ইরান সম্পর্কে জানার সবচেয়ে ভালো অনুষ্ঠান ‘ইরান ভ্রমণ’
(last modified Mon, 10 Jan 2022 05:47:03 GMT )
জানুয়ারি ১০, ২০২২ ১১:৪৭ Asia/Dhaka
  • ইরান সম্পর্কে জানার সবচেয়ে ভালো অনুষ্ঠান ‘ইরান ভ্রমণ’

প্রিয় মহোদয়, আসসালামু আলাইকুম। আমার প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানবেন। রেডিও তেহরানের বাংলা বিভাগ থেকে প্রচারিত অনুষ্ঠানগুলোর মধ্যে ‘ইরান ভ্রমণ’ অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি অনুষ্ঠান।

যে কয়েকটি কারণে শ্রোতারা আন্তর্জাতিক বেতারের অনুষ্ঠান শুনে থাকেন তার একটি হল বিশ্বের খবরাখবর জানা এবং অপরটি হল ঐ দেশটি সম্পর্কে জানা। তদরূপ রেডিও তেহরানের অনেক শ্রোতাই ইরান সম্পর্কে জানার জন্যই আপনাদের অনুষ্ঠান শুনে থাকেন। আমি নিজেও তার ব্যতিক্রম নই। আর ইরান সম্পর্কে জানার সবচেয়ে ভালো অনুষ্ঠান হল ‘ইরান ভ্রমণ’।

আজকের (০৮/০১/২০২২, শনিবার) ইরান ভ্রমণও ছিল অসাধারণ। অনুষ্ঠানটির উপস্থাপনায় ছিলেন রেজোয়ান হোসেন ও আখতার জাহান। এতে আজ প্রথমে শাহরুদ শহরের নিকটস্থ শাইখ আবুল হাসান খারাকুনের মাজার শরিফের বর্ণনা দেয়া হয়। এছাড়া গারুসসর শহরের কাজীর ন্যাশনাল পার্কের ঐতিহাসিক সিয়ক্কো কমপ্লেক্সের বিবরণও দেয়া হয়। প্রধানত পাথর ব্যবহার করে এ ভবনটি তৈরি করা হয়েছে। তবে কোন কোন স্থানে ইটও ব্যবহৃত হয়েছে। কয়েকটি টাওয়ার ও দুটি ফটক রয়েছে এতে। এ সরাইখানার বাসিন্দাদের জন্য পানি সরবরাহের ব্যবস্থাও লক্ষণীয়। দুটি নালা- একটির উপর আরেকটি স্থাপন করে এতে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়। ব্লাক মাউন্টেনে অবস্থিত ঝর্ণা থেকে পানি এ সরইখানার বড় বড় পুকুরগুলোতে স্থানান্তর করা হতো। পানি সরবরাহের এরূপ আশ্চর্যজনক ব্যবস্থা পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

শাইখ আবুল হাসান খারাকুনের মাজার

সিয়ক্কো কমপ্লেক্স ইরানের একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন। এর নির্মাণকাল সম্পর্কে সঠিক কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে বিভিন্ন সময়ে এটি বিভিন্ন নামে পরিচিত ছিল। বর্তমানে এটি শাহ-আব্বাসীয় সরাইখানা নামে পরিচিত। ঐতিহাসিক নিদর্শনাবলী পরীক্ষা করে অনুমান করা হয় যে, বর্তমান ভবনটি একটি প্রাচীন ধ্বংসাবশেষের উপর নির্মান করা হয়েছিল। অনেকে মনে করেন, এটি তৈমুরী যুগে নির্মাণ করা হয়েছিল।

শাহ-আব্বাসীয় সরাইখানা থেকে দুই কিলোমিটার দূরে লবণ হ্রদ ও ইহুদ মরুর মাঝামাঝি জায়গায় আরেকটি সরাইখানা রয়েছে। এখানে একটি বড় রকমের মিষ্টি পানির ঝর্ণা বা ফোয়ারা রয়েছে। এই ফোয়ারা থেকে পানি নালার মাধ্যমে নিকটস্থ বাগানে সরবরাহ করা হত। নালাগুলোর অস্থিত্ব এখনো অনুধাবন করা যায়। 

অন্যদিকে শাহ-আব্বাসীয় সরাইখানা থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরে, দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অবস্থিত সাহাবী-যুগের একটি সরাইখানা। এটি মূলত শাহী-বংশের লোকজনের সফরকালীন আবাসের স্থান। এখান থেকে তারা পশু শিকার করতে বিভিন্ন স্থানে যেত। সিয়ক্কো পার্বত্য উপত্যকা থেকে এখানে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বিশেষ ব্যবস্থাপনায় একটি ক্যানেলের মাধ্যমে এখানে পানি আনা হতো।

গার্মসার লবণ খনি

অনুষ্ঠানের শেষ দিকে ইরানের লবণ খনি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। এ অঞ্চলে প্রায় ২৭টি লবণের খনি রয়েছে। লবণ টানেল ও লবণ গুহা এ এলাকার দুটি নামকরা নিদর্শন। বাইরে থেকে এ এলাকাটি পাহাড়ের মতই দেখায়। কিন্তু লবণ খুঁড়তে খুঁড়তে এ পাহাড়ে এখন একটি গুহা তৈরি হয়েছে। এখানে লবণ নানা বৈচিত্রময় ভূ-দৃশ্য তৈরি করেছে। কোনটা ফুলকপির মত, কোনটা স্ফটিকাকার, কোনটা ডিমের মত। এসব বিবরণ শুনতে শুনতে অভিভূত হয়ে গিয়েছিলাম! আর ভাবছিলাম, কবে এ অপরূপ সৌন্দর্য স্বচক্ষে উপভোগ করতে পারব। 

এমন উপভোগ্য একটি অনুষ্ঠানের জন্য রেডিও তেহরান বাংলা বিভাগের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। 

 

 

ধন্যবাদান্তে,

মোঃ শাহাদত হোসেন

সহকারী অধ্যাপক, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ

গুরুদয়াল সরকারি কলেজ, কিশোরগঞ্জ, বাংলাদেশ।

 

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/১০

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। 

ট্যাগ