মার্কিন ও ইউরোপীয় শিক্ষার্থীদের ইসরাইলবিরোধী গণজাগরণের প্রতি ইরানের বিশ্ববিদ্যালয় সমাজের সমর্থন
(last modified Mon, 29 Apr 2024 03:40:22 GMT )
এপ্রিল ২৯, ২০২৪ ০৯:৪০ Asia/Dhaka
  • মার্কিন ও ইউরোপীয় শিক্ষার্থীদের ইসরাইলবিরোধী গণজাগরণের প্রতি ইরানের বিশ্ববিদ্যালয় সমাজের সমর্থন
    মার্কিন ও ইউরোপীয় শিক্ষার্থীদের ইসরাইলবিরোধী গণজাগরণের প্রতি ইরানের বিশ্ববিদ্যালয় সমাজের সমর্থন

আমেরিকা ও ইউরোপের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা গাজার ওপর ইসরাইলি ভয়াবহ গণহত্যার প্রতিবাদে যে ব্যাপকভিত্তিক আন্দোলন শুরু করেছেন তার প্রতি সমর্থন জানিয়েছে ইরানের বিশ্ববিদ্যালয় সমাজ।

রোববার (২৮ এপ্রিল) ইরানজুড়ে সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জোহরের নামাজের পর নিজ নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সমবেত হয়ে এই সমর্থন ঘোষণা করেন। পশ্চিমা দেশগুলোতে ‘গাজার প্রতি সংহতি’ জানিয়ে যে আন্দোলন হচ্ছে মূলত ইরানি শিক্ষার্থীরা তার প্রতি পূর্ণ সমর্থন ও সংহতি ঘোষণা করেন।

ইরানের বিশ্ববিদ্যালগুলোর ছাত্র-শিক্ষকরা আমেরিকা ও ইউরোপের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতি সমর্থন জানাতে ইহুদিবাদবিরোধী ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী স্লোগান দেন।

ইরানের বিজ্ঞান, গবেষণা ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী মোহাম্মাদ আলী জোলফিগোল বলেছেন, সারাবিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে ইসরাইলি গণহত্যার বিরুদ্ধে রব ওঠায় বোঝা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় সমাজের বিবেক এখনও বেঁচে আছে।  তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সব সময় জুলুম ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে।

মার্কিন ও ইউরোপীয় শিক্ষার্থীদের ইসরাইলবিরোধী গণজাগরণের সমর্থনে তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল প্রবেশগেটে ব্যানার

এদিকে, তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল প্রবেশ ফটকের সামনে বিভিন্ন ব্যানার টানিয়ে ফিলিস্তিনবাসীর প্রতি নিজের সমর্থন ঘোষণার পাশাপাশি ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে টানানো ব্যানারে ইংরেজি ভাষায় যা লেখা হয়েছে তার সারমর্ম এরকম: “তেহরান ও নিউ ইয়র্কের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিচ্ছেন: নদী থেকে সাগর পর্যন্ত ফিলিস্তিন স্বাধীন হবে।”

ইরানের বিজ্ঞান, গবেষণা ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মাহদি বাদেপা জানিয়েছেন, ইরানের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলরগণ আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কাছে ইমেইল পাঠিয়েছেন। তিনি বলেন, অবৈধ রাষ্ট্র ইহুদিবাদী ইসরাইল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ইতিহাসে এই প্রথমবার আমেরিকা ও ইউরোপের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইসরাইলবিরোধী আন্দোলন তুঙ্গে উঠেছে।

গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের নজিরবিহীন বিক্ষোভ দ্রুত বেগে ছড়িয়ে পড়েছে। নতুন করে আরও ২০টির মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ায় কর্তৃপক্ষ ব্যাপক হারে ধরপাকড় চালাচ্ছে। এক দিনে আরও ২০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এর মধ্যে দেশটির একজন প্রেসিডেন্ট প্রার্থীও রয়েছেন। তবে আন্দোলনকারীরা বলছেন, গ্রেপ্তার অভিযানে তারা পিছু হটবেন না। দাবি আদায়ে ত্যাগ স্বীকারে তারা প্রস্তুত। বিক্ষোভের মুখে একটি অনুষ্ঠানে পেছনের দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে হয়েছে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ফিলিস্তিনি ছাত্ররা রোববার দক্ষিণ গাজায় সংহতি সমাবেশ করেছে। রাফাহর শাবোরা শরণার্থী শিবিরে শিশুরা একটি ব্যানার বহন করে, যাতে লেখা ছিল– ‘কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমাদের পাশেই থেকো’ এবং ‘আমাদের শিক্ষা ও জীবনের অধিকার লঙ্ঘন একটি যুদ্ধাপরাধ।’

ফিলিস্তিনি শিশুরা তাঁবুর কাপড়ে মার্কিন বিক্ষোভকারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতার বার্তা লিখেছে এভাবে– ‘গাজার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করা শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ। আপনাদের বার্তা আমাদের কাছে পৌঁছে গেছে।’#

পার্সটুডে/এমএমআই/জিএআর/ ২৯