ইরানের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ ও তুলে নেয়ার মার্কিন নয়া ফন্দির রহস্য
(last modified Fri, 11 Jun 2021 13:00:31 GMT )
জুন ১১, ২০২১ ১৯:০০ Asia/Dhaka

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় ইরানের আরও সাত ব্যক্তি ও চারটি কোম্পানি এবং একটি নৌযানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর কুদস্‌ ব্রিগেড এবং ইয়েমেনের জনপ্রিয় প্রতিরোধ আন্দোলন আনসারুল্লাহকে অর্থনৈতিক সহায়তা দেয়ার দায়ে এই পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়েছে মার্কিন অর্থ বিভাগ।  

মার্কিন নির্বাহী আদেশ –তেরো হাজার ২২৪ শীর্ষক আইনের আলোকে এই নতুন নিষেধাজ্ঞাগুলো আরোপ করা হয়েছে বলে দেশটির অর্থ-বিভাগ জানিয়েছে। কথিত এই আইনের দোহাই দিয়েই ওয়াশিংটন ২০০৭ সালে ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি'র কুদ্স্‌  ব্রিগেডের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। 

এ ছাড়াও মার্কিন অর্থ-বিভাগ ইরানের তিন জন সাবেক সরকারি কর্মকর্তা ও দুই কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে! ইরানের পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য বিক্রি ও সরবরাহের সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে ওই তিন ব্যক্তি এবং দুই কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল মার্কিন সরকার। এই ব্যক্তিরা ও কোম্পানিগুলোর কাজ বা চরিত্রে পরিবর্তন ঘটায় তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়েছে এবং ইরানের পরমাণু সমঝোতায় ফেরা সংক্রান্ত ভিয়েনার চলমান সাম্প্রতিক আলোচনার সঙ্গে এই পদক্ষেপের কোনো সম্পর্ক নেই বলে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে! 

বাস্তবতা হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেন সরকার ইরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের তথা নতুন নতুন নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দেয়ার ও পুরনো নিষেধাজ্ঞা বহাল বা পুনর্বহালের ট্রাম্পীয় নীতি বজায় রাখা সত্ত্বেও বিশ্ব-সমাজকে এটা দেখাতে চায় যে নিষেধাজ্ঞা-কবলিত ইরানের নানা খাত বা ব্যক্তির চরিত্র পরিবর্তনের আলোকে মার্কিন সরকারও নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে সদিচ্ছা দেখাচ্ছে!

আসলে বাইডেনের নেতৃত্বাধীন মার্কিন সরকার যে কৌশল প্রয়োগ করছে ইরানের ব্যাপারে তা হল একদিকে কয়েকটি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া ও অন্যদিকে আরও বেশি নতুন নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দেয়া। চরিত্র বদলে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে কোনো কোনো নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার কথা বলা বিশ্ব-সমাজের চোখে ধুলো দেয়ার চেষ্টা মাত্র। ইরানের ও তার মিত্রদের ব্যাপারে এবং গোটা পশ্চিম এশিয়ার ব্যাপারে মার্কিন নীতিতে আসলে কোনো পরিবর্তনই ঘটেনি।  

বাইডেন সরকার ক্ষমতায় আসার পর ইরানের ব্যাপারে সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের নীতিতে পরিবর্তন আনার দাবি করলেও বাস্তবে নানা অজুহাতে একই নীতি অব্যাহত রেখেছে এবং ট্রাম্পের আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো তুলে নেয়ার ব্যাপারে বিন্দুমাত্র ছাড় দিচ্ছে না। এমনকি ভিয়েনায় ইরানের পরমাণু সমঝোতা পুনরুজ্জীবনের আলোচনায়ও এ বিষয়ে কোনো ছাড় দিতে রাজি হয়নি মার্কিন সরকার! মার্কিন সরকার কেবল পরমাণু সম্পর্কিত নিষেধাজ্ঞাগুলো পর্যায়ক্রমে তুলে নেয়ার কথা বলছে- তাও পরমাণু সমঝোতা বাস্তবায়নের আগের প্রক্রিয়ায় ইরানের ফিরে আসার শর্তসাপেক্ষে!

অন্যদিকে ইরান ট্রাম্পের শাসনামলে ইরানের ওপর আরোপিত দেড় হাজার নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার দাবি জানাচ্ছে। তাই এটা স্পষ্ট বাইডেনের নেতৃত্বাধীন মার্কিন সরকারও ইরানের পরমাণু সমঝোতার মূল ও পুরনো ধারায়  পুনরায় ফিরে আসতে চাইছে না  বরং ট্রাম্পীয় বলদর্পিতার নীতি ও সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগেরই নীতিকেই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে প্রয়োগ করতে চায়। #

পার্সটুডে/এমএএইচ/১১