ইরানে দাঙ্গাকারীদের প্রতি মার্কিন সমর্থন অব্যাহত
(last modified Tue, 08 Nov 2022 10:08:17 GMT )
নভেম্বর ০৮, ২০২২ ১৬:০৮ Asia/Dhaka
  • মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস
    মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস ইরানে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের প্রতি সমর্থন দেয়া অব্যাহত রেখেছেন। একই সঙ্গে তিনি ইরানে দাঙ্গা সৃষ্টিতে ওয়াশিংটনের ভূমিকার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। ইরানে মার্কিন হস্তক্ষেপের ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের স্বীকারোক্তির ব্যাপারে নেড প্রাইস দাবি করেছেন, প্রেসিডেন্টের ওই মন্তব্যের উদ্দেশ্য ছিল ইরানের বিক্ষোভকারীদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করা।

বাইডেন সম্প্রতি  ক্যালিফোর্নিয়ায় এক সমাবেশে দাবি করেছেন: চিন্তা করবেন না, আমরা ইরানকে মুক্ত করব। তারা শীঘ্র নিজেরাই নিজেদের মুক্ত করবে।

আমেরিকার এই কর্মকর্তা আরো বলেন, আমরা প্রথম থেকেই ইরানে বিক্ষোভকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে আসছি তবে বর্তমান অস্থিতিশীলতার পেছনে আমেরিকার কোনো ভূমিকা নেই। তিনি আরো দাবি করেন, আমরা কেবল ইরানে যারা বিক্ষোভকারীদের দমন করছে এবং ইন্টারনেটের ওপর সীমাবদ্ধতা আরোপ করেছে তাদের ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছি। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এও বলেন, ইরান চায় অস্থিতিশীলতার সাথে আমেরিকাকে সম্পর্কযুক্ত করে মার্কিন কর্মকর্তাদেরকে অপদস্থ করতে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মার্কিন এই কর্মকর্তা ইরানে নৈরাজ্য সৃষ্টির পেছনে মার্কিন ভূমিকার বিষয়টিকে অস্বীকার করলেও বাস্তবতা হচ্ছে ইরানে দাঙ্গা সৃষ্টির পেছনে ওয়াশিংটনের সরাসরি হস্তক্ষেপ রয়েছে এবং এটাকে তারা কিছুতেই অস্বীকার করতে পারে না। সাবেক ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন যিনি চরম ইরান বিদ্বেষী হিসেবে পরিচিত তিনি ইরানের বর্তমান সরকার ব্যবস্থায় পরিবর্তনের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, ইরানের সরকার বিরোধীরা অস্ত্রে সজ্জিত হচ্ছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস ইরানে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের প্রতি সমর্থন দিয়ে ফের যে বক্তব্য দিয়েছেন তা আসলে ইরানে ওয়াশিংটনের হস্তক্ষেপমূলক কর্মকাণ্ডকেই তুলে ধরে যা কিনা মার্কিন পররাষ্ট্র নীতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। মাহসা আমিনির মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইরানে অসন্তোষ দেখা দিলে ওয়াশিংটন এটাকে ইরানে হস্তক্ষেপের অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে এবং বিক্ষোভ উস্কে দেয়ার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালায়। এ লক্ষ্যে আমেরিকা ইরানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ইন্টারনেটের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়ার পাশাপাশি দাঙ্গা অব্যাহত রাখতে নানাভাবে উস্কানি দেয়া অব্যাহত রেখেছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ইরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টির ব্যাপারে সাবেক ট্রাম্প সরকারের নীতিই অব্যাহত রেখেছেন। তিনিও নানা অজুহাতে কিছু দিন পরপরই ইরানের বিরুদ্ধে নতুন নতুন নিষেধাজ্ঞা দিয়ে যাচ্ছেন। ইরানে সরকার বিরোধী গোলযোগ ও সহিংসতা শুরুর পর এই অজুহাতে বাইডেন প্রশাসন কার্যত ভিয়েনায় পরমাণু সংক্রান্ত আলোচনা থেকে সরে গেছে এবং ইরানে দাঙ্গা সৃষ্টিকারীদের প্রতি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির আব্দুল্লাহিয়ান এক টুইটবার্তায় ইরানের ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সাম্প্রতিক মন্তব্যের জবাবে বলেছেন, জনাব বাইডেন ভন্ডামিপূর্ণ আচরণ ও আইএস জঙ্গিদেরকে সমর্থন দেয়া বন্ধ করুন।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, আমেরিকা শুধু যে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ইরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করছে তাই নয় একই সাথে অভ্যন্তরীণ গোলযোগ উস্কে দিয়ে ভেতর থেকে ইসলামি এই দেশটিকে ধ্বংস করার বা দুর্বল করার চেষ্টা করছে। #

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১১

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।