ইসরাইল আমেরিকার কৌশল বাস্তবায়ন করছে: ফিলিস্তিনি লেখক
-
ইসরাইল আমেরিকার কৌশল বাস্তবায়ন করছে: ফিলিস্তিনি লেখক
পার্সটুডে-একজন ফিলিস্তিনি বিশ্লেষক হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন যে, ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে যদি বাস্তব এবং কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া না হয়, তাহলে পশ্চিম এশীয় অঞ্চলের অন্যান্য দেশের সাথে ইহুদিবাদী ইসরাইলের সামরিক পদক্ষেপের আশঙ্কা থেকে যায়।
আল জাজিরার উদ্ধৃতি দিয়ে ফার্সটুডে জানিয়েছে, ফিলিস্তিনি লেখক এবং সাংবাদিক সাইফুদ্দিন মুয়াদ সতর্ক করে বলেছেন, গাজায় ইসরাইলি অপরাধের বিরুদ্ধে যদি বাস্তব পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে পরবর্তী পর্যায়ে ইরাক, সিরিয়া, মিশরে সামরিক ও বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন এবং এমনকি তুরস্কের জন্যও হুমকি সৃষ্টি হতে পারে। মুয়াদ বলেন, ক্যাম্প ডেভিডের পর থেকে, ইহুদিবাদী ইসরাইলের মৌলিক বাস্তবতা পরিবর্তিত হয় নি। তিনি বলেন: আরব দেশগুলোর প্রধানরা ভালোভাবেই জানেন যে তেল আবিব "শান্তির জন্য ভূমি" নীতিতে কাজ করে না এবং "দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান"কে অঙ্গিকার স্থগিত করার লক্ষ্যে প্রচারণার হাতিয়ার ছাড়া অন্য কোনোভাবে দেখে নি।
তিনি আরও বলেন: “তবে, আরব সরকারী ব্যবস্থার একটি বৃহৎ অংশ এখনও মৌখিক আশ্বাস, আমেরিকার মধ্যস্থতা এবং রেডলাইনের ওপর নির্ভর করে কার্যত যার অস্তিত্ব নেই। অতএব, আমরা ধীরে ধীরে শর্তাধীন শান্তি থেকে নিঃশর্ত শান্তিতে এবং তারপরে এমন একটি শান্তিতে চলে এসেছি পরোক্ষভাবে যা ক্ষমতার কাছে আত্মসমর্পণ বোঝায়।”
ফিলিস্তিনি এই বিশ্লেষক জোর দিয়ে বলেন: “ইসরাইল আজ কেবল একটি স্বাধীন অভিনেতা নয়, বরং আমেরিকান কৌশল বাস্তবায়নকারী একটি পক্ষ, যার লক্ষ্য পশ্চিম এশিয়ায় আধিপত্য বিস্তার করা এবং বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগীদের নিয়ন্ত্রণ করা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তেল ও গ্যাস সম্পদ এবং সমুদ্র পথে তার হাত বাড়াতে চায়। এই প্রেক্ষাপটে, ইসরাইল হল স্থলভাগে স্থির সেই বিমানবাহী রণতরী; যা কেবলই একটি চাপ প্রয়োগের হাতিয়ার।ওয়াশিংটন যখনই কোনও দেশের আচরণ পরিবর্তন করতে বা সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে চায় তখনই ওই হাতিয়ার ব্যবহার করে।”
লেখক আরও উল্লেখ করেন: “ইসরাইলের মনে, বৃহৎ মধ্যপ্রাচ্যের মানচিত্র। তারা আশেপাশের দেশগুলোকে একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং উন্মুক্ত স্থান হিসাবে দেখে যা পরিস্থিতি অনুকূল হলেই পুনর্নির্মাণ করা যেতে পারে।” ইসরাইলের সম্প্রসারণবাদী দৃষ্টিভঙ্গি এখন আর বই কিংবা উপাসনালয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই বরং বাস্তব নীতিতে পরিণত হয়েছে।
মোয়েদ আরও বলেন: আজ গাজায় গণহত্যা হিসেবে যা ঘটছে তা একটি স্পষ্ট উদাহরণ: হত্যা ধীরে ধীরে একটি প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় পরিণত হয়েছে, বাস্তুচ্যুতি একটি লজিস্টিক পছন্দ এবং ইসরাইলের মাধ্যমে অবরোধ ও দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি পদ্ধতিগত চাপের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। পশ্চিম তীরে, ইহুদিবাদীদের দ্বারা জমি দখল, সংযুক্তি এবং ইহুদিকরণের প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। সিরিয়া এবং লেবাননে, ধারাবাহিক হামলার মাধ্যমে শাসকগোষ্ঠীর ব্ল্যাকমেইল নীতিও বাস্তবায়িত হচ্ছে।
এই আরব বিশ্লেষক, পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলোকে ইসরাইলের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়ে বলেন, পশ্চিম বা প্রাচ্যের ওপর নির্ভর করা নয় বরং এই অঞ্চলে একটি স্বাধীন ঐতিহাসিক-রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামরিক ব্লক গঠন করাই উপায়।
ফিলিস্তিনি লেখক এবং সাংবাদিক সাইফুদ্দিন মুয়াদ শেষে যোগ করেন: সবচেয়ে খারাপ ঐতিহাসিক পরিণতি এমন একটি জাতির ওপর পড়বে যারা জানত তবু কাজ করে নি এবং পরীক্ষার সময়ে সবচেয়ে সত্য বক্তব্য হল এমন একটি জাতি যারা তার জ্ঞানকে সিদ্ধান্ত, ইচ্ছাশক্তি এবং ব্যবহারিক পদক্ষেপে রূপান্তরিত করে এবং বলে: আমরা অবশেষে ক্ষয়ের দেয়ালে আঘাত করতে শুরু করেছি।#
পার্সটুডে/এনএম/২৪
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।