ইরানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে ট্রাম্পের অযাচিত হস্তক্ষেপ
(last modified Thu, 16 Jul 2020 12:45:51 GMT )
জুলাই ১৬, ২০২০ ১৮:৪৫ Asia/Dhaka

ইরানের ইসলামি বিপ্লব বিজয়ের পর থেকেই আমেরিকা নিরবচ্ছিন্নভাবে ইরানের বিরুদ্ধে শত্রুতামূলক এবং নেতিবাচক আচরণ করেই যাচ্ছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরান বিরোধী শত্রুতাকে নজিরবিহীনভাবে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে গেছে। ট্রাম্প কেবল ইরানের জনগণই নয় বরং নিজ দেশের জনগণের বিরুদ্ধেও শত্রুতায় নেমেছে। ট্রাম্প এখন মানবিকতার দোহাই দিয়ে সম্পূর্ণ অযাচিতভাবে ইরানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে প্রকাশ্যে হস্তক্ষেপ করে যাচ্ছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়ায় ইরানের বিপ্লব বিরোধী গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ইরানের সশস্ত্র ডাকাতদের সম্ভাব্য ফাঁসির ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গতকাল তার ব্যক্তিগত ট্যুইটে ইংরেজি এবং ফার্সি ভাষায় পোস্ট দিয়েছেন। ওই পোস্টে তিনি চেষ্টা করেছেন ডাকাতদের ফাঁসির ঘটনাকে ২০১৯ সালের নভেম্বরের বিক্ষোভের সঙ্গে জড়িয়ে ফেলতে। ট্রাম্প লিখেছেন: বিক্ষোভে অংশ নেয়ার অপরাধে ইরানে তিন জনের বিরুদ্ধে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়েছে। যে-কোনো মুহূর্তেই তাদের ফাঁসি হয়ে যেতে পারে। এই তিনজনের মৃত্যুদণ্ড বিশ্বকে একটি শোচনীয় বার্তা প্রেরণ করে এবং এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা উচিত নয়।" এরপর হ্যাশ-ট্যাগ দিয়ে লিখেছেন "ফাঁসি দেবেন না"।

ট্রাম্প এমন সময় এই তিন ফাঁসির আসামির পক্ষ সমর্থনের কথা বলছেন যখন তিনি ইরানের জনগণের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ পর্যায়ের শত্রুতায় নেমেছেন। গত দু'বছর ধরে ইরানি জাতির বিরুদ্ধে তিনি এবং তাঁর সরকার কঠোরতম নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করেছে। এমনকি কোভিড-১৯ এবং করোনা মহামারির মধ্যেও ওই অন্যায় ও অমানবিক নিষেধাজ্ঞা হ্রাস তো করেনই নি বরং এই ইস্যুটিকে ইরানের বিরুদ্ধে কঠোরতা বৃদ্ধির হাতিয়ার হিসেবে কাজে লাগিয়েছেন। আর এখন তিনি ইরানের তিন আসামির ফাঁসির আদেশের ঘটনায় মেকি দরদ দেখিয়ে এ বিষয়টিকে রাজনৈতিক রঙ দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

চলতি বছরের শুরুর দিকেও ইউক্রেনিয় বিমান দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তেহরানে অনুষ্ঠিত কয়েকটি জনসমাবেশের প্রতিক্রিয়ায়  ট্রাম্প ফার্সি ভাষায় ট্যুইট বার্তা লিখেছেন। বলেছেন: আমি প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেয়ার শুরু থেকেই তোমাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। আমার সরকার সবসময় তোমাদের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। আমরা তোমাদের প্রতিবাদ বিক্ষোভ ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং তোমাদের সাহসিকতায় আমরা অনুপ্রাণিত। ট্রাম্প যে-কোনো সুযোগেই ইরানের জনগণের প্রতি সহমর্মিতা দেখাচ্ছেন। এই ট্রাম্পই আবার ইরানি জনগণের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছেন। এ থেকে বিশ্লেষকগণ মনে করছেন এই সহমর্মিতা প্রকাশ দুরভিসন্ধিমূলক এবং সুযোগের সদ্ব্যবহার ছাড়া আর কিছু নয়।

উল্লেখ্য যে বড় ধরনের অপরাধের কারণে ইরানের আদালতের দেওয়া রায় সম্পর্কে বিচার বিভাগীয় মানবাধিকার দফতর থেকে বলা হয়েছে: ওই দুই ব্যক্তির ফাঁসির আদেশের সঙ্গে নভেম্বর ২০১৯ এর বিক্ষোভের কোনো সম্পর্ক নেই। অপরাধের শাস্তি এবং জননিরাপত্তার হুমকির কারণেই ওই রায় দেওয়া হয়েছে। সুতরাং ইরানি জনগণের জন্য মায়াকান্না না কেটে ট্রাম্পের উচিত নিজ দেশের কৃষ্ণাঙ্গদের বিনা কারণে হত্যার ব্যাপারে মনোনিবেশ করা।#

পার্সটুডে/এনএম/১৬

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।