ইসলামি ঐক্যসপ্তাহ পালন: মুসলিম ঐক্য প্রতিষ্ঠার বিরল সুযোগ
https://parstoday.ir/bn/news/iran-i128758-ইসলামি_ঐক্যসপ্তাহ_পালন_মুসলিম_ঐক্য_প্রতিষ্ঠার_বিরল_সুযোগ
ইরানে এখন চলছে ইসলামি ঐক্য সপ্তাহ উদযাপন। বিশ্বের সুন্নি মুসলমানদের বিশ্বাস ১২ রবিউল আওয়াল হচ্ছে বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ (সা.)এর জন্মদিন অন্যদিকে শিয়া মুসলমানরা মনে করেন ১৭ রবিউল আওয়াল হচ্ছে নবী(সা.)এর জন্মদিন। এ অবস্থায় ইমাম খোমেনি (র.) এর নির্দেশে ১২ থেকে ১৭ তারিখ পর্যন্ত ইরানে প্রতি বছর ইসলামি ঐক্য সপ্তাহ পালিত হয়।
(last modified 2025-07-29T12:16:04+00:00 )
সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৩ ১১:৩৮ Asia/Dhaka
  • ইসলামি ঐক্যসপ্তাহ পালন: মুসলিম ঐক্য প্রতিষ্ঠার বিরল সুযোগ

ইরানে এখন চলছে ইসলামি ঐক্য সপ্তাহ উদযাপন। বিশ্বের সুন্নি মুসলমানদের বিশ্বাস ১২ রবিউল আওয়াল হচ্ছে বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ (সা.)এর জন্মদিন অন্যদিকে শিয়া মুসলমানরা মনে করেন ১৭ রবিউল আওয়াল হচ্ছে নবী(সা.)এর জন্মদিন। এ অবস্থায় ইমাম খোমেনি (র.) এর নির্দেশে ১২ থেকে ১৭ তারিখ পর্যন্ত ইরানে প্রতি বছর ইসলামি ঐক্য সপ্তাহ পালিত হয়।

ঐক্য সপ্তাহ পালন মুসলমানদের প্রধান দুই মাজহাবের অনুসারীদের মধ্যে একতা  সৃষ্টির গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ হিসেবে দেখা হয় যাতে শত্রুরা মুসলমানদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টির কোনো সুযোগ না পায়। ঐক্য সপ্তাহ পালনের ফলে মুসলমানদের মধ্যে একতা ও ভ্রাতৃত্ব আগের চেয়ে ভালো অনুভূত হচ্ছে। বহু আগে থেকেই শিয়া ও সুন্নি মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে আসছেন বিজ্ঞজনেরা। উদাহরণ হিসেবে মিশরের আল আহজার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ও  প্রখ্যাত সুন্নি আলেম শেইখ সালতুতের কাছে ইরানের শিয়া আলেম আয়াতুল্লাহ বরুজের্দির পাঠানো চিঠি ও তার সাথে সাক্ষাতের কথা উল্লেখ করা যায়। আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান তার এক ফতোয়ায় শিয়াদের শিক্ষাকেন্দ্র থেকে শিক্ষাগ্রহণের পক্ষে ফতোয়া জারি করেছিলেন। তিনি ইরানের ইসলামী বিপ্লবের মহান নেতা ইমাম খোমেনী (র.) এবং অন্যান্য বিশিষ্ট আলেমদের কার্যকরী ও দূরদর্শী দিকনির্দেশনার কথা উল্লেখ করেন এবং সেই সাথে সুন্নি আলেমদের সাথে ইমাম খোমেনির সাক্ষাৎ ও তার অনুপ্রেরণামুলক বক্তব্যের কথা উল্লেখ করেন। একইসাথে তিনি বিশ্বের মুসলমানদের মধ্যকার ঐক্য প্রতিষ্ঠায় ইমাম খোমেনির অক্লান্ত প্রচেষ্টার  কথাও উল্লেখ করেন।

যাইহোক, শিয়া-সুন্নি ঐক্যের পথে ভেতরে ও বাইরে ব্যাপক প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছে। বিভাজন অব্যাহত রাখতে শত্রুদের প্রচেষ্টা থেমে নেই। ইসলামের  উভয় মাজহাবে এমন কিছু লোক রয়েছে যারা বিতর্কিত ইস্যুগুলোকে বড় করে তুলে ধরেছে এবং ঐক্যসৃষ্টির অভিন্ন বিষয়গুলোকে উপেক্ষা করে যাচ্ছে। তারা এমনসব আচরণ করছে যার ফলে ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে বিভাজন তৈরি হচ্ছে।  কিন্তু এখানে মূল বিষয় হচ্ছে যে, আমরা যদি মুসলিম ঐক্য ও সম্প্রীতিকে বিঘ্নিতকারী কিছু অজ্ঞ লোকের অদূরদর্শী আচরণকে উপেক্ষা করে  একে সমাধানযোগ্য বিষয় হিসাবে বিবেচনা করি যা আমাদের অবশ্যই করা  উচিত, তাহলে আমরা বহুদূর এগিয়ে যেতে পারবো।

কিন্তু বিশ্ব সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো মুসলমানদের উগ্র গোষ্ঠীগুলোকে ব্যবহার করে মুসলমানদের মধ্যে  বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এ উদ্দেশ্যে আমরা এটাও লক্ষ্য করছি যে, ব্রিটিশ সমর্থিত উগ্র শিয়া গোষ্ঠী এবং মার্কিন সমর্থিত দায়েশ বা আইএস এর মতো উগ্র সুন্নি ওয়াহাবি গোষ্ঠীকে সৃষ্টি করা হয়েছে। ব্রিটিশ ও আমেরিকা এ দুই উগ্র গোষ্ঠীকে ব্যবহার করছে মুসলমানদের মধ্যে বিভাজন তৈরির জন্য। এ অবস্থায় মুসলমানদের মধ্যকার যে কোনো ঐক্যপ্রতিষ্ঠার চেষ্টা শত্রুদেরকে হতাশ করবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তাই বিশ্ব সাম্রাজ্যবাদী চক্র মুসলিম দেশগুলোর বিরুদ্ধে অনৈক্য সৃষ্টির ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম ভূখণ্ডের বিরুদ্ধে। কারণ তারা এ অঞ্চলের  ভৌগোলিক গুরুত্ব ভালোভাবে বোঝে এবং এ দেশগুলো সম্পদশালী। তাই এ অঞ্চলের মুসলিম দেশগুলো যদি ঐক্যবদ্ধ হয় তাহলে তারা ভালো করেই জানে যে এখান থেকে তাদের পাত্তাড়ি গুটাতে হবে। এ অবস্থায় ইসলামি ঐক্য সপ্তাহ পালন নিঃসন্দেহে মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠা এবং সচেতনতা বাড়াতে ভূমিকা রাখবে। #

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/৩০

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।