ইরানের পরমাণু কর্মসূচির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের বিষয়ে নিষ্ক্রিয় আইএইএ
-
রাফায়েল গ্রোসি
আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা বা আইএইএর প্রধান রাফায়েল গ্রোসি ভিয়েনায় এক সংবাদ সম্মেলনে ইরানের পরমাণু স্থাপনা কিংবা বিজ্ঞানীদের ওপর হামলার নিন্দা জানাতে তেহরানের দাবি সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, বিভিন্ন সময়ে আমি যেকারো বিরুদ্ধে হামলার নিন্দা জানিয়েছি। আমি একজন কূটনীতিবিদ এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছি তাই যে কোনো সহিংসতার নিন্দা জানাই।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইরানের পরমাণু স্থাপনায় নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড এবং পরমাণু বিজ্ঞানীদের হত্যার ব্যাপারে আইএইএর নিষ্ক্রিয় অবস্থান বিশেষ করে রাফায়েল গ্রোসির নরম বক্তব্য থেকে বোঝা যায় ইরানের অভিযোগের ব্যাপারে তিনি কার্যকর কোনো প্রতিক্রিয়া তো দেখাননি বরং দায়সারা গোছের বক্তব্য দিয়ে পরোক্ষভাবে ইসরাইলের বেআইনি ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের প্রতি সবুজ সংকেত দিয়েছেন। অন্যদিকে আইএইএর প্রধান রাফায়েল গ্রোসি পরোক্ষভাবে ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলার নিন্দা জানাতে তেহরানের দাবি পূরণের শর্ত হিসেবে আইএইএর সঙ্গে সহযোগিতা বাড়ানোর কথা বলেছেন। তিনি ইরানের সঙ্গে সৃষ্ট সমস্যার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত ইরান আইএইএকে পূর্ণ সহযোগিতা না করবে ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো কিছুরই প্রতিশ্রুতি দেয়া যায় না।
প্রকৃতপক্ষে, এ অঞ্চলে ইরানের সবচেয়ে বড় শত্রু ইসরাইল ইরানের শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচির তীব্র বিরোধিতা করে আসছে এবং তারা প্রায়ই ইরানের পরমাণু স্থাপনার ওপর হামলার হুমকি দিচ্ছে। এরই মধ্যে তারা বেশ ক'বার ইরানের পরমাণু স্থাপনায় তাদের অনুচরদেরকে দিয়ে হামলা চালিয়েছে। এ প্রসঙ্গে ২০২১ সালের ১০ এপ্রিল নাথাঞ্জ পরমাণু প্রকল্পে ইসরাইলি ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের হামলার কথা উল্লেখ করা যায়। এরও আগে গত ২০২০ সালের ৩ জুলাই ইরানের আণবিক শক্তি সংস্থার মুখপাত্র নাথাঞ্জে সেন্ট্রিফিউজ কেন্দ্রে নাশকতার খবর দিয়েছিলেন।
বিশ্বে পরমাণু শক্তির অধিকারী দেশগুলোর মধ্যে ইরান একমাত্র দেশ যাদের পরমাণু স্থাপনায় বারবার হামলার হুমকি দেয়া হচ্ছে কিংবা প্রায়ই হামলা হচ্ছে। ইসরাইল নিজেই বেআইনিভাবে পরমাণু অস্ত্রের বিশাল ভাণ্ডার গড়ে তোলার পরও ইরানের শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচীর বিরোধিতা করে আসছে। ইসরাইল ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানীদের হত্যার পাশাপাশি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বহুবার সন্ত্রাসী হামলা ও সাইবার হামলা চালিয়েছে যাতে ইরান কোনোভাবেই পরমাণু শক্তির অধিকারী হতে না পারে। কিন্তু তারপরও আইএইএর পক্ষ থেকে ইসরাইলের বিরুদ্ধে কঠোর কোনো অবস্থান নিতে দেখা যায়নি। অথচ ইরান এ যাবত আইএইর সঙ্গে সহযোগিতা করে এসেছে। পরমাণু সমঝোতা অনুযায়ী পাশ্চাত্য তাদের প্রতিশ্রুতি পালন না করায় পাল্টা ইরানও সহযোগিতা কমিয়ে এনেছে। আর এটাকেই পাশ্চাত্য ও আইএইএ সুযোগ হিসাবে কাজে লাগাচ্ছে। আইএইএ ইসরাইল ও পাশ্চাত্যকে সমালোচনা না করলেও অসহযোগিতার জন্য ইরানকে ঠিকই অভিযুক্ত করছে।#
পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/৮
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।