এবার লিবিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বাড়াতে চায় ইরান
(last modified Thu, 27 Jul 2023 13:04:03 GMT )
জুলাই ২৭, ২০২৩ ১৯:০৪ Asia/Dhaka

একটি উচ্চ পদস্থ প্রতিনিধি দল নিয়ে লিবিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী নাজলা মানকোশ ১৭ বছর পর ইরান সফরে এসে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন এবং এই সফরকে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের ইচ্ছার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে বিবেচনা করেছেন তিনি।

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান এবং লিবিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী নাজলা মানকোশ মঙ্গলবার তেহরানে সাক্ষাৎ করেন এবং দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

তেহরানে লিবিয়ার কূটনৈতিক প্রতিনিধিত্বকে রাষ্ট্রদূতের স্তরে উন্নীত করা, দূতাবাসের কার্যক্রম পুনরায় শুরু করাসহ সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়নের বিষয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন ইরান ও লিবিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। ত্রিপোলিতে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের দূতাবাস এবং দুই দেশের মধ্যে শিপিং লাইন পুনরায় চালু করা, বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ করে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো এগিয়ে নেয়ার জন্য দুই দেশের কর্মকর্তারা তাদের দৃঢ় ইচ্ছা ও সংকল্প ব্যক্ত করেছেন। এছাড়া দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যৌথভাবে পবিত্র কোরআন অবমাননার মতো অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক কাজ প্রত্যাখ্যান করেছেন।

২০১১ সাল থেকে এবং দেশটির প্রতিষ্ঠিত সরকারের পতনের পর থেকে লিবিয়া একটি ভয়াহব গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। লিবিয়ার বিভিন্ন পক্ষ একটি ঐক্যবদ্ধ এবং ব্যাপক ভিত্তিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হওয়ার পাশাপাশি তারা বিদেশীদের হস্তক্ষেপের মতো সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে।  তাই সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বের অনেক দেশের সঙ্গে লিবিয়ার রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্কের মাত্রা  অনেক কমে গেছে।

উত্তর আফ্রিকায় একটি ইসলামিক দেশ হিসেবে লিবিয়ার অবস্থানের প্রতি দৃষ্টি দেয়া সবসময়ই ইরানের আগ্রহের বিষয় ছিল এবং বহু বছর ধরে দুই দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক রয়েছে। এদিকে, ইরানের ১৩ তম সরকারেরপররাষ্ট্র বিষয়ক একটি অগ্রাধিকার ভিত্তিক নীতি হচ্ছে ইসলামি বিশ্বের পাশাপাশি  প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো। ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে- কোনো ধরনের বিদেশী হস্তক্ষেপ ছাড়াই কেবলমাত্র আলোচনার মাধ্যমে এই অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে বিরোধ এবং মতপার্থক্য মিটিয়ে ফেলা একমাত্র পথ। এই প্রেক্ষাপটে ইরান ও সৌদি আরব কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরায় চালু করতে সম্মত হওয়ার পর এই অঞ্চলের আরব দেশগুলো ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের সাথে সম্পর্ক জোরদার করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। এখন বিভিন্ন কূটনৈতিক চ্যানেলে মিশর ও বাহরাইনের সাথে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে ইরান। এদিকে সুদানও  ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরায় চালু করার অনুরোধ করেছে।

যদিও ইরানের সঙ্গে লিবিয়ার সম্পর্কের উন্নতি ও সম্প্রসারণ ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার সঙ্গে সম্পর্কিত নয় প্রকৃতপক্ষে এই সম্পর্কের ধীরগতি বরং লিবিয়ার অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির কারণে  প্রভাবিত হয়েছিল।  এ প্রসঙ্গে তেহরানে লিবিয়া সরকারের নতুন রাষ্ট্রদূত আলী জুমা হাসান ফাজিল ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসির কাছে তার পরিচয়পত্র পেশ করার অনুষ্ঠানে বলেছেন: "আঞ্চলিক সম্পর্ক জোরদার করার বিষয়ে আপনার প্রচেষ্টার জন্য  লিবিয়ার জনগণ আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ। 

যাইহোক হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান লিবিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাম্প্রতিক তেহরানে সফর এবং ইরানের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার সাথে তার বৈঠকের কথা উল্লেখ করে এক টুইটার বার্তায় লিখেছেন,  বিভিন্ন বাণিজ্যিক, অর্থনৈতিক, শিল্প, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোসহ দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের ব্যাপারে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ এবং একই সঙ্গে মুসলিম দেশ লিবিয়ায় স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাকে আমরা স্বাগত জানাই। #

পার্সটুডে/বাবুল আখতার/২৭

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।