ইরানে বিশ্ব কুদস দিবসের মিছিলে মানুষের ঢল; ৭ শহীদ সেনার কফিনে শ্রদ্ধা
ইরানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আজ (শুক্রবার) পবিত্র আল কুদস দিবস পালিত হচ্ছে। ফিলিস্তিনিদের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ এবং মুসলমানদের প্রথম কেবলাসমৃদ্ধ পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস শহর দখলমুক্ত করার প্রত্যয়কে সামনে রেখে প্রতি বছর মুসলমানেরা পবিত্র রমজান মাসের শেষ শুক্রবারকে বিশ্ব কুদস দিবস হিসেবে পালন করে থাকেন। তবে এবারের কুদস দিসব সর্বত্র ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। কারণ গাজায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলের ভয়াবহ গণহত্যা চলার মধ্যেই এই দিবসটি পালিত হচ্ছে।
ইরানের রাজধানী তেহরানসহ দেশের প্রত্যেক গ্রাম ও শহরে কুদস দিবসের মিছিলে মানুষের ঢল নেমেছে। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা ফিলিস্তিনের পতাকা বহন করছেন। রাজধানী তেহরানের মিছিলে শোভা যাচ্ছে সাত শহীদের কফিন। গত ১ এপ্রিল সিরিয়ায় ইরানি দূতাবাসের কনস্যুলেট বিভাগে ইসরাইলি হামলায় ঐ সাত ইরানি সেনা কর্মকর্তা শহীদ হন। তাদেরকে কুদসের শহীদ নামে অভিহিত করা হচ্ছে। আজকের মিছিলে তাদের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা-জ্ঞাপন ছিল চোখে পড়ার মতো। মিছিলে অংশগ্রহণকারীদেরকে কফিন বহনকারী গাড়িতে হাত বুলিয়ে আদর করতে দেখা গেছে, কেউ কেউ দূর থেকে ফুল ছিটিয়ে তাদেরকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছিলেন।
মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের কণ্ঠে মূল শ্লোগান ছিল 'ইসরাইল ধ্বংস হোক, আমেরিকা নিপাত যাক'। ফিলিস্তিনিদের ভূখণ্ড দখল করে ইসরাইল প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠীকে সর্বাত্মক সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে আমেরিকা ও ইউরোপ।
ইহুদিবাদীদের কবল থেকে মুসলমানদের প্রথম ক্বেবলাসমৃদ্ধ নগরী বায়তুল মুকাদ্দাসকে মুক্ত করার প্রত্যয় নিয়ে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের স্থপতি ইমাম খোমেনী (রহ.) ১৯৭৯ সালে প্রথম এ দিবস পালন করার কথা ঘোষণা করেন।
তাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়ে তখন থেকে প্রতি বছর রমজান মাসের শেষ শুক্রবার বিশ্ব কুদস দিবস হিসেবে পালিত হয়ে এসেছে। এ দিবসে বিশ্বের মুসলমানরা ইসরাইল বিরোধী বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন এবং আমেরিকা ও ইসরাইলের পতাকায় অগ্নিসংযোগ করেন। তারা ইহুদিবাদী ইসরাইলের দখলদারিত্ব থেকে আল-কুদসকে মুক্ত করার শপথ নেন।
এবারের বিশ্ব কুদস দিবস উপলক্ষে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী বলেছেন, এবারের কুদস দিবসে দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আন্তর্জাতিকভাবে আলোড়ন সৃষ্টি করবে। পূর্ববর্তী বছরগুলোতে কুদস দিবস শুধুমাত্র মুসলিম দেশগুলো পালন করতো, কিন্তু এবার অমুসলিম দেশগুলোতেও মহিমান্বিতভাবে কুদস দিবস পালিত হবে ইনশাআল্লাহ। তিনি আরো বলেছেন, আশাকরি আজকের তরুণরা সেই দিনটি দেখতে পাবে যেদিন পবিত্র আল-কুদস মুসলমানদের হাতে থাকবে এবং সেখানে তারা নামাজ পড়বে।#
পার্সটুডে/এসএ/৫
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।