অ্যাসিরিয় খ্রিস্টান ধর্মযাজক: ইরান মঙ্গল, সৌন্দর্য ও ধর্মীয় সহাবস্থানের দেশ
পার্সটুডে- তেহরানের অ্যাসিরিয় খ্রিস্টান যাজক বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের ভূমিকাকে অনস্বীকার্য বলে মন্তব্য করেছেন।
পার্সটুডের রিপোর্ট অনুযায়ী এবং ইসলামিক কালচার অ্যান্ড কমিউনিকেশন অর্গানাইজেশনের জনসংযোগ দফতর থেকে বলা হয়েছে, তেহরানের অ্যাসিরিয় খ্রিস্টান যাজক নিনোস মোক্কাদসনিয়া জোর দিয়ে বলেছেন যে ধর্মীয় ব্যক্তিত্বরা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং বন্ধুত্ব গড়ে তোলার অন্যতম শক্তিশালী মাধ্যম। তিনি আরো বলেছেন, পশ্চিমা বিশ্বে, শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে সরকার ও সমাজের উচ্চ স্তর থেকে ধর্ম ও ধর্মে বিশ্বাসীদেরকে বাদ দেয়া হয়েছে। পশ্চিমা সরকারগুলো তাদের ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদেরকে তেমন গুরুত্ব দেয় না;শুধুমাত্র নির্বাচনের সময় বেশি ভোট পাওয়ার জন্য সরকার ও রাজনীতিবিদরা ধর্মীয় ইস্যুর প্রতি মনোযোগ দেয়।
এই খ্রিস্টান ধর্মযাজক আরো বলেছেন, বিশ্বে তৎপর বহু ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব রয়েছেন যারা বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বিভিন্ন ধর্ম ও জাতিগুলোর মধ্যে ঐক্য ও বন্ধুত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন।
তেহরানের অ্যাসিরিয় খ্রিস্টান ধর্মযাজক ধর্মীয় কূটনীতি বা সংলাপের সর্বোচ্চ ব্যবহারের পথে কিছু বাধা সম্পর্কেও বলেছেন: নিঃসন্দেহে, ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে কিছু ভুল বোঝাবুঝি এই পথে অন্যতম প্রধান বাধা। এখনও পারস্পরিক সন্দেহ ও অবিশ্বাস রয়েছে যার শেকড় কয়েকশ বছরের পুরানো এবং ব্যক্তি মানসিকতাকে বিষাক্ত করে তুলেছে।
সব পক্ষের জন্য এটি মেনে নেওয়া ভাল যে তাদের একে অপরের ব্যাপারে তাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন হতে পারে। আজকের পৃথিবী আগের শতাব্দীর বিশ্ব নয় এবং বর্তমানে একে অপরকে আরও ভালভাবে জানা দরকার।
তেহরানের অ্যাসিরিয় খ্রিস্টান ধর্মযাজক নিনোস মোক্কাদসনিয়া অর্থনীতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অন্যান্য দেশের সাথে ইরানের ধর্মীয় সম্পর্ক বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আরো বলেছেন,
ইরানে, সমস্ত ধর্মের মধ্যে বিশেষ করে তিনটি প্রধান খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে বহুবার সংলাপ হয়েছে। নিঃসন্দেহে, বাইরে থেকে আসা যেসব খ্রিস্টান ধর্মীয় নেতারা ইরান সফর করেছেন এবং ইরানের ইসফাহান ও শিরাজের মতো সুন্দর শহরগুলোতে সময় কাটিয়েছেন, তারা আমাদের দেশে সহাবস্থানের সুন্দর পরিবেশ এবং ভাল স্মৃতি নিয়ে চলে গেছেন।
ইরানের এই খ্রিস্টান ধর্মযাজক আরো বলেছেন, "সম্ভবত এই ধর্মীয় প্রতিনিধিদের মতামত তাদের দেশের সরকারের উপর খুব বেশি প্রভাব ফেলবে না,কেননা বহু সরকার ইরানের প্রতি শত্রুতা পোষণ করে, কিন্তু, এটি নিঃসন্দেহে গির্জার ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের ও তাদের সমাজের চিন্তাভাবনার উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।" পশ্চিমা সরকারী মিডিয়াগুলোর অপপ্রচার সত্ত্বেও এই সমাজের মানুষের এটা জানা উচিত যে ইরান সমস্ত ধর্ম ও জাতিগোষ্ঠীর মঙ্গল, সৌন্দর্য এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের দেশ ছিল এবং এখনও রয়েছে। তাই ইরান ভ্রমণ করে তারা এই দেশটির সমৃদ্ধ সংস্কৃতি থেকে অনেক কিছু জানতে ও শিখতে পারে।
তেহরানের এই অ্যাসিরিয় খ্রিস্টান ধর্মযাজক সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় সংলাপে একে অপরকে সাহায্য করার বিষয়ে বলেছেন: ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের আসলে একটি লক্ষ্য থাকে, আর তা হল সমাজকে উন্নতির দিকে এগিয়ে নেয়া। আমার মতে, ইরানের ইসলামি সংস্কৃতি ও যোগাযোগ সংস্থা এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রচেষ্টা চালিয়েছে এবং এ ক্ষেত্রে সর্বোত্তম পদক্ষেপ নিয়েছে। এই সংস্থার আয়োজিত সমাবেশে আমরা বহুবার দেশি-বিদেশি বিশিষ্ট ধর্মীয় ব্যক্তিদের মতবিনিময় ও সেমিনার প্রত্যক্ষ করেছি এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই সম্পর্ক অব্যাহত রয়েছে এবং ভালো ফলও এনেছে। #
পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১৬
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।