কোন কোন খেলার উৎস ইরান
-
হাসান ইয়াজদানি ইরানি ফ্রিস্টাইল কুস্তি চ্যাম্পিয়ন
পার্সটুডে- ইরান, তার সমৃদ্ধ ইতিহাস এবং সংস্কৃতির সাথে অনেক খেলার উত্থান এবং বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
হাজার হাজার বছর ধরে বিস্তৃত একটি সভ্যতার সাথে সাথে ইরান কেবল শিল্প, স্থাপত্য এবং দর্শনের ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেনি বরং কিছু ঐতিহ্যবাহী এবং প্রতিযোগিতামূলক খেলার গঠন এবং বিকাশেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। এই খেলাগুলোর মধ্যে অনেকগুলো তাদের শারীরিক দিক ছাড়াও, নৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক ধারনা বহন করে।
পার্সটুডে'র এই নিবন্ধে, আমরা এমন কিছু খেলার দিকে নজর দেব যেসব খেলার শিকড় রয়েছে ইরানেও। তবে কেবল ইরানেই নয়, বিশ্বের অন্যান্য অংশেও বিখ্যাত এবং জনপ্রিয়।
পোলো
পোলো বিশ্বের প্রাচীনতম খেলাগুলোর মধ্যে একটি যার শিকড় রয়েছে প্রাচীন ইরানে। এই খেলাটি অ্যাকামেনিড (খ্রিস্টপূর্ব ৩৩০-৫৫০) এবং সাসানীয় (২২৪-৬৫১ খ্রিস্টাব্দ) যুগে জনপ্রিয় ছিল এবং সৈন্যদের সামরিক প্রশিক্ষণের একটি রূপ হিসাবে ব্যবহৃত হত। পোলো কেবল একটি প্রতিযোগিতামূলক খেলাই ছিল না বরং দক্ষতা, শক্তি এবং সহযোগিতার প্রতীকও ছিল। খেলাটি পরে ভারত এবং পরে ইউরোপে স্থানান্তরিত হয় এবং বিশ্বজুড়ে আরও আধুনিক আকারে ছড়িয়ে পড়ে।
পাহলাভানি (জুরখানে) খেলা
ইরানের প্রাচীনতম খেলাগুলির মধ্যে একটি হচ্ছে জুরখানে। খেলাটির দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে সাসানীয় যুগ এবং তারও আগে। এই খেলাটি কেবল শারীরিক কর্মক্ষমতাই নয় নৈতিকতা এবং আত্ম-উন্নতিও ঘটায়। এখন এই খেলাটি ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যগুলির মধ্যে একটি হিসাবে নিবন্ধিত।
কুস্তি
কুস্তি ইরানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহ্যবাহী খেলাগুলির মধ্যে একটি যার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। ইরানে এই খেলাটি সর্বদা বীরত্ব, সম্মান এবং সুস্থ প্রতিযোগিতার ধারণার সাথে যুক্ত। ইরান সর্বদা এই জনপ্রিয় খেলায় বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দেশগুলোর মধ্যে একটি।
জ্যাভলিন নিক্ষেপ
জ্যাভলিন নিক্ষেপ একটি ঐতিহ্যবাহী ইরানি খেলা যা যুদ্ধক্ষেত্রে শক্তি এবং দক্ষতা প্রদর্শনের জন্য ব্যবহৃত হত। আজ, এই খেলাটি আন্তর্জাতিক খেলা এবং প্রতিযোগিতার আকারে খেলা হয় এবং এখনও এর আবেদন ধরে রেখেছে।
জু; কাবাডির অনুপ্রেরণা
জু হল একটি ঐতিহ্যবাহী ইরানী খেলা যার কাবাডির সাথে খুব মিল রয়েছে। এই খেলাটি ইরানের গ্রামীণ এবং যাযাবর অঞ্চলে সর্বাধিক জনপ্রিয়। শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের জন্য একটি প্রতিযোগিতামূলক এবং বিনোদনমূলক খেলা হিসেবে পরিচিত। জু-এর জন্য একাগ্রতা, দলগত সমন্বয় এবং তত্পরতা প্রয়োজন। কিছু গবেষক বিশ্বাস করেন যে এই খেলাটি ভারতীয় উপমহাদেশে বিকশিত কাবাডি দ্বারা অনুপ্রাণিত বা সম্পর্কিত হতে পারে।
ঘোড়ায় চড়া
যদিও বিশ্বের সমস্ত প্রাচীন জাতি ঘোড়ায় চড়ত তারপরও ঐতিহাসিক নথি অনুসারে ইরানীরাই প্রথম যারা সামরিক এবং ক্রীড়া ক্ষেত্রে ঘোড়ার ব্যবহার করেছিল।
রাগবি
কিছু ঐতিহাসিক গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে, ইরানীরা বল খেলা খেলত যা পরবর্তীতে রাগবির মতো আধুনিক খেলাগুলিকে অনুপ্রাণিত করেছিল। এই খেলাগুলি সাধারণত খোলা জায়গায় খেলা হত এবং দ্রুত গতি এবং দক্ষতার সমন্বয় ছিল।#
পার্সটুডে/জিএআর/২৯
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।