অনন্ত জলিলের বিরুদ্ধে মামলা করবেন মুর্তজা অতাশ জমজম
চুক্তিপত্র ফাঁস করলেন ইরানি পরিচালক: ‘দিন: দ্য ডে’র বাজেট ৫ কোটির কম
বাংলাদেশ-ইরান যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত 'দিন: দ্য ডে' সিনেমার বাজেট ১০০ কোটি টাকার বেশি দাবি করা হলেও এটির প্রকৃত বাজেট ৫ লাখ মার্কিন ডলার। ২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী যা বাংলাদেশি টাকায় ৫ কোটিরও কম। অথচ চলচ্চিত্রটি নির্মাণে ১০০ কোটি টাকার বেশি খরচ হয়েছে বলে বিভিন্ন সময়ে দাবি করেছেন প্রযোজক-অভিনেতা অনন্ত জলিল ও তার স্ত্রী বর্ষা।
সিনেমাটির ইরানি পরিচালক ও সহ-প্রযোজক মুর্তজা অতাশ জমজম আজ (সোমবার) তার ইনস্টাগ্রামে 'দিন দ্য ডে' সিনেমার চুক্তিপত্র প্রকাশের পর এ তথ্য জানা গেছে। পরিচালক তার ৯ পৃষ্ঠার পোস্টে ওই চুক্তিপত্র প্রকাশের পাশাপাশি অনন্ত জলিলের বিরুদ্ধে বকেয়া অর্থ পরিশোধ না করা, চিত্রনাট্য ও শুটিং লোকেশন পরিবর্তনসহ একাধিক অভিযোগ তুলেছেন।
তিনি লিখেছেন, “চলচ্চিত্রটির চুক্তি ও বাজেটের পরিমাণ ৫০০,০০০ (পাঁচ লক্ষ মার্কিন ডলার) ছিল। অর্থাৎ আমরা ইরানি টিম কাজ করব এবং তিনি (অনন্ত জলিল) টাকা খরচ করবেন। এবং পরিশেষে চলচ্চিত্রের লভ্যাংশের ৮৫% বিনিয়োগকারীকে ও ১৫% প্রযোজক হিসেবে আমাকে দেওয়া হবে। অবশ্য, আপনারা'ডে' সিনেমার বাজেট ঘোষণায় উনার দাবির পরিমাণ স্পষ্টভাবে দেখে থাকবেন। তিনি 'ডে' সিনেমার নির্মাণ ব্যয় ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রচার করেছেন। যদিও তিনি এখন পর্যন্ত খরচের গুরুত্বপূর্ণ অংশ পাঁচ লাখ মার্কিন ডলার পুরোটা পরিশোথ করেননি। যেখানে কি-না দশ মিলিয়ন ডলারের দাবি, মূল বাজেটের প্রায় ত্রিশ গুণ বেশি দাবি!"
মুর্তজা বলেন, "অনন্ত জলিলের ক্রমাগত স্ক্রিপ্ট পরিবর্তন যেমন গল্পে আইএস, জঙ্গিবাদ ইস্যু থেকে মাদক ও মাফিয়া ইস্যুতে পরিবর্তন, চিত্রায়ণের স্থান সিরিয়া ও লেবানন থেকে পরিবর্তন করে আফগানিস্তান ও তুরস্কে নিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে মতপার্থক্য শুরু হয়। তার কাছে ঋণ দুই লাখ ডলারও পরিশোধ করা হয়নি।"
তিনি আরও অভিযোগ করেছেন, উনি (অনন্ত জলিল) আমার ঋণ পরিশোধ ও অনুমতি ব্যতীত, নিজে অপেশাদারিত্ব দেখিয়ে চলচ্চিত্রটির প্রযোজক ও পরিচালক সেজে তুরস্কে চিত্রগ্রহণ করেছেন। এমনকি এখন আমি লক্ষ্য করেছি যে, তিনি তুরস্কে কিছু চিত্রায়ণে নারীদের অশালীন নৃত্য দেখিয়েছেন যা কি-না চুক্তির সম্পূর্ণ বিরোধী।"
কয়েকদিন আগে একটি ইনস্টাগ্রাম পোস্টে পরিচালক মুর্তজা অতাশজমজম লিখেছেন, "অনন্ত জলিল আমাদের সঙ্গে চুক্তি এবং প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছেন। অনন্ত তার বিরুদ্ধে তেহরানে অভিযোগ করা এবং আন্তর্জাতিক উকিলের মাধ্যমে মামলা করা ছাড়া কোনও পথ খোলা রাখেননি।"
এদিকে, মুর্তজার পোস্টের প্রতিক্রিয়ায় অনন্ত জলিল আজ গণমাধ্যমকে বলেছেন, "নতুন করে চুক্তিপত্র লেখা হয়েছে, এটা সম্পূর্ণ এডিট করা। ২০১৮ সালের জুনে চুক্তি হওয়ার চার বছর পর কেন এসব নিয়ে কথা হচ্ছে? এটা মুর্তজার কাজ না, অন্য কেউ করাচ্ছে। আমি আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী করণীয় জানাচ্ছি।"
তিনি বলেন, "তারা চাচ্ছেন আমি যেন এই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে না থাকি। আর সিনেমা না বানাই। তাদের কথায় সরে যাই। আমাকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র হচ্ছে।"#
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/২২
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।