, 25 Sep 2021 13:08:09 GMT )
সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২১ ১৯:০৮ Asia/Dhaka
  • অসমের ঘটনার প্রতিবাদে কোলকাতায় বিক্ষোভ, মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তের পদত্যাগ দাবি, পুড়ল কুশপুতল

ভারতের বিজেপিশাসিত অসমে উচ্ছেদ অভিযানকে কেন্দ্র করে পুলিশের গুলিবর্ষণে ২ জন নিহত হওয়ায় পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কোলকাতায় বিভিন্ন গণসংগঠন বিক্ষোভ প্রদর্শনের মধ্যে দিয়ে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মার পদত্যাগ দাবি করেছে। আজ (শনিবার) অসম ভবনের সামনে কমপক্ষে ২০টি গণসংগঠনের নেতা-কর্মী ওই বিক্ষোভ প্রদর্শনে শামিল হয়।

গত (বৃহস্পতিবার) অসমের দরং জেলার সিপাঝাড়ের ধলপুরে উচ্ছেদ অভিযান চালানোর সময়ে স্থানীয় মানুষজন রুখে দাঁড়ালে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। এ সময়ে পুলিশের গুলিবর্ষণে সাদ্দাম হুসেন ও শেখ ফরিদ নামে দুজন নিহত হয়।

আজ অসম ভবনে বিক্ষোভ প্রদর্শন সম্পর্কে সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশন’-এর সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মাদ কামরুজ্জামান রেডিও তেহরানকে বলেন, ‘অসমে যেভাবে দরিদ্র মানুষদের উচ্ছেদ করা হয়েছে তাঁর প্রতিবাদে আজ কোলকাতার অসম ভবনের সামনে বিভিন্ন  গণসংগঠনের কর্মীরা জমায়েত হয়ে যৌথভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছে। কয়েক হাজার কর্মী এ সময়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন এজন্য যে, অসমের পুলিশ নিরীহ দরিদ্র মানুষদের উপরে গুলি চালিয়েছে এবং সরকারি কর্মী মৃতদেহের উপরে দাঁড়িয়ে নৃত্য করেছে! বাঙালিদের উপরে অসমে একেরপর এক যে  অত্যাচার, নির্যাতন নেমে আসছে সেটাকে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ কোনোভাবে মেনে নিচ্ছে না। কোভিড মহামারির মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ আছে যে কোনও মানুষকে উচ্ছেদ করা যাবে না। কিন্তু ঠিক সেই সময়ে অসমের বিজেপি সরকার পুলিশ দিয়ে আট শতাধিক দরিদ্র মানুষের ঘরবাড়ি  ভাঙচুর করল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মাদ্রাসা থেকে ইবাদতগাহ মসজিদ পর্যন্ত প্রশাসনের হাত থেকে রক্ষা পায়নি! অসম সরকারের এই অমানবিক নারকীয় কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। আজকে সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনসহ বিভিন্ন গণসংগঠনের নেতা-কর্মী কোলকাতায় অসম ভবনের সামনে জমায়েত হন। এবং এক প্রতিনিধিদল, অসম ভবনের ডাইরেক্টরের সঙ্গে দেখা করে তাঁর হাতে বিভিন্ন দাবিদাওয়া সম্বলিত স্মারকলিপি তুলে দেওয়া হয়।

মুহাম্মাদ কামরুজ্জামান

অসমের ওই ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণে সুপ্রিম কোর্টের কর্মরত বিচারপতির নেতৃত্বে বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে বলেও ‘সারা বাংলাসংখ্যালঘু যুব ফেডারেশন’-এর সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মাদ কামরুজ্জামান মন্তব্য করেন।

আজ এ প্রসঙ্গে ভাষা ও চেতনা সমিতির সম্পাদক ও কোলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজের সাবেক অধ্যাপক ড. ইমানুল হক রেডিও তেহরানকে বলেন, ‘আজ অসম ভবনের সামনে ২০টির বেশি ছাত্র-সাংস্কৃতিক- সামাজিক-রাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়েছে। সেখানে অসমের ঘটনার তীব্র নিন্দা করা হয়, বলা হয় অবিলম্বে উচ্ছেদ বন্ধ করতে হবে। এবং অসমের মুখ্যমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে। এছাড়া  অসমের দরং জেলার এসপি এবং যে পুলিশ বাহিনী ওই অভিযানে যুক্ত ছিল তাদের অপসারণ করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। পুলিশের গুলিতে নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এ সব দাবিতে অসম ভবনের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়। সেখানে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা এবং অসমের দরং জেলার পুলিশ সুপারের দুটি কুশপুতল পোড়ানো হয়বলেও ভাষা ও চেতনা সমিতির সম্পাদক ও কোলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজের সাবেক অধ্যাপক ড. ইমানুল হক জানান।

ড. ইমানুল হক

আজ ‘সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশন’, ‘ভাষা ও চেতনা সমিতি, ‘বন্দি মুক্তি কমিটিস্টুডেন্টস ইসলামিক অর্গানাইজেশন (এসআইও), বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ, পিপলস ফ্রন্ট অফ ইণ্ডিয়া, অল ইণ্ডিয়া স্টুডেন্টসঅ্যাসোসিয়েশনসহ কমপক্ষে ২০টি সংগঠনের পক্ষ থেকে অসমের দরং জেলার উচ্ছেদ অভিযানে সহিংসতার ঘটনার প্রতিবাদে কোলকাতার অসম ভবনের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়।   

পার্সটুডে/এমএএইচ/এমবিএ/২৫

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।