‘আমার সাফল্যের জন্য রেডিও তেহরানের কাছে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ’
(last modified Tue, 13 Sep 2022 04:28:39 GMT )
সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২২ ১০:২৮ Asia/Dhaka
  • ‘আমার সাফল্যের জন্য রেডিও তেহরানের কাছে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ’

‘রেডিও তেহরান’ নামটির সঙ্গে পরিচিত খুব ছোটো থেকেই। আব্বুর মুখে প্রথম শুনেছিলাম নামটি। তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। যতটা মনে পড়ে আব্বু মাগরিবের নামাজ শেষ করে বইপত্র নিয়ে বসতেন, পাশে থাকতো রেডিও। নির্দিষ্ট সময়ে সময়ে বেজে উঠতো রেডিওটি। যথারীতি মা আমাকে নিয়ে পড়াতে বসতেন। পড়াশোনার পাশাপাশি আমার খেয়াল থাকতো আব্বুর রেডিওতে।

মাঝে মাঝে আব্বুর কাছে জানতে চাইতাম রেডিওতে এখন কী হচ্ছে? আব্বু উত্তরে কখনও বলতেন আকাশবাণী কোলকাতার সংবাদ হচ্ছে। আবার কখনো বলতেন রেডিও তেহরানের বিশ্ব সংবাদ হচ্ছে। শিশু মন মানে হাজারও প্রশ্নের সমাহার, সেই অভ্যাসের ব্যতিক্রম ছিল না আমার মধ্যেও। প্রশ্নবাণে বিরক্ত করতাম আব্বুকে। সেসময়কার কথা আবছা মনে আছে। পাশাপাশি সেসব কথা এখন গল্প করেন আব্বুও। রেডিও তেহরানের বিশ্ব সংবাদ শেষ হলে আমাকে কোলে বসিয়ে সারাংশ শোনাতেন। 

আনুমানিক ২০০৪/২০০৫ সালের কথা সেসময় আব্বুর থেকেই প্রথম জেনেছিলাম সংবাদ কী, বিশ্ব সংবাদ কী ইত্যাদি। আব্বু প্রতিদিন সংবাদ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে এবং দিনকাল সম্পর্কে আমাকে বিভিন্ন কথা বলতেন এবং এখনও সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে। আমার অজানা কোনও বিষয় এখনও তাঁর কাছ থেকে জেনে নেই।

আব্বুর মুখে আমি বহুবার রেডিও তেহরানের প্রশংসা শুনেছি। শুনেছি রেডিও তেহরান মুসলিম বিশ্বের সেরা সংবাদ পরিবেশন করে থাকে। শুনেছি বিশ্বের সমস্ত আকর্ষণীয় রাজনৈতিক বড় বড় সংবাদ রেডিওতে রেডিও তেহরানের বিশ্ব সংবাদে কান পাতলেই শোনা যায়। পরবর্তীতে উচ্চবিদ্যালয়ে পড়ার সময়ে আব্বুর সাথে আমিও রেডিও তেহরানের একজন নিয়মিত শ্রোতা হয়ে উঠি। প্রত্যহ দিন শেষ বিশ্ব সংবাদ শোনার জন্য কান পেতে থাকতাম রেডিও তেহরানে। আজও ব্যতিক্রম হয় না। তবে আজ আর রেডিওতে শোনা হয় না যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে। 

রেডিও তেহরানের কোলকাতার সংবাদদাতা আব্দুল হাকিম সাহেবের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারি রেডিও তেহরানের বাংলা ওয়েবসাইট রয়েছে পার্স টুডে। গত ৪/৫ বছর ধরে রেডিও তেহরানের বাংলা ওয়েবসাইট পার্সটুডেতে চোখ রেখে আসছি।  সেখান থেকেই মুঠোফোনের মাধ্যমে শুনি রেডিও তেহরানের বিশ্ব সংবাদ। কোলকাতার প্রতিনিধির পাঠানো সংবাদ এবং তার সংবাদ পাঠ আমাদের বেশ ভালো লাগে। এখানকার বাংলা গণমাধ্যমে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও মুসলিম স্বার্থ সংশ্লিষ্ট খবর আসে না। কিন্তু রেডিও তেহরানে আমরা সেটা পেয়ে যাই। এজন্য রেডিও তেহরানের বাংলা সংবাদের জন্য প্রতীক্ষায় থাকি।

