পরমাণু সমঝোতা রক্ষায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের দ্বৈত নীতি
ইরানের পরমাণু সমঝোতা থেকে আমেরিকা বেরিয়ে গেলেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইইউ এই সমঝোতা বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেছে এবং এ পর্যন্ত কিছু পদক্ষেপও নিয়েছে। তা সত্ত্বেও ইইউ মাঝেমধ্যে ইরানের বিরুদ্ধে আমেরিকার কিছু ভিত্তিহীন দাবির পুনরাবৃত্তি করছে।
ইইউর পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা ফেডেরিকা মোগেরিনি শুক্রবার ওই ইউনিয়নের প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীদে অনানুষ্ঠানিক বৈঠকের পর ইরানের পরমাণু সমঝোতার প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। কিন্তু সেইসঙ্গে তিনি এও বলেন, ইরানের মধ্যপ্রাচ্য নীতি ইউরোপের জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইউরোপ তাদের নিজেদের স্বার্থে ইরানের পরমাণু সমঝোতার প্রতি সমর্থন জানাচ্ছে। তাদের দৃষ্টিতে, এই সমঝোতার মাধ্যমে তাদের ভাষায় ইরানকে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করা থেকে বিরত রাখা সম্ভব হয়েছে। সেইসঙ্গে পরমাণু কর্মসূচি থেকে ইরানকে বিরত রাখার জন্য দেশটিতে হামলা চালানোর প্রয়োজনও পড়ছে না। এ ছাড়া, আলোচনার মাধ্যমে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে ইরানের পরমাণু সমঝোতা একটি মডেলে পরিণত হয়েছে।
এসব কারণে পরমাণু সমঝোতা রক্ষা করার জন্য ইইউ ইরানের জন্য প্যাকেজ ঘোষণা করেছে এবং আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার প্রভাব থেকে ইরানকে মুক্ত রাখার উপায় বের করার চেষ্টা করছে। মোগেরিনি এ সম্পর্কে বলেছেন, ইরান যাতে ইউরোপসহ বিশ্বের সব দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক লেনদেন করতে পারে সে চেষ্টাই করছে ইইউ।
আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা বা আইএইএ পরমাণু সমঝোতা সই হওয়ার পর বৃহস্পতিবার ১২তম বারের মতো ইরানের পক্ষ থেকে এই সমঝোতা মেনে চলা হচ্ছে বলে প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর মোগেরিনি শুক্রবার এসব কথা বলেন।
কিন্তু পরমাণু সমঝোতায় যে বিষয়ের কোনো উল্লেখ নেই অর্থাৎ ইরানের মধ্যপ্রাচ্য নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে ইইউ’র এই কর্মকর্তা প্রকারান্তরে আমেরিকার ইরান বিরোধী নীতিকে সমর্থন করেছেন। তিনি এমন সময় এ প্রশ্ন তুলছেন যখন ইরাক ও সিরিয়া সরকারের আবেদনে সাড়া দিয়ে ওই দুই দেশে সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধে সহযোগিতা করেছে ইরান।
আমেরিকা, সৌদি আরব ও ইহুদিবাদী ইসরাইলের প্রত্যক্ষ মদদে ইরাক ও সিরিয়ায় উগ্র তাকফিরি জঙ্গিদের লেলিয়ে দেয়া হয়েছিল। কাজেই যে ইরান সন্ত্রাসবাদ দমনে সহযোগিতা করেছে তাকে মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা বিনষ্টকারী হিসেবে চিহ্নিত করার অপচেষ্টায় সন্ত্রাসবাদের মদদদানকারী তিন শক্তিই কেবল খুশি হবে, অন্য কেউ নয়।#
পার্সটুডে/মুজাহিদুল ইসলাম/১