মার্কিন নয়া নিষেধাজ্ঞা: ইরানকে দুর্বল করার বৃথা চেষ্টা
(last modified Fri, 26 Jun 2020 12:23:54 GMT )
জুন ২৬, ২০২০ ১৮:২৩ Asia/Dhaka

ট্রাম্প সরকার তাদের অবৈধ ও বেআইনি ইচ্ছার কাছে ইরানকে নত করার জন্য সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের যে নীতি গ্রহণ করেছে ওই নীতি তারা বাস্তবায়ন করে এসেছে ২০১৮ সালের মে মাসে পরমাণু সমঝোতা থেকে একতরফাভাবে বেরিয়ে যাবার পর থেকে।

তথাকথিত ওই চাপ প্রয়োগের নীতি ব্যর্থ হওয়া সত্ত্বেও নিষেধাজ্ঞা আরও বেশি বাড়িয়ে দিয়েছে আমেরিকা। তারই অংশ হিসেবে গতকাল ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরও একবার আরোপ করলো দেশটি। এবারের নিষেধাজ্ঞা আটটি কোম্পানির বিরুদ্ধে আরোপ করেছে। এই কোম্পানিগুলো স্টিল এবং ধাতব শিল্পকেন্দ্রিক। সিরজান ওয়ার্ল্ড স্টিল কোম্পানি, ইরানের সেন্ট্রাল আয়রন-স্টোন কোম্পানি, মাতিল স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজসহ আরও কয়েকটি কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এসেছে: ইরানের ধাতব শিল্প বিভাগে তৎপর চারটি আয়রন, স্টিল এবং অ্যালুমিনিয়াম কোম্পানির বিরুদ্ধে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এগুলোর মধ্যে মোবারাকে স্টিল কোম্পানির একটি সহযোগী কোম্পানি রয়েছে হংকংয়ে। একইভাবে আরব আমিরাতে মোবারাকে স্টিল কোম্পানির তিনটি বিক্রয়-অ্যাজেন্সি এবং জার্মানিতে একটি অ্যাজেন্সির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। মোবারাকে স্টিল কোম্পানিটির ওপর ২০১৮ সালেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। ইস্ফাহানের এই কোম্পানিটি পশ্চিম এশিয়া এবং উত্তর আফ্রিকার মধ্যে সবচেয়ে বড়।

ওয়াশিংটন দাবি করছে তেহরান এইসব ধাতব উৎপাদন এবং  দেশে –বিদেশে তাদের অ্যাজেন্টদের মাধ্যমে বিক্রয়লব্ধ আয় বিশ্বব্যাপী অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিতে তাদের বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজে লাগায়। আমেরিকার অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মুচিন নয়া এই নিষেধাজ্ঞার সমর্থনে এ মন্তব্য করেন। সে কারণেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তিগুলোকে কোনঠাসা করে সেগুলো থেকে উপার্জিত অর্থ ইরানের জনগণের কল্যাণে কাজে লাগাতে বদ্ধপরিকর। মজার ব্যাপার হলো ইরানি জাতির ওপর ইতিহাসের ভয়াবহতম চাপ সৃষ্টি করে আমেরিকা ইরানি জনগণের কল্যাণের কথা বলছে। ট্রাম্প সরকার ভাবছে চাপ প্রয়োগের কৌশলের ফলে ইরানে দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে এবং জনগণ বিদ্রোহ করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করবে।

সুতরাং ওয়াশিংটনের দাবি হলো এভাবে চাপ দিতে থাকলে ২০১৮ সালে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর দেওয়া ১৮ দফা দাবির কাছে ইরান মাথানত করতে বাধ্য হবে। ট্রাম্পও মনে করছে সর্বোচ্চ চাপের ফলে ইরান আলোচনার টেবিলে বসতে বাধ্য হবে এবং 'উৎকৃষ্টতর সমঝোতা'য় উপনীত হবে। আমেরিকা এরিমাঝে দাবিও করেছে যে চাপের ফলে ইরানের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙে দিতে সক্ষম হয়েছে তারা।

অথচ বাস্তবতা হলো ট্রাম্পের ওই সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের নীতি চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। চলতি বছরের নভেম্বরে আমেরিকায় অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রাক্কালে সেদেশেরই বিভিন্ন গোষ্ঠি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় তুলেছে। তারা বলছে ইরানের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের সুস্পষ্ট কোনো পরিকল্পনাই নেই। কঠোরতা আরোপের ভুল নীতির কারণে বরং আমেরিকা বিশ্বব্যাপী মিত্র হারাতে বসেছে।#

পার্সটুডে/এনএম/২৬

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

ট্যাগ