পরমাণু সমঝোতার ব্যাপারে মার্কিন নীতির তীব্র সমালোচনা করল ইউরোপ
ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে ইরানের স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতা বিশ্বে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও এটি ধ্বংস করার জন্য আমেরিকা গত ৮ মে এ চুক্তি থেকে বেরিয়ে যায়। আমেরিকার এ সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেনি চীন, রাশিয়া, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এমনকি আমেরিকার ভেতরেও ব্যাপক নিন্দা ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন গতকাল (মঙ্গলবার) এক বিবৃতিতে পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় আমেরিকার তীব্র সমালোচনা করেছে। পরমাণু সমঝোতা অনুযায়ী ইরান তার প্রতিশ্রুতি পুরোপুরি মেনে চলছে বলে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা বা আইএইএ'র প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর ইউরোপের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইরান যতদিন পরমাণু সমঝোতা মেনে চলবে ততদিন ইউরোপীয় ইউনিয়নও এ চুক্তির প্রতি অটল থাকবে।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি আইএইএ'র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ইরান তার প্রতিশ্রুতিতে অটল রয়েছে। এই বিবৃতিতে তুরস্ক, উত্তর ম্যাকডোনিয়া, মন্টেনিগ্রো, সার্বিয়া, আলবেনিয়া, বসনিয়া হার্জেগোভিনা, লিচেনস্টাইন, নরওয়ে ও সান মারিওনার সমর্থন রয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন পরমাণু সমঝোতার প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেছে, এ সমঝোতা রক্ষায় আন্তর্জাতিক সমাজের সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে ইউরোপ।
তবে পর্যবেক্ষকরা বলছেন, পরমাণু সমঝোতা টিকিয়ে রাখতে হলে ইউরোপকেও মূল্য দিতে হবে। কারণ আমেরিকার চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত ইউরোপ কি পদক্ষেপ নেয় সেটাই দেখার বিষয়। আমেরিকা পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর এখনো ইরানের কাছ থেকে আরো ছাড় আদায়ের চেষ্টা করছে। আইএইএতে নিযুক্ত মার্কিন প্রতিনিধি গতকাল এক বিবৃতিতে পশ্চিম এশিয়ায় ইরানের তৎপরতার ব্যাপারে ভিত্তিহীন অভিযোগের পুনরাবৃত্তি করেছেন। তিনি বলেন, আমেরিকা ইরানের সঙ্গে পরিপূর্ণ এমন একটি চুক্তিতে উপনীত হতে চায় যাতে ওয়াশিংটনের উদ্বেগ দূর হয়। তিনি দাবি করেন, পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গিয়ে আমেরিকা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ২২৩১ নম্বর প্রস্তাব লঙ্ঘন করেনি।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ অন্যান্য মার্কিন কর্মকর্তারা গত কয়েক মাস ধরে বলে আসছেন, তারা ইরানের সঙ্গে নতুন করে চুক্তিতে সই করতে চান। এ দাবির প্রতিক্রিয়ায় ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বাহরাম কাসেমি বলেছেন, নতুন করে আলোচনা কিংবা চুক্তির দাবি সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য এবং এর কোনো মূল্য নেই। তিনি আমেরিকাকে সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক চুক্তি লঙ্ঘনকারী হিসেবে অবিহিত করেন।
ইরানের ওপর চাপ অব্যাহত রাখার জন্য আমেরিকা পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গেলেও অন্য বৃহৎ শক্তিগুলো এ সমঝোতা টিকিয়ে রাখার পক্ষে মত দিয়েছে। যেসব দেশ ইরানকে সহযোগিতা করতে চায় তাদের ওপর আমেরিকার চাপ সৃষ্টির চেষ্টার সমালোচনা করেছে রাশিয়া। #
পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/৬
- খবরসহ আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সব লেখা ফেসবুকে পেতে এখানে ক্লিক করুন এবং নোটিফিকেশনের জন্য লাইক দিন