ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের বিরুদ্ধে একজোট হচ্ছে আমেরিকা ও ইউরোপের তিনটি দেশ
https://parstoday.ir/bn/news/iran-i75701-ইরানের_ক্ষেপণাস্ত্রের_বিরুদ্ধে_একজোট_হচ্ছে_আমেরিকা_ও_ইউরোপের_তিনটি_দেশ
ইউরোপ ইরানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতার প্রতি সমর্থন জানালেও ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি এখন ক্ষেপণাস্ত্র ইস্যুতে ইরানের বিরুদ্ধে হুমকি দিচ্ছে। ইউরোপের প্রভাবশালী এই তিনটি দেশ আমেরিকার সঙ্গে জোট বেধে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।
(last modified 2025-07-29T12:16:04+00:00 )
ডিসেম্বর ০৫, ২০১৯ ১৬:৪৯ Asia/Dhaka
  • ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র
    ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র

ইউরোপ ইরানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতার প্রতি সমর্থন জানালেও ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি এখন ক্ষেপণাস্ত্র ইস্যুতে ইরানের বিরুদ্ধে হুমকি দিচ্ছে। ইউরোপের প্রভাবশালী এই তিনটি দেশ আমেরিকার সঙ্গে জোট বেধে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।

আমেরিকার সঙ্গে সুর মিলিয়ে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি গতকাল (বুধবার) জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্থেনিও গুতেরেসের কাছে লেখা চিঠিতে দাবি করেছে ইরানের কিছু কিছু ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি এই সংস্থার নিরাপত্তা পরিষদের ২২৩১ নম্বর প্রস্তাবের লঙ্ঘন। ওই চিঠিতে তারা জাতিসংঘের পরবর্তী প্রতিবেদনে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি যে এই সংস্থার ২২৩১ নম্বর প্রস্তাবের লঙ্ঘন সে বিষয়টি উল্লেখ করার জন্য গুতেরেসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। ইউরোপের এ তিনটি দেশ এর আগেও এ ধরনের আবদার জানিয়েছিল। কিন্তু ইরানের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের সঙ্গে নিরাপত্তা পরিষদের ২২৩১ নম্বর প্রস্তাবের কোনো সম্পর্ক না থাকায় এ ইস্যুতে তারা ইরানের বিরুদ্ধে কোনো প্রস্তাব পাশ করতে পারেনি।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাওয়াদ জারিফ বলেছেন, "যারা পরমাণু সমঝোতার বিভিন্ন ধারার সঙ্গে পরিচিতি তারা জানেন ইরানের কৃত্রিম উপগ্রহবাহী রকেট উৎক্ষেপ ব্যবস্থা এবং ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা জাতিসংঘের ২২৩১ নম্বর প্রস্তাবের লঙ্ঘন নয়।" এই প্রস্তাবে কেবলমাত্র পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে উল্লেখ করে জারিফ আরো বলেন, ইরানের পরমাণু অস্ত্রের কোনো কর্মসূচি নেই। জারিফের এ বক্তব্য আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা বা আইএইএ'র প্রতিবেদনেও বহুবার  উল্লেখ করা হয়েছে।

মোহাম্মদ জাওয়াদ জারিফ

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, আমেরিকা ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা সবসময়ই প্রযুক্তির ওপর একক আধিপত্য বজায় রাখার চেষ্টা করে আসছে এবং তারা দাবি করছে ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা নিরাপত্তা পরিষদের ২২৩১ নম্বর প্রস্তাবের লঙ্ঘন। অথচ ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির লক্ষ্য কেবলই আত্মরক্ষা। আসলে আমেরিকা ও ইউরোপের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে গত বছর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও'র  উত্থাপিত ১২ দফা প্রস্তাব মেনে নিতে ইরানকে বাধ্য করা যেখানে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি বন্ধেরও আহ্বান জানানো হয়েছে।

ট্রাম্প ও পম্পেও'র মতো  মার্কিন পদস্থ কর্মকর্তারা ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাতে বহুবার ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি বন্ধের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। অথচ ইরান বারবার বলে আসছে ক্ষেপণাস্ত্রের উদ্দেশ্য কেবল আত্মরক্ষামূলক এবং এটা তাদের অধিকার। তবে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ও চাপ সত্বেও ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি উন্নয়ন অব্যাহত রয়েছে।

আমেরিকা ইরানের শান্তিপূর্ণ পরমাণু তৎপরতাকে ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির সঙ্গে গুলিয়ে ফেলার চেষ্টা করছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি জানিয়েছেন, ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ এবং ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি বন্ধ করা হলেই কেবল পরমাণু সমঝোতা বিষয়ক আলোচনায় ফিরে আসবেন তিনি। তিনি আরো দাবি করেছেন, পরমাণু সমঝোতা ইরানের পরমাণু তৎপরতাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি।

যাইহোক, বর্তমানে ব্রিটেন, জার্মানি ও ফ্রান্স পরমাণু সমঝোতাকে বাঁচিয়ে রাখার পরিবর্তে উল্টো ইরানের ওপর চাপ সৃষ্টির মাধ্যমে তেহরানকে পরমাণু সমঝোতা মেনে চলতে বাধ্য করার চেষ্টা করছে এবং ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিকে অজুহাত করে তারা আমেরিকার সঙ্গে মিলিয়েছে। #   

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/৫