সামুদ্রিক ইঞ্জিনসহ নানা ধরণের ইঞ্জিন তৈরিতে ইরানের স্বনির্ভরতা অর্জন; রয়েছে ওয়াটারজেট ইঞ্জিনও
(last modified Wed, 09 Apr 2025 14:52:00 GMT )
এপ্রিল ০৯, ২০২৫ ২০:৫২ Asia/Dhaka
  • সামুদ্রিক ইঞ্জিনসহ নানা ধরণের ইঞ্জিন তৈরিতে ইরানের স্বনির্ভরতা অর্জন; রয়েছে ওয়াটারজেট ইঞ্জিনও

পার্সটুডে- ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ক্রমাগত প্রচেষ্টা এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরণের ইঞ্জিন তৈরির ক্ষেত্রে স্বনির্ভরতা অর্জন করেছে।

নতুন প্রজন্মের তিন-মেগাওয়াট ইঞ্জিন পুরোপুরি দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরির কাজে ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে। দেশীয় প্রযুক্তিতে এই ইঞ্জিন উৎপাদনের কাজ ৬০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।  প্রতিরক্ষামন্ত্রী আজিজ নাসিরজাদেহ ঘোষণা করেছেন, এই বছরের শেষ নাগাদ এই ইঞ্জিনগুলোর উৎপাদন ৮০ শতাংশ স্থানীয়ভাবে সম্পন্ন হবে। আগামী বছর এসব ইঞ্জিন সম্পূর্ণরূপে দেশীয়ভাবে উৎপাদিত হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

নতুন প্রজন্মের তিন-মেগাওয়াট ইঞ্জিন

 

তিন মেগাওয়াটের ইঞ্জিনের বিবরণ

৩ মেগাওয়াট শক্তি এবং ১৮ টন ওজনের এই ধরণের ইঞ্জিনের ঘূর্ণন ক্ষমতা ২০০০ পিএম যা প্রায় ২৫ টন ক্ষমতাসম্পন্ন পাওয়ার-প্ল্যান্ট জেনারেটরের সাথে সংযুক্ত করা হয়েছে। ছোট কোম্পানিগুলোতে এই ইঞ্জিন ব্যবহার করে বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানো সম্ভব। এই ধরণের ইঞ্জিন ব্যবহার করে দেশের বিদ্যুৎ খাতে ভারসাম্যহীনতা নিয়ন্ত্রণে অনেকাংশে সহজ হয়। এই ইঞ্জিনগুলোর উৎপাদন লাইন উদ্বোধনের ফলে সরাসরি কমপক্ষে ২০০ জনের কর্মসংস্থান হবে এবং প্রায় ৬০০ জনের পরোক্ষ কর্মসংস্থান সম্ভব হবে।

এক মিলিয়ন ইউরো সাশ্রয়

ইরান হেভি ডিজেল কোম্পানির নির্বাহী কর্মকর্তা ইসা মোরাদি মনে করেন, নতুন প্রজন্মের এই ইঞ্জিন দেশের জন্য বড় ধরণের অর্থনৈতিক সুবিধা নিশ্চিত করবে। প্রতি ইঞ্জিনের জন্য দশ লাখ ইউরোর বেশি বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। তিনি আরও বলেন, তিন মেগাওয়াট ইঞ্জিন বেশি পরিমাণে উৎপাদনের মাধ্যমে দেশের রেল পরিবহন বহরের গতি বাড়ানো সম্ভব হবে এবং এই খাতের উন্নয়নে আরও গতি আসবে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সামুদ্রিক ইঞ্জিন তৈরির ক্ষেত্রে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান উল্লেখযোগ্য সাফল্য পেয়েছে। এই সাফল্য মূলত সামুদ্রিক শিল্পের উন্নয়ন ও গবেষণা এবং প্রকৌশল ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ সক্ষমতার কারণে সম্ভব হয়েছে। এটা বলা যেতে পারে যে, ৩-মেগাওয়াট ইঞ্জিনই প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একমাত্র অর্জন নয়। অন্যান্য ধরণের ইঞ্জিনও স্থানীয় বিজ্ঞানী এবং প্রযুক্তিবিদদের মাধ্যমে ডিজাইন করা হয়েছে এবং উৎপাদিত হচ্ছে।

নতুন প্রজন্মের তিন-মেগাওয়াট ইঞ্জিন

 

জাতীয় ডিজেল ইঞ্জিন

১৩০০ হর্স পাওয়ারের জাতীয় ডিজেল ইঞ্জিন তৈরি হচ্ছে ইরানে। এসব ইঞ্জিন বিভিন্ন মডেলের। কোনোটি কেবল ডিজেল চালিত। আবার রয়েছে হাইব্রিড জ্বালানির ইঞ্জিন। এসব ইঞ্জিন সড়ক, রেলপথ, সামুদ্রিক খাত, তেল, জ্বালানি এবং প্রতিরক্ষা খাতে ব্যাপকভাবে ব্যবহার হচ্ছে। এসব ইঞ্জিন দূষণ হ্রাসের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে। এ ধরনের একটি ইঞ্জিন বিদেশ থেকে আমদানি করতে যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হতো তা দিয়ে এখন একই মানের পাঁচটি ইঞ্জিন ইরানে তৈরি করা হচ্ছে। 

জাতীয় ডিজেল ইঞ্জিন

 

তুস পেট্রোল ইঞ্জিন

২০০ হর্সপাওয়ারের পেট্রোল ইঞ্জিন ৪১ নট গতিতে জাহাজগুলোকে চালিত করতে সক্ষম, যা প্রতি ঘন্টায় ৭৪ কিলোমিটারের সমান। এটি বাইরে সংযুক্ত করা যায়। এই ইঞ্জিনে ব্যবহৃত প্রযুক্তিগুলির মধ্যে রয়েছে লুব্রিকেশন, শীতলকরণ, বিদ্যুৎ উৎপাদন, বিদ্যুৎ সঞ্চালন এবং বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা। 

তুস পেট্রোল ইঞ্জিন

 

জাতীয় ওয়াটারজেট ইঞ্জিন

এই ইঞ্জিনটি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের শিল্প বিভাগ, শরীফ বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেসরকারি প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর সহযোগিতায় তৈরি করা হয়েছে। এই ইঞ্জিনের বিভিন্ন মডেল রয়েছে, চাহিদা অনুযায়ী এটি বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যায়। দেশীয় বিশেষজ্ঞদের তৈরি এই ইঞ্জিন দামে সস্তা। বিদেশ থেকে কিনলে অন্তত ৩০ শতাংশ বেশি দামে তা কিনতে হয়। এই ইঞ্জিন নৌযানকে অগভীর জলে চলতে সহযোগিতা করে এবং দ্রুত নৌযানকে থামিয়ে দিতে ও দিক পরিবর্তন করতে সক্ষম।

জাতীয় ওয়াটারজেট ইঞ্জিন

 

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং সশস্ত্র বাহিনী ব্যাপক চেষ্টা ও গবেষণার মাধ্যমে সব ধরণের ইঞ্জিন তৈরির ক্ষেত্রে স্বনির্ভরতা অর্জন করেছে। এই গুরুত্বপূর্ণ অর্জনের কারণে ইরানকে আর এ ক্ষেত্রে বিদেশের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে না।#

পার্সটুডে/এসএ/৯

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।