ইরানি জাতি আমেরিকার বর্বরতার কাছে আত্মসমর্পণ করবে না: সর্বোচ্চ নেতা
https://parstoday.ir/bn/news/iran-i154282-ইরানি_জাতি_আমেরিকার_বর্বরতার_কাছে_আত্মসমর্পণ_করবে_না_সর্বোচ্চ_নেতা
পার্সটুডে- ইরানের ইসলামী বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ি বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় দেশগুলোর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্য ইরানকে তাদের নীতি মেনে চলতে বাধ্য করা।
(last modified 2025-11-21T14:22:27+00:00 )
নভেম্বর ২১, ২০২৫ ২০:২১ Asia/Dhaka
  • • ইসলামী বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা আলী খামেনেয়ি
    • ইসলামী বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা আলী খামেনেয়ি

পার্সটুডে- ইরানের ইসলামী বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ি বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় দেশগুলোর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্য ইরানকে তাদের নীতি মেনে চলতে বাধ্য করা।

পার্সটুডে জানিয়েছে, গত বছর ২৪ এপ্রিল ইসলামী বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ি শ্রমিকদের সাথে এক সভায় বলেছিলেন: আমরা বছরের পর বছর ধরে কঠোর নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হয়ে আসছি; যে নিষেধাজ্ঞা  সম্পর্কে খোদ আমেরিকানরা এবং কিছু ইউরোপীয় দেশ বলেছিল যে ইরানের উপর আরোপিত এই নিষেধাজ্ঞাগুলি ইতিহাসে নজিরবিহীন! আচ্ছা, প্রথমত, এই নিষেধাজ্ঞাগুলির লক্ষ্য কী? তারা কিছু লক্ষ্যের কথা বলে কিন্তু তারা মিথ্যা বলে; আসলে এসব কোনো লক্ষ্য নয়। তারা পারমাণবিক শক্তি, পারমাণবিক অস্ত্র এবং মানবাধিকারের বিষয়টি উত্থাপন করে; এগুলো সবই অজুহাত মাত্র। তারা আরো দাবি করে যে আমরা ইরানকে নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছি কারণ দেশটি সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে! প্রশ্ন হচ্ছে, প্রকৃত সন্ত্রাসী কারা? গাজার জনগণ? তাদের চোখে গাজার মানুষ তো সন্ত্রাসী! অথচ একটি শয়তানী চক্র, ভুয়া, দখলদার ও নির্মম ইসরায়েল শুধুমাত্র গত ছয় মাসে প্রায় চল্লিশ হাজার মানুষকে হত্যা করেছে, যাদের মধ্যে কয়েক হাজার শিশু রয়েছে। অথচ কি নির্মম পরিহাস ইসরায়েল সন্ত্রাসী নয়, বরং যাদের উপর তারা বোমাবর্ষণ করছে তারা সন্ত্রাসী! তাহলে বোঝা যায় নিষেধাজ্ঞার জন্য তারা ইরান সম্পর্কে যা বলছে তা মিথ্যা। নিষেধাজ্ঞার উদ্দেশ্য হল ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানকে অবরুদ্ধ করে রাখা। তারা ইরানকে নিষেধাজ্ঞায় জর্জরিত করতে চায়, কিন্তু এতে কী লাভ হবে? তারা ভেবেছে এতে করে ইরান আত্মসমর্পন করবে এবং পাশ্চাত্যের নীতি মেনে চলতে বাধ্য হবে। আর এটাই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য।

ইসলামী বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতা আরও বলেন: "পাশ্চাত্য রাজনৈতিক ক্ষেত্রে, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে, দেশ পরিচালনায় তথা সর্বক্ষেত্রে বিশুদ্ধ আনুগত্য চায়। তারা বলে, আমাদের কাছে সম্পূর্ণরূপে আত্মসমর্পণ করো; কিছু সরকারের অবস্থা তোমরা তো দেখতেই পাচ্ছো যে তাদের সম্পদ আমাদের হাতে, তাদের মান সম্মান আমাদের হাতে, তারা আমাদের নীতি অনুসরণ করছে; সুতরাং তোমরাও নতি শিকার করো। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, ইসলামী সরকার ব্যবস্থা, ইসলামী আদর্শ এবং ইরানের মহান জাতির পক্ষে এই ধরনের নির্যাতন ও অপমানের কাছে আত্মসমর্পণ করা অসম্ভব।"

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা উল্লেখ করেছেন: নিষেধাজ্ঞা দেশের অভ্যন্তরে প্রতিভা বিকাশের সুযোগ  এনে দেয় এবং সক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। আজ, আমরা এমন অনেক জিনিস তৈরি করছি যা এক সময় আমাদের প্রচুর অর্থের বিনিময়ে আমদানি করতে হতো; কিন্তু কেন? কারণ আমাদের বাধ্য করা হত; এখন তারা আমাদের কাছে বিক্রি করেনা, কিন্তু আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হযে বেড়ে উঠেছি।

নিষেধাজ্ঞা আমাদের জন্য সুযোগে পরিণত হয়েছে

এদিকে, ২০২৪ সালের ৩০ জানুয়ারি ইসলামী বিপ্লবের নেতা উৎপাদক এবং অর্থনৈতিক কর্মীদের এক সমাবেশে বলেছিলেন: অবশ্যই, আমাদের বাহ্যিক সমস্যা রয়েছে, আমাদের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, শত্রুতা রয়েছে, তবে এগুলি আমাদের জন্য সুযোগও হতে পারে।

তিনি উল্লেখ করেছেন: যদিও নিষেধাজ্ঞাগুলি ক্ষতিকারক এবং নিঃসন্দেহে সমস্যা তৈরি করে, তবে এগুলিকে একটি সুযোগ হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে; ঠিক যেমন আমাদের যুবসমাজ এবং অর্থনৈতিক কর্মীরা কিছু ক্ষেত্রে এ সুযোগকে কাজে লাগিয়েছে এবং বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি সাধন করেছে। যদি তারা আমাদের কাছে অস্ত্র বিক্রি করত, তাহলে হয়তো আমরা আজ অস্ত্রের ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারতাম না। কিন্তু নিষেধাজ্ঞাগুলো আমাদের এই কাজগুলোকে সহজ করে দিয়েছে।  আল্লাহর ইচ্ছায়, আমরা এই সুযোগগুলি দিনে দিনে এবং আগের চেয়েও বেশি ব্যবহার করতে সক্ষম হব।#

পার্সটুডে/এমআরএইচ/২১

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন