মে ০৫, ২০২২ ১৭:৪৯ Asia/Dhaka
  • রেডিও তেহরানে নেশাগ্রস্ত বাংলাভাষী মানুষ: তরুণ মৈত্র

তুমি সৃষ্টি হয়েছো ১৯৮২ সালে। আজ তুমি কিশোর। যৌবন অতিক্রম করে চলেছো নব প্রাক বার্ধক্যের দিকে। চলার পথে কোথাও তোমার জরাজীর্ণ ভাবাবেগ পরিলক্ষিত হয় নি । চল্লিশ বছরে যেমন ছিলে, আজও তেমনিভাবে হাজার তারার মাঝে তুমি (রেডিও তেহরান) বাঙালীর হৃদয়ে অম্লান হয়ে আছো। যেন মনে হয় রেডিও তেহরানে নেশাগ্রস্ত বাংলাভাষী মানুষ ।

রেডিও তেহরানের চল্লিশতম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সকল কলাকুশলী ও শ্রোতাবন্ধুদের জানাই হৃদয়ের অন্তস্থল থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

গণমাধ্যম হচ্ছে সংগৃহীত সকল ধরনের মাধ্যম, যা প্রযুক্তিগতভাবে গণযোগাযোগ কার্যক্রমে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। সম্প্রচারমাধ্যম-যা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া নামে পরিচিত-বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির সাহায্যে তাদের তথ্যাবলি প্রেরণ করে। বেতার, অন্যান্য সুবিধাজনক ছোট ও সহায়ক যন্ত্রপাতি যেমন: ক্যামেরা বা ভিডিওচিত্রের সাহায্যে ধারণ করা হয়।

একজন শ্রোতা হিসেবে রেডিও তেহরানের ভূমিকাকে বিশ্বের অন্যান্য বেতার থেকে অনেক সামনে এগিয়ে রাখি এবং পরম আপনজনের মতো হৃদয়ে লালন করি। একটি গ্রহণযোগ্য গণমাধ্যম হিসেবে রেডিও তেহরানের ভূমিকাগুলো সংক্ষেপে আলোচনা করা হল:

১)  সংবাদ: মূল কাজ হল সংবাদ পরিবেশন করা। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সংবাদ সংগ্রহ করে, আকর্ষণীয়ভাবে বিশ্ব সংবাদে পরিবেশন করে রেডিও তেহরান। রঙ দেখে নয, নিরপেক্ষতাকে প্রাধান্য দেয় রেডিও তেহরান।

২)  এ বেতারের অনুষ্ঠান শ্রোতা/পাঠকদের মধ্যে সামাজিক চেতনা জাগিয়ে তোলে। সংবাদ বা তথ্যগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতা প্রতিষ্ঠার জন্য উৎস এবং ছবিসহ সংবাদ পরিবেশন করা হয়,যা অতুলনীয় এবং স্বাদে বৈচিত্রময়।

৩)  সংবাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা হল জনমত গঠন করা। রেডিও তেহরানের সংবাদ থেকে মানুষ বিভিন্ন বিষয়ে সঠিক ধারণা লাভ করে। আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে কিন্তু রেডিও তেহরান সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচার করে জনমত গঠন ও সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে। রেডিও তেহরান শ্রোতাদের মতামতকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়।

৪)  রেডিও তেহরানের বিভিন্ন অনুষ্ঠান যেমন-আদর্শ মানুষ গড়ার কৌশল, স্বাস্থ্যকথা, গল্প ও প্রবাদের গল্প, রংধনু আসর শ্রোতাদের মানসিক বিকাশে সহায়তা করে। অল্প বয়স থেকে ছাত্রছাত্রীরা নিয়মিত অনুষ্ঠান শুনলে তাদের জ্ঞানের পরিধি যেমন বাড়ে, তেমনি তাদের মনেরও বিকাশ ঘটে।

৫) এ বেতারের ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলো যেমন- কুরআনের আলো, আসমাউল হুসনা, প্রাচ্যবিদদের চোখে মহানবী ইত্যাদি পাঠক-শ্রোতাদের আচরণে পরিবর্তন ঘটাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। অমুসলিমদের জন্য ইসলাম ধর্মের স্বরূপ উপলব্ধিতে সহায়তা করে।

৬) ইরানের জাতীয় সম্প্রচার সংস্থার অধীনস্থ রেডিও তেহরান বাংলা অনুষ্ঠান বিভিন্ন ইস্যুতে ইরান সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে। ইরান ভ্রমণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ইরানের সঙ্গে শ্রোতাদের পরিচয় করিয়ে দেয়। এছাড়া,  ইরানের বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি, ঐতিহাসিক এবং শিক্ষামূলক লেখাগুলো জ্ঞানের ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করে।

৭) রেডিও  তেহরান শুধু যে অনুষ্ঠান প্রচার করে তাই নয়, বরং দুই বাংলার মানুষের মাঝে সেতুবন্ধন তৈরি করে। দুই বাংলার কৃষ্টি-কালচার তুলে ধরে কোটি কোটি বাঙালি হৃদয়ের মনিকোঠায় স্থান দখল করেছে রেডিও তেহরান। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে প্রতিটি বাঙালির দুয়ারে সঠিক সংবাদ পৌঁছে দিতে নিরলসভাবে কাজ করছে এ বেতারটি।

৮)  আট থেকে আশি বছর পর্যন্ত সবার পছন্দের গণমাধ্যম হলো রেডিও তেহরান। শ্রোতাদের উৎসাহ বৃদ্ধির জন্য কুইজ প্রতিযোগিতা, শ্রেষ্ঠ শ্রোতা পুরস্কার, সাক্ষাৎকার গ্রহণ এবং তা প্রিয়জনে তুলে ধরা, শ্রোতাদের গুরুত্বপূর্ণ চিঠিগুলো ওয়েবসাইটে তুলে ধরা- এ বেতারের ব্যতিক্রমি বৈশিষ্ট্য। এমন বেতার পেয়ে শ্রোতারা সত্যিই গর্বিত।

এ বছর  রেডিও তেহরান প্রতিষ্ঠার চল্লিশতম বার্ষিকী পূর্ণ করলো। এ উপলক্ষে সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। কোটি বাঙালির হৃদয়ে অবস্থান নেয়া এ বেতারটি আগামী প্রজন্মের জন্য সঠিক দিশা দেবে এবং হিংসামুক্ত সমাজ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখবে- এটাই বিশ্বাস করি। আমি ও আমরা রেডিও তেহরান বাংলা বিভাগ থেকে আলোর রঙিন পথ খুঁজে পাই। তুমি (রেডিও তেহরান ) যে মুক্তিকামী নুতন সূর্য।


তরুণ মৈত্র
ইসলামপুর,মুর্শিদাবাদ, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।
পেশা: শিক্ষক 
মোবাইল ফোন নম্বর: ৮৬৪০৮৬৯৩৭১ 
 

 

ট্যাগ