কাস্পিয়ান সাগরে সামুদ্রিক ঐক্য: আঞ্চলিক নিরাপত্তার অগ্রভাগে ইরান
https://parstoday.ir/bn/news/iran-i152764-কাস্পিয়ান_সাগরে_সামুদ্রিক_ঐক্য_আঞ্চলিক_নিরাপত্তার_অগ্রভাগে_ইরান
পার্সটুডে: রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত কাস্পিয়ান সাগর তীরবর্তী দেশগুলোর নৌবাহিনী প্রধানদের সম্মেলনের অবকাশে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের নৌবাহিনীর কমান্ডার তার আজারবাইজান, কাজাখস্তান ও রুশ সমকক্ষদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
(last modified 2025-10-08T12:25:45+00:00 )
অক্টোবর ০৮, ২০২৫ ১৮:২০ Asia/Dhaka
  • ক্যাস্পিয়ান উপকূলীয় দেশগুলোর নৌ কমান্ডারদের বৈঠকে অ্যাডমিরাল শাহরাম ইরানি অংশগ্রহণ করেছেন
    ক্যাস্পিয়ান উপকূলীয় দেশগুলোর নৌ কমান্ডারদের বৈঠকে অ্যাডমিরাল শাহরাম ইরানি অংশগ্রহণ করেছেন

পার্সটুডে: রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত কাস্পিয়ান সাগর তীরবর্তী দেশগুলোর নৌবাহিনী প্রধানদের সম্মেলনের অবকাশে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের নৌবাহিনীর কমান্ডার তার আজারবাইজান, কাজাখস্তান ও রুশ সমকক্ষদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।

পার্সটুডে জানিয়েছে, ইরানের নৌবাহিনীর কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহরাম ইরানি সেন্ট পিটার্সবার্গে আজারবাইজান প্রজাতন্ত্রের নৌবাহিনীর কমান্ডার ক্যাপ্টেন কলি মোহাম্মদভের সাথে সাক্ষাৎ ও আলোচনা করেছেন। সাক্ষাতের পর ক্যাপ্টেন কলি মোহাম্মদভ তার বক্তব্যে ইরান ও আজারবাইজানকে দু টি বন্ধুত্বপূর্ণ, ভ্রাতৃপ্রতীম ও প্রতিবেশী দেশ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন: উভয় দেশ সকল ক্ষেত্রে নিবিড় সহযোগিতা বজায় রাখে এবং কাস্পিয়ান সাগর সংক্রান্ত বিষয়েও উভয় দেশের মধ্যে খুব ভালো সমন্বয় রয়েছে।

রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহরাম ইরানি তার কাজাখ সমকক্ষের সাথেও দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার গুণগত মান উন্নয়নের উপায় নিয়ে আলোচনা করেছেন। কাজাখস্তানের নৌবাহিনীর কমান্ডার ক্যাপ্টেন কানাত নিয়াজবেকভ তার ইরানি সমকক্ষের সাথে সাক্ষাতের পর বলেন, আমাদের খুব ভালো আলোচনা হয়েছে এবং ভবিষ্যত সহযোগিতার রোডম্যাপ নিয়ে আমরা গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতায় পৌঁছেছি।

ইরান, রাশিয়া, কাজাখস্তান ও আজারবাইজান প্রজাতন্ত্রের নৌবাহিনীর কমান্ডাররা গতকাল (মঙ্গলবার) তাদের যৌথ বৈঠকে কাস্পিয়ান সাগর বিষয়ে আঞ্চলিক শক্তিগুলোর বক্তব্য ও কিছু কার্যকলাপের প্রতি দৃঢ় প্রতিক্রিয়া জানান।

রাশিয়ার নৌবাহিনীর কমান্ডার আলেকজান্ডার মোইসিভ বলেন, কাস্পিয়ান সাগরের মহাসাগর বা মুক্ত জলের সাথে কোন সংযোগ নেই এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম-কানুনের দৃষ্টিকোণ থেকে, তীরবর্তী পাঁচটি দেশ ছাড়া অন্য কোন বিদেশি শক্তির এই সাগর সম্পর্কে হস্তক্ষেপ বা মন্তব্য করার কোন অধিকার নেই।

রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহরাম ইরানিও এই বৈঠকে বলেন, কাস্পিয়ান সাগর কাস্পিয়ান সাগর তীরবর্তী পাঁচটি দেশের অন্তর্গত এবং আমরা বাইরে থেকে কোন দেশকে এই সাগর সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে দেব না। ইরানের ইসলামি প্রজাতন্ত্রের নৌবাহিনীর কমান্ডার যোগ করেন, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান কাস্পিয়ান সাগর সম্পর্কিত সকল ইভেন্টে তার পূর্ণ ক্ষমতা নিয়ে সর্বোচ্চ একতার সাথে অংশগ্রহণ করবে।

ইরানের ইসলামি প্রজাতন্ত্রের নৌবাহিনী, বিশেষ করে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক জলপথে একটি ব্যাপক, সফল ও প্রভাবশালী উপস্থিতি বজায় রেখেছে। স্থানীয়ভাবে নির্মিত সরঞ্জাম, বৈচিত্র্যময় নৌবহর এবং নৌ অপারেশনে অভিজ্ঞতার সাথে ইরানের নৌবাহিনীর উচ্চ কার্যক্ষম ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ, সহায়তা ও সমন্বয়ে একটি কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করতে পারে। কাস্পিয়ান সাগর তীরবর্তী দেশগুলির নৌ কমান্ডারদের সম্মেলনে ইরানের অবিচ্ছিন্ন অংশগ্রহণ আঞ্চলিক নিয়ম-কানুন নির্ধারণে সক্রিয় ভূমিকার সাক্ষ্য দেয়।

নিরাপত্তা সহযোগিতা আরও গভীর হলে মৎস্যসম্পদ, জ্বালানি ও সামুদ্রিক পরিবহন খাতে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে। একযোগে কাজ করলে কাস্পিয়ান উপকূলীয় দেশগুলো সাইবার হুমকি, সমুদ্রপথে সন্ত্রাসবাদ এবং চোরাচালান কার্যক্রমের বিরুদ্ধে আরও কার্যকরভাবে মোকাবিলা করতে পারবে।

কাস্পিয়ান সাগর তীরবর্তী দেশগুলির সাথে ইরানের নৌবাহিনীর সহযোগিতা আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, বহিরাগত হস্তক্ষেপ মোকাবেলা করা এবং প্রতিরক্ষা একতা শক্তিশালীকরণে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই সহযোগিতা পাঁচটি তীরবর্তী দেশের মধ্যে সামরিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত মিথস্ক্রিয়া বিকাশের জন্য একটি মঞ্চ প্রস্তুত করে।

কাস্পিয়ান সাগরের মুক্ত জলের সাথে সরাসরি সংযোগ না থাকায়, আন্তর্জাতিক আইনের দৃষ্টিকোণ থেকে এটি শুধুমাত্র পাঁচটি তীরবর্তী দেশের অন্তর্গত। ইরান, রাশিয়া, কাজাখস্তান ও আজারবাইজান প্রজাতন্ত্রের নৌবাহিনীর কমান্ডারগণ সাম্প্রতিক বৈঠকে জোর দিয়েছেন যে কোন বহিরাগত শক্তির এই সাগরের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার কোন অধিকার নেই।

আজারবাইজান ও কাজাখস্তানের সাথে ইরানের দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা, যার মধ্যে ভবিষ্যত সহযোগিতার রোডম্যাপ নিয়ে চুক্তিও অন্তর্ভুক্ত, এটি যৌথ নিরাপত্তা কাঠামো এবং যৌথ নৌ মহড়া ও অপারেশনে সমন্বয়ের দিকে অগ্রসর হওয়ার ইঙ্গিত দেয়। যৌথ নৌ মহড়া এবং কাস্পিয়ান সাগর তীরবর্তী দেশগুলোর অংশগ্রহণে নতুন মহড়ার পরিকল্পনাও সাধারণ হুমকির মুখে প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি ও কার্যকরী সমন্বয় শক্তিশালী করার সংকল্প নির্দেশ করে।

কাস্পিয়ান সাগর তীরবর্তী দেশগুলো, বিশেষ করে আজারবাইজান, কাজাখস্তান ও রাশিয়ার সাথে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের নৌবাহিনীর সহযোগিতা কৌশলগত প্রয়োজনই নয়, বরং আঞ্চলিক নিরাপত্তা জোরদার করা, বহিরাগত হস্তক্ষেপ মোকাবেলা করা এবং বহুপাক্ষিক মিথস্ক্রিয়া বিকাশের একটি ঐতিহাসিক সুযোগ।#

পার্সটুডে/এমএআর/৮