আইএইএ'র ইরানবিরোধী প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়া
জবরদস্তি করে ইরানের অগ্রগতি থামানো যাবে না: এক্স ব্যবহারকারীদের বার্তা
-
সম্পূর্ণ নিজস্ব প্রযুক্তিতে নির্মিত ইরানের 'সাফির' উৎক্ষেপণযান
পার্সটুডে: সামাজিক মাধ্যম এক্স-এর ইরানি ব্যবহারকারীরা জোর দিয়ে বলেছেন, পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-এর গভর্নরস বোর্ডের সাম্প্রতিক প্রস্তাবে ইরানের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক পথকে আরও কঠিন করে তুলবে।
ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও জার্মানি—এই তিন ইউরোপীয় দেশের প্রস্তাবিত এবং যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থিত প্রস্তাবটি বৃহস্পতিবার আইএইএ-এর গভর্নরস বোর্ডের অধিবেশনে পাস হয়েছে। প্রস্তাবটি ১৯ ভোটে অনুমোদিত হয়, ১২টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে এবং ৩টি দেশ এর বিরোধিতা করে। প্রস্তাবে ইরানের দীর্ঘদিনের সহযোগিতার কোনো উল্লেখ নেই এবং তেহরানকে পরমাণু তদারকি-সংক্রান্ত বাধ্যবাধকতা না মানার অভিযোগ করা হয়েছে।
পার্সটুডে'র রিপোর্ট অনুযায়ী, ইরানি এক্স ব্যবহারকারীরা এই প্রস্তাবকে রাজনৈতিক চাপের হাতিয়ার হিসেবে চিহ্নিত করে বলেছেন, এটি কূটনীতির পথকে আরও জটিল করে তুলবে।
“ইয়াস” নামে এক ব্যবহারকারী লিখেছেন: “এই রাজনৈতিক প্রস্তাব ইরান ও আইএইএ'র মধ্যে পেশাদার সহযোগিতার পথে বাধা সৃষ্টি করছে। এ সিদ্ধান্তটি এমন একটি প্রতিষ্ঠানের ওপর স্পষ্ট রাজনৈতিক চাপ, যার উচিত ক্ষমতার লড়াইয়ের বাইরে থেকে শুধু প্রযুক্তিগত দায়িত্ব পালন করা।”
“বাকিপুর” লিখেছেন: “যখন অপর পক্ষ তার নিজের প্রতিশ্রুতি পূরণ করছে না, তখন সহযোগিতায় অগ্রগতির আশা করাও অযৌক্তিক। ইরান সবসময় আলোচনার পথ খোলা রেখেছে, কিন্তু চাপ ও রাজনৈতিক আচরণ শুধু বিশ্বাস নষ্ট করে।”
আরেক ইরানি ব্যবহারকারী “আলী” মনে করেন: “রাজনৈতিক চাপে লেখা প্রস্তাব আইএইএ-কেও সাহায্য করে না, কূটনীতির পথকেও না। ইরান সহযোগিতায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল, কিন্তু অসম্মানের মুখে চুপ থাকবে না।”
“মেইসাম পাকরাভান” বলেছেন: “বৃহস্পতিবারের প্রস্তাবটি তেহরানের ওপর অবৈধ চাপ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে গৃহীত হয়েছে। পশ্চিমারা আশা করে ইরান এরপরও আইএইএ-এর সাথে সহযোগিতা করবে—যা বাস্তবতার সাথে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক।”
“সাহার” পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাকে প্রভাবহীন বলে মন্তব্য করে লিখেছেন: “ইরান নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও উন্নতি করতে পেরেছে; কিন্তু সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সাম্প্রতিক ট্রাম্পের সাথে বৈঠক দেখিয়ে দিয়েছে যে, নিষেধাজ্ঞার ভয়ে রিয়াদ দু’হাতে সবকিছু আমেরিকার পায়ের কাছে সঁপে দিয়েছে।”
“গোলামি” এক্স-এ লিখেছেন: “ইরান শিখেছে নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও নিজের পায়ে দাঁড়াতে। কিন্তু কিছু দেশ বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার তেলের আয় থাকা সত্ত্বেও নিরাপত্তা, শিল্প ও ভবিষ্যতের জন্য এখনো পরনির্ভর! এটাই প্রমাণ করে সত্যিকারের স্বাধীনতা শুধু টাকায় আসে না, অভ্যন্তরীণ শক্তিতে আসে।”
“আলিরেজা ওমিদি” বলেছেন, ইরান এমন একটি দেশ যে নিষেধাজ্ঞার চাপের মধ্যেও স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে এবং বিজ্ঞান-প্রযুক্তি রপ্তানি করছে। ইরানিরা নিজেদের জ্ঞানের ওপর ভর করে বিশ্বে সম্মান অর্জন করেছে।
এক্স ব্যবহারকারী “আশকান মামবিনি” জোর দিয়ে বলেছেন: “ইরান শক্তি ও অগ্রগতির পথে অবিচল থাকবে। পশ্চিম, আমেরিকা ও জায়নিবাদী শাসকগোষ্ঠী জোর, চাপ, হুমকি ও নিষেধাজ্ঞা দিয়ে কখনোই শক্তিশালী ইরানকে এ পথ থেকে বিচ্যুত বা থামাতে পারবে না।”#
পার্সটুডে/এমএআর/২১