এম মেহেদী সানি

রেডিও তেহরানের বিশ্ব সংবাদ শোনার আগ্রহ আগের মতোই আজও একই রকম রয়ে গেছে আব্বুর। তবে সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে রেডিওতে। রেডিও তেহরান আগের মতো শোনা যায় না। সেজন্য মাঝে মাঝে আমার ফোন থেকে আব্বুকে রেডিও তেহরানের বিশ্ব সংবাদ শোনাতে হয়।  

প্রসঙ্গত, গোবরডাঙ্গা হিন্দু কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক স্তরে পাঠকালীন স্থানীয় পত্র-পত্রিকায় টুকটাক লেখালিখি শুরু করি এবং সাংবাদিকতার নেশা ছিল প্রবল। আঞ্চলিক গণমাধ্যমে সংবাদ পাঠ এবং অনুষ্ঠান মঞ্চ সঞ্চালনা শুরু করি। পাশাপাশি স্নাতক পাঠ শেষ করে, গোবরডাঙ্গা হিন্দু কলেজ থেকে সাংবাদিকতার ওপর একটি কোর্স করি। সেসময় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ছাত্র যুব উৎসবে বিশ্ব সংবাদ পাঠ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে সেখানে ব্লক স্তরে শীর্ষ স্থান অধিকার করে জেলাস্তরে অংশগ্রহণ করি এবং সেখানেও বিজয়ী হয়েছিলাম। আর এই সাফল্যের জন্য রেডিও তেহরানের কাছে আমি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। কারণ, আমি আমার সমস্ত সংবাদ সংকলন করেছিলাম রেডিও তেহরানের বাংলা ওয়েবসাইট পার্সটুডে থেকে। সংবাদ পাঠ শেষ সংবাদ সূত্র উল্লেখ করার নিয়ম অনুযায়ী 'রেডিও তেহরান' উল্লেখ করেছিলাম। উৎকৃষ্ট মানের বিশ্ব সংবাদ নির্বাচনের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে প্রশংসা পেয়েছিলাম। পাশাপাশি বিচারকেরা বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন।

ওই সাফল্যের কারণে পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি বিশেষ শংসাপত্র প্রদান করেছিলেন। আমার সাফল্যের জন্য রেডিও তেহরানের কাছে কৃতজ্ঞ। বর্তমানে আমি দৈনিক 'আপনজন' পত্রিকায় সাংবাদিক এবং আপনজন টিভির সঞ্চালক হিসেবে যুক্ত। আমার উত্তরোত্তর সাফল্যের জন্য সকলের কাছে দোয়া প্রত্যাশা করছি। দোয়া করি রেডিও তেহরান আপন গতিতে এগিয়ে যাক, দৃঢ় কণ্ঠে সংবাদ পরিবেশন করুক। সত্যের পতাকা নিয়ে এগিয়ে চলুক। ফিলিস্তিনসহ বিভিন্ন প্রান্তের অসহায় মজলুমদের প্রতিবাদ ধ্বনিত হোক দিকে দিকে। রেডিও তেহরান পথ দেখাক গোটা বিশ্বকে। বিশ্বসংবাদ, মুসলিম বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ জানতে আমরা চোখ রাখব, কান পাতব রেডিও তেহরানে।

 

এম মেহেদী সানি

গ্রাম: ঝনঝনিয়া, পো: ও থানা- গোবরডাঙ্গা

জেলা: উত্তর ২৪ পরগণা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।

 

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/১৩

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