ইরানের বিরুদ্ধে ৪ আরব দেশের অভিযোগ ব্যর্থতা ঢাকার চেষ্টা: তেহরান
(last modified Thu, 13 Sep 2018 12:41:30 GMT )
সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৮ ১৮:৪১ Asia/Dhaka

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বাহরাম কাসেমি বলেছেন, "চারটি আরব দেশ নিয়ে গঠিত চতুর্পক্ষীয় কমিটির তেহরান বিরোধী বক্তব্য ষড়যন্ত্রমূলক এবং মধ্যপ্রাচ্যের বাস্তব অবস্থান থেকে বিশ্বজনমতকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা। একইসঙ্গে তাদের ইরান বিরোধী বক্তব্য থেকে এ অঞ্চলে তৎপর সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর প্রতি সমর্থনের বিষয়টিও ফুটে উঠেছে।"

বাহরাম কাসেমি আরো বলেছেন, "ইরান সবসময়ই প্রতিবেশী দেশগুলোতে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা কামনা করে এবং পারস্পরিক সম্মান ও আস্থার নীতিতে বিশ্বাসী। ইরান কখনই অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না।"

মিশরের রাজধানী কায়রোয় আরব লীগের বৈঠকের অবকাশে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিশর ও বাহরাইনকে নিয়ে গঠিত চতুর্পক্ষীয় কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে আরব দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার জন্য ইরানকে অভিযুক্ত করা হয়। বৈঠকের বিবৃতিতে মধ্যপ্রাচ্যে ধ্বংসাত্মক তৎপরতা চালানোর জন্য ইরানকে অভিযুক্ত করে দাবি করা হয়েছে, "ইরান ইয়েমেনের ভূমি ব্যবহার করে সৌদি আরবে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে এবং সিরিয়ার বিষয়েও ইরান হস্তক্ষেপ করছে।"

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, চতুর্পক্ষীয় কমিটির প্রতিটি সদস্যই কোনো না কোনোভাবে আমেরিকার ওপর নির্ভরশীল। এ দেশগুলো আমেরিকাকে খুশী করার জন্য প্রায়ই ইরানের বিরুদ্ধে নানা ভিত্তিহীন অভিযোগ উত্থাপন করে। আরব দেশগুলোর ব্যাপারে বর্তমানে আমেরিকার নীতি হচ্ছে যতটা সম্ভব তাদের কাছ থেকে স্বার্থ আদায় করে নেয়া। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি বলেছেন, আরব দেশগুলোর নিরাপত্তা আমেরিকার সাহায্য ও সমর্থনের ওপর নির্ভরশীল। ট্রাম্পের এ বক্তব্য সৌদি আরব, মিশর, বাহরাইন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের জন্য খুবই অবমাননাকর। কিন্তু তারপরও তারা আমেরিকাকে খুশী করতে গিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে চরম নিরাপত্তাহীন পরিস্থিতি তৈরি করেছে।

বর্তমানে এটা কারোরই জানতে বাকি নেই যে, আমিরাত ও সৌদি আরবের সহযোগিতায় আমেরিকা সিরিয়া থেকে শুরু করে ইয়েমেন পর্যন্ত সবখানে অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে সন্ত্রাসীদেরকে লেলিয়ে দিয়েছে। সিরিয়ায় দায়েশ এবং ইয়েমেনে আল কায়দার উপস্থিতি থেকেই সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে আমেরিকার সহযোগিতার প্রমাণ পাওয়া যায়।

এছাড়া, গত কয়েক দিনে সন্ত্রাসীদের কবল থেকে ইদলিব উদ্ধারের জন্য সিরিয়ার সেনাবাহিনীর প্রস্তুতির বিরুদ্ধে আমেরিকা ও তার মিত্রদের হৈ চৈ ও হুমকি ধমকি থেকেও সন্ত্রাসীদের প্রতি তাদের সমর্থনের প্রমাণ পাওয়া যায়। খ্যাতনামা মার্কিন লেখক ও ভাষ্যকার স্টিফেন ল্যান্ডম্যান সম্প্রতি গ্লোবাল রিসার্চে এক নিবন্ধে লিখেছেন, আমেরিকার সমর্থন নিয়ে জাবহাতুন নুসরা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ও আল কায়দার সমর্থিত অন্যান্য সন্ত্রাসী গ্রুপ বর্তমানে সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইদলিব প্রদেশ দখল করে রেখেছে।

এ ছাড়া, বাহরাইন ও ইয়েমেনের ব্যাপারেও আমেরিকা, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরব একে অপরকে সহযোগিতা করছে। তারা ইয়েমেনে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার জন্য ইয়েমেন ও সৌদি আরবে হস্তক্ষেপের জন্য ইরানকে অভিযুক্ত করছে। ইয়েমেন যুদ্ধ বর্তমানে আমেরিকা, সৌদি আরব ও আমিরাতের জন্য পরাজয় ডেকে এনেছে। সৌদি আরব ও আমিরাতকে প্রচুর অস্ত্র দিয়েও ইয়েমেন যুদ্ধে তারা বিজয়ী হতে পারেনি। এ অবস্থায়, নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার জন্য আমেরিকা ইরান আতঙ্ক সৃষ্টি ও সন্ত্রাসীদের প্রতি সমর্থন দেয়া অব্যাহত রেখেছে। #

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১৩

ট্যাগ