ওমান ও ইরানের যৌথ পরামর্শ কমিটি বৈঠক: দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বিষয় গুরুত্ব পেয়েছে
(last modified Tue, 15 Dec 2020 13:05:56 GMT )
ডিসেম্বর ১৫, ২০২০ ১৯:০৫ Asia/Dhaka

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান সবসময়ই পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে এসেছে। এরই অংশ হিসেবে ওমানের রাজধানী মাস্কাটে ইরানের উপপররাষ্ট্র মন্ত্রী সাইয়্যেদ আব্বাস আরাকচি ও ওমানের উপপররাষ্ট্র মন্ত্রী খলিফা বিন আলী আল হারেসির উপস্থিতিতে দুদেশের ৭০ তম পরামর্শ কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এ বৈঠকে বিভিন্ন ইস্যুতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার, আঞ্চলিক নানা বিষয়ে মতবিনিময় এবং আলোচনার মাধ্যমে বিরাজমান বিভিন্ন মতপার্থক্য নিরসনের বিষয়টি গুরুত্ব পায়। অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে কেবলমাত্র এ অঞ্চলের দেশগুলোর পারস্পরিক সহযোগিতা বজায় রাখার মধ্যে সবার কল্যাণ নিহিত রয়েছে। কারণ এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে শত্রুতা, বিতর্ক ও উত্তেজনা জিইয়ে থাকলে বিজাতীয়দের হস্তক্ষেপের  সুযোগ তৈরি হবে। গত চার বছর ধরে মার্কিন সরকার ইরানকে হুমকি হিসেবে তুলে ধরে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে কোটি কোটি ডলার মূল্যের অস্ত্র বিক্রি করেছে। তারা এ অঞ্চলের ভ্রাতৃপ্রতিম মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে বিভেদ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে দিয়ে নিজেদের অবৈধ স্বার্থ হাসিল করার চেষ্টা করছে।

এসব থেকে বোঝা যায় পশ্চিম এশিয়ো অঞ্চলে উত্তেজনা জিইয়ে রাখা এবং মার্কিন সামরিক উপস্থিতির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে যাতে নিরাপত্তা ক্ষেত্রে সহযোগিতা গড়ে না ওঠে এবং এ দেশগুলোকে মার্কিন সামরিক শক্তির ওপর নির্ভরশীল করে রাখা যায়। কিন্তু দুঃখজনকভাবে কয়েকটি দেশ সন্ত্রাসীদেরকে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়ার মাধ্যমে এ অঞ্চলকে নিরাপত্তাহীনতা, অস্থিতিশীলতা, উগ্রতা ও যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়েছে। ইরানের সাবেক কূটনীতিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক কাসেম মাহাবআলী ইরানের বিরুদ্ধে আরব ও ইসরাইলের জোট গঠনের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, 'সৌদি আরব, ইসরাইল ও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর মতো দেশটির আরো অন্যান্য কর্মকর্তারা পশ্চিম এশিয়ায় যুদ্ধ ও উত্তেজনা সৃষ্টির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ অঞ্চলের কিছু আরব দেশ এখন এ কারণে চিন্তিত যে আমেরিকার নতুন সরকার পরমাণু সমঝোতায় ফিরে এসে ইরানের সঙ্গে নতুন কোনো সমঝোতায় উপনীত হতে পারে।' তিনি বলেন 'ইরান বিরোধী এ জোট পরমাণু সমঝোতা ধ্বংস করার পাশাপাশি এ অঞ্চলে উত্তেজনা জিইয়ে রাখার চেষ্টা করছে। কারণ এ অঞ্চল অস্থিতিশীল হয়ে উঠলে তাদেরই লাভ।'

এ অবস্থায় এ অঞ্চলে এমন এক পরিবর্তন দরকার যাতে আঞ্চলিক দেশগুলোর মধ্যে ঐক্য জোরদার হতে পারে। ইরান মনে করে এ অঞ্চলের দেশগুলোর পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমেই কেবল টেকসই উন্নয়ন ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা সম্ভব। ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি গতবছর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের দেয়া ভাষণে হরমুজ শান্তি পরিকল্পনা তুলে ধরে বলেছিলেন, ইরাকসহ পারস্য উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদভুক্ত আরব দেশগুলোর কাছে এ প্রস্তাবের বিষয়বস্তু পৌঁছে দেয়া হয়েছে। এ অঞ্চলের দেশগুলোকে নিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই ওই প্রস্তাবের লক্ষ্য।

যাইহোক, ওমানের রাজধানী মাস্কাটে ইরান ও ওমানের উপপররাষ্ট্র মন্ত্রীদের উপস্থিতিতে দুদেশের ৭০ তম পরামর্শ কমিটির যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে তা আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদারে ভূমিকা রাখবে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।# 

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১৫

ট্যাগ