মার্কিন সামরিক উপস্থিতির সুযোগ দিলে তা হবে কৌশলগত বড় ভুল: ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী
(last modified Sat, 30 May 2020 11:12:32 GMT )
মে ৩০, ২০২০ ১৭:১২ Asia/Dhaka

পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চল যদি নিরাপদ থাকে তাহলে এ অঞ্চলের সব দেশই নিরাপদে থাকবে। ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির হাতামি দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দর আব্বাসে জাহাজ বিধ্বংসী জাহাজ, মাইন অপসারণকারী জাহাজ ও অন্যান্য যুদ্ধসামগ্রী হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বলেছেন, পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলোই এ অঞ্চলের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব নিতে পারে এবং এ অঞ্চলের দেশগুলো মার্কিন সামরিক উপস্থিতির সুযোগ দিলে তা হবে কৌশলগত বড় ভুল।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইরান চায় এ অঞ্চলের দেশগুলোই আঞ্চলিক নিরাপত্তার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিক। তেহরান মনে করে যেকোনো নিরাপত্তাহীনতা এ অঞ্চলের সব দেশের জন্যই ক্ষতি বয়ে আনবে। পারস্য উপসাগরের নিরাপত্তা এজন্যই  গুরুত্বপূর্ণ। এ অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ইরানের নীতিকে দুটি দিক থেকে মূল্যায়ন করা যায়। প্রথমত, ইরান মনে করে এ দেশগুলো ও সমুদ্রের নিরাপত্তার বিরুদ্ধে সরাসরি হুমকি মোকাবেলায় সঠিক নীতি গ্রহণ ও কর্মপরিকল্পনার প্রয়োজন। দ্বিতীয়ত, এ অঞ্চলের দেশগুলোকে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে। এই দুইএর সমন্বয়ে গৃহীত পদক্ষেপ শুধু পারস্য উপসাগর নয় বরং সারা বিশ্বের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

পারস্য উপসাগরীয় এলাকায় নিরাপত্তাহীনতা, সন্ত্রাসবাদ ও যুদ্ধের হুমকির কারণে ইরান সবসময়ই সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলে আসছে এবং একটি দেশ অপর দেশের ওপর আধিপত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টার বিরোধিতা করে আসছে। ইরানের নৌবাহিনী এ অঞ্চলের যেকোনো হুমকি মোকাবেলায় পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে। ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী আইআরজিসি'র প্রধান মেজর জেনারেল হোসেন সালামি বন্দর আব্বাসের ওই একই অনুষ্ঠানে বহুদূর পর্যন্ত ইরানের প্রতিরক্ষা এলাকার সীমা বাড়ানোর কথা উল্লেখ করেছেন যাতে নিজের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও সমুদ্রে নিরাপত্তা বজায়  রাখা যায় এবং শত্রুরা আমাদের নিরাপত্তা বলয়ের আশেপাশে ভিড়তে না পারে।

ভারত মহাসাগরের চারটি গুরুত্বপূর্ণ রুটে ইরানের নৌবাহিনীর অবস্থান এবং আটলান্টিক মহাসাগরেও ইরানের উপস্থিতি থেকে সমুদ্রে নিরাপত্তা রক্ষায় ইরানের শক্তিশালী অবস্থানের বিষয়টি ফুটে ওঠে। সমুদ্রে ইরানের এই  উপস্থিতির  উদ্দেশ্য সম্ভাব্য যেকোনো যুদ্ধ বা সংঘাত ঠেকানো।

গত ১০০ বছরের ইতিহাস লক্ষ্য করলে দেখা যাবে বিদেশিরা সবসময়ই পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করেছে। এখন তারা ইরানভীতি সৃষ্টি করে এবং দ্বন্দ্ব-সংঘাত বাধিয়ে এ অঞ্চলের দেশগুলোর কাছে কোটি কোটি ডলার মূল্যের  অস্ত্র বিক্রি করে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। ইরান কখনোই কোনো যুদ্ধ শুরু করেনি। কিন্তু দেশটি যদি আগ্রাসনের শিকার হয় তাহলে ইরান কোনো ছাড় দেবে না।#  

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/৩০