জাতিসংঘের ২২৩১ নম্বর প্রস্তাব নিয়ে
ইরানের পক্ষে এবং আমেরিকার বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেন জাতিসংঘ মহাসচিব
-
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পরমাণু সমঝোতার সমালোচনা করে বহুবার একে আমেরিকার জন্য সবচেয়ে খারাপ চুক্তি হিসেবে অভিহিত করেছেন। শেষ পর্যন্ত গত বছর ৮মে এই সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গিয়ে আমেরিকা জাতিসংঘের ২২৩১ নম্বর প্রস্তাব লঙ্ঘন করে ইরানের ওপর ফের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস গতকাল (বুধবার) ২২৩১ নম্বর প্রস্তাব নিয়ে নিজের প্রতিবেদন তুলে ধরতে গিয়ে বলেছেন, ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ২২৩১ নম্বর প্রস্তাব লঙ্ঘন করেছে আমেরিকা। পরমাণু সমঝোতা থেকে আমেরিকার বেরিয়ে যাওয়ার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, নিরাপত্তা পরিষদের ২২৩১ নম্বর প্রস্তাব অনুযায়ী সব দেশ ইরানের সঙ্গে অবাধে ব্যবসা করতে পারবে। তিনি বলেন, আমেরিকার পক্ষ থেকে ব্যাপক চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করা সত্ত্বেও ইরান পরমাণু সমঝোতায় অটল রয়েছে। বিষয়টিকে তিনি সন্তোষজনক বলে মন্তব্য করেন।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, জাতিসংঘ মহাসচিবের পক্ষ থেকে আমেরিকার এ পদক্ষেপকে বেআইনি অভিহিত করা থেকে বোঝা যায়, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ও দেশগুলোর ওপর ব্যাপক চাপ প্রয়োগ করেও আমেরিকা আন্তর্জাতিক সমাজকে ইরানের বিরুদ্ধে দাঁড় করাতে পারেনি বরং ওয়াশিংটনের এসব পদক্ষেপ বেআইনি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। এমনকি মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার ইউরোপীয় মিত্রদেরকেও পরমাণু সমঝোতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার জন্য বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছেন। এ থেকে বোঝা যায়, আমেরিকার বিরুদ্ধে গিয়ে আন্তর্জাতিক বৃহৎশক্তিগুলো মনে করে পরমাণু সমঝোতা সবার জন্য কল্যাণকর। আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে তেহরান পরমাণু সমঝোতা পুরোপুরি মেনে চলছে।
কিন্তু আন্তর্জাতিক সমাজের প্রচণ্ড বিরোধিতা উপেক্ষা করে ট্রাম্প প্রশাসন ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের নীতি অবলম্বন করেছে। সর্বশেষ পদক্ষেপ হিসেবে মার্কিন অর্থমন্ত্রণালয় গতকাল বুধবার এক বিবৃতিতে একটি চক্র ইরানি অস্ত্র ইয়েমেনে সরবরাহ করছে দাবি করে ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার দায়ে একজন ব্যক্তিকে, পাঁচটি সংস্থা এবং দুটি জাহাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা জানিয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও আবারো বলেছেন, ইরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের নীতি অব্যাহত থাকবে।
এদিকে ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টির নীতির উদ্দেশ্য হচ্ছে তেহরানের সঙ্গে নতুন করে সমঝোতায় পৌঁছা যেখানে আরো বহু বিষয় স্থাপন পাবে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও বহুবার বলেছেন, ইরানের ওপর নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার মাধ্যমে দেশটিকে ওয়াশিংটনের ইচ্ছার কাছে নতি স্বীকারে বাধ্য করা হবে। তবে মার্কিন কর্মকর্তাদের এসব পদক্ষেপ সত্বেও ইরান বহুবার বলেছে তারা মার্কিন চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না।#
পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১২