রুহানি-ট্রাম্প আলোচনার ব্যাপারে তেহরানের অবস্থান স্পষ্ট করলেন জারিফ
(last modified Mon, 30 Sep 2019 11:42:42 GMT )
সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৯ ১৭:৪২ Asia/Dhaka
  • রুহানি-ট্রাম্প আলোচনার ব্যাপারে তেহরানের অবস্থান স্পষ্ট করলেন জারিফ

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বছর ৮মে পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর ইরানের বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও গত কয়েক মাস ধরে তিনি ইরানের সঙ্গে আলোচনায় বসার জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন। এমনকি ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরনের ব্যাপক প্রচেষ্টার পর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বৈঠকের অবকাশে ইরান ও মার্কিন প্রেসিডেন্টদের মধ্যে সাক্ষাতের সম্ভাবনার কথাও উঠেছিলে।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাওয়াদ জারিফ ট্রাম্প-রুহানি বৈঠকের প্রস্তাবের ব্যাপারে তেহরানের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। তিনি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আলোচনায় আগ্রহ প্রকাশ করে দাবি করেছেন, "আলোচনার পর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হতে পারে। কিন্তু আমাদের দাবি হচ্ছে, সাক্ষাতের আগে অবশ্যই ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিত হবে।" জাওয়াদ জারিফ আরো বলেন, "আমাদের অর্থনৈতিক ভবিষ্যত কেবল আমেরিকার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে লোক দেখানো সাক্ষাতের ওপর নির্ভরশীল করে রাখতে পারি না যে কিনা কোনো আন্তর্জাতিক চুক্তি মানে না এবং পরমাণু সমঝোতা থেকেও বেরিয়ে গেছে।"

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ বক্তব্য থেকে বোঝা যায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যতই ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেন না কেন নিষেধাজ্ঞা তুলে না নেয়া পর্যন্ত তেহরান এ ধরণের সংলাপে যাবে না। তেহরান মনে করে এ ধরণের আলোচনা হতে হবে ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে ইরানের সাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতার আলোকে।

বাস্তবতা হচ্ছে, কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একের পর এক ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। তিনি ব্যাপক প্রচার চালিয়েও উত্তর কোরিয়া ও ভেনিজুয়েলার সঙ্গে সমস্যার কোনো সমাধান করতে পারেননি। এখন তিনি আগামী বছর আমেরিকায় অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে জনসমর্থন লাভের লক্ষ্যে ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে লোক দেখানো সাক্ষাতে মিলিত হওয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন।

তবে, ইরানের কর্মকর্তারাও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দুরভিসন্ধির ব্যাপারে সচেতন এবং তারা যেকোনো সংলাপের আগে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার দাবি জানিয়েছেন। এ কারণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়টিকে তার নির্বাচনী স্বার্থে কাজে লাগাতে পারেননি। তবে, তেহরান ওয়াশিংটনের আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এখন ভাব দেখানোর চেষ্টা করছেন যে তিনিই আলোচনা চান না। এমনকি ট্রাম্প এও দাবি করেছেন, তিনি নন বরং ইউরোপীয় নেতারাই রুহানির সঙ্গে তার সাক্ষাতের জন্য পীড়াপীড়ি করেছিলেন। অথচ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এর আগে বহুবার ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতে মিলিত হওয়ার জন্য ব্যাপক আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন।

এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, ট্রাম্পের এ দ্বিমুখী নীতি ইরানের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। ইরান বারবার দাবি করছে আলোচনার আগে অবশ্যই মার্কিন নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে। ইউরোপীয়রা ইরান বিরোধী নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পক্ষে অবস্থান নিলেও বাস্তবে তারা কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। #

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/৩০