মার্কিন নিষেধাজ্ঞা মানবতা বিরোধী অপরাধ ও অর্থনৈতিক সন্ত্রাসবাদ: মুসাভি
-
সাইয়্যেদ আব্বাস মুসাভি
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাইয়্যেদ আব্বাস মুসাভি তার দেশের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে মানবতা বিরোধী অপরাধ এবং অর্থনৈতিক সন্ত্রাসবাদ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
তিনি এক সংবাদ সম্মেলনে এর আগে ইরানে খাদ্য ও ওষুধের ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল না বলে মার্কিন দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, "ইরানের বিভিন্ন কোম্পানি খাদ্য কিংবা ওষুধ সংগ্রহের চেষ্টা করলেও ব্যাংকিং নিষেধাজ্ঞার কারণে তা ব্যহত হচ্ছে।" তিনি বলেন' "মার্কিন নিষেধাজ্ঞা মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক সকল আইনের লঙ্ঘন।"
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, প্রথম থেকেই বোঝা যাচ্ছিল ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন কঠোর নিষেধাজ্ঞার উদ্দেশ্য হচ্ছে ওয়াশিংটনের অন্যায় আবদার ও স্বেচ্ছাচারী নীতির কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করা। অথচ নিষেধাজ্ঞা এমন একটি বিষয় যা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ৪১ নম্বর ধারা অনুযায়ী বিশেষ কিছু কারণে কোনো একটি দেশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আমেরিকা যে নিষেধাজ্ঞার কথা বলছে তা কোনো নিয়ম বা সংজ্ঞার ভিতর পড়ে না। আমেরিকা যে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দেয় তারও কোনো ব্যাখ্যা নেই এবং তা আন্তর্জাতিক রীতিনীতির লঙ্ঘন।
ইরানের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রেজা ফারাহমান্দ বলেছেন, "মানবাধিকারের যে নীতি তাতে মার্কিন একতরফা নিষেধাজ্ঞার কারণে একটি দেশে জনগণের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়। ইরানের বিরুদ্ধেও আমেরিকা যে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে তা মানবাধিকারের মারাত্মক লঙ্ঘন।" গত বছর জুনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুমকি দিয়েছিলেন, "নিষেধাজ্ঞা যে কত শক্তিশালী তা সবাই দেখতে পাবে যখন ইরানের বিরুদ্ধে তা বাস্তবায়ন করা হবে।"
বর্তমানে আমেরিকা ইরানের বিরুদ্ধে বেআইনি অর্থনৈতিক সন্ত্রাসবাদে লিপ্ত। আমেরিকা এমন এক সন্ত্রাসী রাষ্ট্র যার কর্মকাণ্ডের প্রভাবে আফগানিস্তান, ইরাক, জাপান ও ভিয়েতনামে এ পর্যন্ত লাখ লাখ মানুষ নিহত হয়েছে। আমেরিকা অত্যন্ত ঔধ্যত্যের সাথে মধ্যপ্রাচ্যে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি ও সন্ত্রাসীদের প্রতি সমর্থনের জন্য ইরানকে অভিযুক্ত করে আসছে। অথচ তারাই মিথ্যা অভিযোগে পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গিয়ে ইরানের বিরুদ্ধে অন্যায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যা আন্তর্জাতিক আইন এবং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নীতিমালার লঙ্ঘন।
ভিয়েনায় ইরানের প্রতিনিধি কাজেম গারিবাবাদি জাতিসংঘ মহাসচিব এবং ভিয়েনায় অবস্থিত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের কাছে লেখা চিঠিতে বলেছেন, বিশ্বে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে পরাশক্তি হওয়ার সুবাদে কোনো একটি স্বাধীন দেশের বিরুদ্ধে চাপ সৃষ্টির পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন কেননা এ আচরণ নাগরিকদের অধিকার পদদলিত করে।#
পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১৫