ইরানের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের দুই দলই একই নীতি অনুসরণ করছে: উইন্ডি শেরম্যান
https://parstoday.ir/bn/news/iran-i95624-ইরানের_ব্যাপারে_যুক্তরাষ্ট্রের_দুই_দলই_একই_নীতি_অনুসরণ_করছে_উইন্ডি_শেরম্যান
মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইন্ডি শেরম্যান সিনেট অধিবেশনে দেয়া এক ভাষণে স্বীকার করেছেন, ডেমোক্রেট এবং রিপাবলিক উভয় দলই ইরানের ব্যাপারে একই নীতি অনুসরণ করে চলেছে। ইরানের ব্যাপারে কি ধরনের পদক্ষেপ নেয়া যায় সে বিষয়ে ওই দুই দলের মধ্যে মতবিরোধের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেছেন, ইরানের ব্যাপারে আমাদের সবার নীতি একই কিন্তু কৌশল বা পদ্ধতিগত মত ভিন্নতা রয়েছে। আমি মনে করি বর্তমান বাইডেন সরকারও ইরানের ওপর সর্বাত্মক নিষেধাজ্ঞা আরোপের নীতিতে বিশ্বাসী।
(last modified 2025-07-29T12:16:04+00:00 )
আগস্ট ০৭, ২০২১ ১৭:৫৮ Asia/Dhaka

মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইন্ডি শেরম্যান সিনেট অধিবেশনে দেয়া এক ভাষণে স্বীকার করেছেন, ডেমোক্রেট এবং রিপাবলিক উভয় দলই ইরানের ব্যাপারে একই নীতি অনুসরণ করে চলেছে। ইরানের ব্যাপারে কি ধরনের পদক্ষেপ নেয়া যায় সে বিষয়ে ওই দুই দলের মধ্যে মতবিরোধের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেছেন, ইরানের ব্যাপারে আমাদের সবার নীতি একই কিন্তু কৌশল বা পদ্ধতিগত মত ভিন্নতা রয়েছে। আমি মনে করি বর্তমান বাইডেন সরকারও ইরানের ওপর সর্বাত্মক নিষেধাজ্ঞা আরোপের নীতিতে বিশ্বাসী।

এখানে উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে সাবেক এই মার্কিন কর্মকর্তা ইরানের বিরুদ্ধে 'সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টি'র প্রচেষ্টার কথা না বলে তিনি 'সর্বাত্মক এ নিষেধাজ্ঞা'র কথা বলেছেন। কারণ বাইডেন ইরানের বিরুদ্ধে 'সর্বাত্মক নিষেধাজ্ঞা' শব্দটি ব্যবহার করতে চান না। ইরান বিষয়ক মার্কিন সরকারের বিশেষ প্রতিনিধি রবার্ট মলিসহ প্রেসিডেন্ট বাইডেন এর আগে স্বীকার করেছিলেন ইরানের বিরুদ্ধে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টির নীতি সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে নির্বাচনী প্রচার চলাকালে দাবি করেছিলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গিয়ে অনেক বড় ভুল করেছেন এবং ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ মার্কিন জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী। কেননা এতে করে যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। কিন্তু গত জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের পর জো বাইডেনও ইরানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রেখে দেশটির বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টির নীতিতে অটল রয়েছেন। কোন দেশ পরমাণু সমঝোতা লঙ্ঘন করেছে সে বিষয়ে কিছু উল্লেখ না করে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে প্রেসিডেন্ট বাইডেন পরমাণু সমঝোতায় ফেরার জন্য অযৌক্তিক সব শর্ত জুড়ে দিয়েছেন। তিনি ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি সীমিত করে আনা এবং মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রভাব বা কর্মতৎপরতা বন্ধের দাবি জানান। অথচ তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ইরান যদি পরমাণু সমঝোতা পুরোপুরি মেনে চলে তাহলে ওয়াশিংটনও এ সমঝোতায় ফিরে আসবে এবং ওয়াদা পূরণ করবে।

অবাক ব্যাপার হচ্ছে বাইডেন প্রশাসন পরমাণু বিষয়ে এমন একটি সমঝোতার কথা বলছেন যা হবে অস্থায়ী। মার্কিন রাজনৈতিক বিশ্লেষক জোসেফ সেরিন চয়েন বলেছেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেনও ইরানের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টির নীতি বহাল রেখেছেন। এ অবস্থায় বাইডেন যতদিন পর্যন্ত না এ নীতি থেকে সরে আসবেন ততদিন পর্যন্ত পরমাণু সমঝোতার পুনরুজ্জীবন সম্ভব নয়।

এদিকে, প্রেসিডেন্ট বাইডেনের অযৌক্তিক নীতির বিপরীতে ইরান সাফ জানিয়ে দিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর থেকে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পর তা যাচাই বাছাই করে ইরান যেদিন নিশ্চিত হবে যে সত্যিই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়েছে সেদিনই কেবল ইরান পরমাণু সমঝোতায় ফিরে যাবে।

বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন শুধু ইরান নয় বরং সব দেশের ওপরই নিজেদের একতরফা দাবি ও নানান রকম শর্ত চাপিয়ে দিচ্ছেন কিন্তু এর বিনিময়ে তিনি খুব সামান্য নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন এবং এমনকি পরমাণু সমঝোতার ব্যাপারে দেয়া প্রতিশ্রুতিতেও অটল থাকার কোনো নিশ্চয়তা তিনি দিচ্ছেন না। সমঝোতার পরও ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার কোনো প্রতিশ্রুতিই তিনি দিচ্ছে না। বলা যায় তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ব্যর্থ নীতি হুবহু অনুসরণ করছেন।#

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/৭