জাপানকে প্রেসিডেন্ট রায়িসি
ইরানের আটক সম্পদ ছেড়ে দেয়ার বিষয়ে বিলম্ব যৌক্তিক নয়
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসি বলেছেন, জাপানের ব্যাংকে ইরানের যে সমস্ত সম্পদ আটক রয়েছে তা ছেড়ে দেয়ার বিষয়টি বিলম্বিত হওয়া যুক্তিযুক্ত নয়। ইরানি অর্থ ছাড় করার ব্যাপারে জাপানের গড়িমসি ভূমিকার সমালোচনা করেন তিনি।
তেহরান সফররত জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তোশিমিৎশু মোতেগির সঙ্গে আজ (রোববার) এক বৈঠকে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রায়িসি এসব কথা বলেন। এর আগে গত ফেব্রুয়ারি মাসে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাওয়াদ জারিফ জাপানের কিয়োদো নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে ইরানের জব্দকৃত সম্পদ ছেড়ে দেয়ার জন্য জাপানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। মার্কিন অবৈধ ও একতরফা নিষেধাজ্ঞার কারণে জাপান ইরানের সব সম্পদ আটকে রেখেছে। সেসময় জাওয়াদ জারিফ ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার ব্যাপারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে প্রভাবিত করার জন্য জাপানের প্রতি আহ্বান জানান।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে বেআইনি উল্লেখ করে জাওয়াদ জারিফ বলেছিলেন, “তেহরান জাপানের কাছ থেকে প্রকৃত বন্ধুর আচরণ আশা করে।”
আজকের বৈঠকে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রায়িসি পরমাণু সমঝোতা প্রসঙ্গে বলেন, এ ব্যাপারে ইরান তার দায়িত্ব পুরোপুরি পালন করেছে, আমেরিকা তার দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে। তারাই একতরফাভাবে আন্তর্জাতিক এই সমঝোতা থেকে সরে গেছে। তিনি আরো বলেন, ইউরোপের তিন দেশ ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং জার্মানিও আমেরিকার পথ অনুসরণ করেছে এবং এই চুক্তি বাস্তবায়নের দায়িত্ব তারা পালন করে নি। এখন আমেরিকাকে অবশ্যই বিশ্ববাসীর কাছে জবাব দিতে হবে- কেন তারা আন্তর্জাতিক এই চুক্তির প্রতি সম্মান না দেখিয়ে বেরিয়ে গেছে। ইব্রাহিম রায়িসি জাপানি মন্ত্রীকে বলেন, আলোচনা নিয়ে ইরানের কোনো সমস্যা নেই তবে কোনো প্রেক্ষাপটে ইরানি জনগণের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত থাকবে?
আফগানিস্তান প্রসঙ্গে ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, “দেশটিতে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টার প্রতি ইরান সবসময় সমর্থন দিয়েছে এবং এই সমর্থন ভবিষ্যতেও থাকবে। আমরা মনে করি, কেবলমাত্র আফগানিস্তানের জনগণই তাদের দেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।” আফগানিস্তানে বিদেশি সেনা উপস্থিতির সমালোচনা করে তিনি বলেন, এর মাধ্যমে দেশটির বিদ্যমান সঙ্কট জটিল এবং দীর্ঘায়িত হবে।
বৈঠকে জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় তার দেশ সবসময় প্রচেষ্টা চালিয়েছেন এবং ইরানের সঙ্গে ছয় জাতিগোষ্ঠীর সই হওয়া পরমাণু সমঝোতাকে আন্তর্জাতিক চুক্তি হিসেবে সবসময় সমর্থন জানিয়েছে। তিনি বলেন, জাপান বিশ্বাস করে এ সমঝোতার পুনরুজ্জীবন সব দেশের স্বার্থে জরুরি। পরমাণু সমঝোতা বিভিন্ন সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে সহায়তা কর পারে বলেও তোমেগি উল্লেখ করেন।
প্রেসিডেন্ট রায়িসির সঙ্গে বৈঠকের আগে জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন।#
পার্সটুডে/এসআইবি/২২