করোনার মধ্যে মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় কঠিন সংকটে ইরানের স্বাস্থ্যখাত
(last modified Sat, 10 Apr 2021 10:48:54 GMT )
এপ্রিল ১০, ২০২১ ১৬:৪৮ Asia/Dhaka

অন্য দেশের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য একতরফা ও বেআইনি নিষেধাজ্ঞা মার্কিন পররাষ্ট্র নীতির অন্যতম হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারি পরিস্থিতিতেও মার্কিন নিষেধাজ্ঞা থেমে নেই বরং আগের চেয়ে আরো বেড়েছে।

বর্তমানে ইরানে করোনা মহামারির চতুর্থ ওয়েভ শুরু হয়েছে। করোনা মোকাবেলায় ইরান নিজস্ব উদ্যোগে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিলেও মার্কিন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, ভ্যাকসিনসহ অন্যান্য জরুরি ওষুধ আমদানিতে আমেরিকার বাধার কারণে ইরান কঠিন সংকটে পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের এ আচরণ সুস্থভাবে মানুষের বেচে থাকা, চিকিৎসার অধিকার, খাদ্য ও ওষুধ প্রাপ্তিতে বাধা দেয়াসহ মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। অথচ মানবাধিকার বিষয়ক নীতিমালায় এসব অধিকার মেনে চলার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। মানবাধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক ঘোষণা পত্রের ২৫ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, প্রতিটি মানুষেরই সুস্থভাবে বেঁচে থাকা, প্রয়োজনীয় জীবনোপকরণ ভোগের অধিকার বিশেষ করে খাদ্য, পোশাক, বাসস্থান, চিকিৎসা সেবা ও সামাজিক অন্যান্য সুবিধা পাওয়ার অধিকার রয়েছে। 

এ অবস্থায় ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকারের লঙ্ঘন। এ নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরান বাইরে থেকে জরুরি ওষুধ আমদানি করতে না পারায় চরম ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছে দেশটির জনগণ। এ কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নে নিযুক্ত ইরানের প্রতিনিধি বর্তমান করোনা মহামারির মধ্যেও মার্কিন বেআইনি একতরফা নিষেধাজ্ঞার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে গত বছর চিকিৎসার কাজে ব্যবহৃত অর্থ বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে পায়নি। এ ছাড়া নিজের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার জন্যও আইএমএফ'র কাছ থেকে ঋণ নিতে চাইলেও যুক্তরাষ্ট্র তাতে বাধা দিয়েছে।

মার্কিন কর্মকর্তারা যদিও দাবি করেছেন ওষুধ ও অন্যান্য চিকিৎসা সামগ্রীর ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে ব্যাংকিং নিষেধাজ্ঞা বজায় থাকার কারণে ইরান ওষুধসহ কোনো পণ্যই আনতে পারছে না। এর ফলে বহু ইরানির জীবন আজ বিপন্ন। ইরানের স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ রেজা জাফার কান্দি ইরানের  জনগণের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ধ্বংসাত্মক প্রভাবের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, স্বাস্থ্য খাতে নিষেধাজ্ঞা নেই বলে যুক্তরাষ্ট্র দাবি করলেও কোনো ওষুধ কোম্পানি ইরানের সঙ্গে লেনদেন করার সাহস পাচ্ছে না যার ফলে জনগণ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।

 বাস্তবতা হচ্ছে, করোনা পরিস্থিতিতেও ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন এবং তা জাতিগত শুদ্ধি অভিযানের দৃষ্টান্ত। ইউরোপীয় ইউনিয়নে ইরানের প্রতিনিধি তার দেশের জনগণের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ক্ষতিকর প্রভাবের ওপর একটি প্রতিবেদন তৈরির আহ্বান জানান। তিনি মানবাধিকারের ব্যাপারে পাশ্চাত্যের দ্বিমুখী নীতির কথা উল্লেখ করে বলেন, এমনকি যুদ্ধের সময়ও নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হয় যাতে শিশুসহ সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। #

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১০