এপ্রিল ১৪, ২০২৩ ২১:৪৪ Asia/Dhaka
  • বিধান চন্দ্র সান্যাল ও মনীষা রায়
    বিধান চন্দ্র সান্যাল ও মনীষা রায়

ফার্সি নববর্ষ-১৪০১ বা নওরোজ উপক্ষে গত ২১ মার্চ সান্ধ্য অধিবেশনে রেডিও তেহরান একটি বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করেছে। অনুষ্ঠানটি সম্পর্কে ভালোলাগার অনুভূতি জানিয়ে অনেকেই চিঠি লিখেছেন। সেগুলোর মধ্যে দুটি চিঠি পার্সটুডের পাঠকদের জন্য উপস্থাপন করা হলো:

মহাশয়, ২১ মার্চ ফার্সি নববর্ষ উপলক্ষে রেডিও তেহরানের নবরূপে অভিনব পরিবেশনা শুধু ভালো লেগেছে বললে কম বলা হবে। অনুষ্ঠানটির পরিবেশনার আঙ্গিক নিঃসন্দেহে প্রশংসার জন্য এবং শ্রোতাদের মনে বিশেষ দাগ কেটেছে। প্রথমেই এই অনুষ্ঠানের রচনা ও গ্রন্থনায় যিনি ছিলেন তার এই অভিনব প্রয়াসকে ধন্যবাদ জানাই।

'আবার এসেছে নওরোজ' সুরেলা কণ্ঠে গান গাওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের খাঁটি আঞ্চলিক ভাষায় যেভাবে নাট্যরূপে অনুষ্ঠানটি সাজানো হয়েছে তাতে করে আমি রেডিওতে শোনার পর ফেসবুকে তিনবার শুনতে বাধ্য হয়েছি- অনুষ্ঠানটির আবেগময়তার অভিনবত্বের জন্য। যেভাবে গল্পের ছলে নওরাজ উৎসবের বাহ্যিক- আচার অনুষ্ঠান, খাদ্য-খাবার, প্রকৃতির বর্ণনা আর অনুষ্ঠানের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরা হলো তা স্মৃতির মনিকোঠায় চির জাগরুক থাকবে সন্দেহ নেই। ফার্সি গানের ব্যবহার আর নাসির মাহমুদ ভাইয়ের সুমিষ্ট কণ্ঠে বাংলা ভাবানুবাদে সত্যি এক অন্য জগতে মনটা চলে যায়। আর এতেই এই অনুষ্ঠানটি সর্বাঙ্গীন সার্থকতা লাভ করেছে সন্দেহ নেই। সঙ্গে শ্রোতাদের আকর্ষণ বজায় রাখতে মজার কৌতুক আর সেই কৌতুকের মধ্য দিয়ে মানবিকতার দিকনির্দেশনা অনুষ্ঠানটিকে এক বিশেষ মাত্রায় পৌঁছে দেয়। সার্থক পরিবেশনা । ধন্যবাদ রেডিও তেহরানের বাংলা বিভাগকে।

 

ধন্যবাদান্তে

 

বিধান চন্দ্র সান্যাল

ঢাকা কলোনী, বালুরঘাট, দক্ষিণ দিনাজপুর, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।

 

নওরোজ-১৪০২ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানটি শুনতে এই লিংকে ক্লিক করুন

 

প্রিয় মহোদয়, প্রথমে ফার্সি নববর্ষ বা নওরোজের আন্তরিক প্রীতি, শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। আশা করি সকলে কুশলে আছেন।

গত ২১ মার্চ ছিল ফারসি নববর্ষ বা নওরোজের প্রথম দিন। দিনটি উপলক্ষে রেডিও তেহরান বাংলার বিশেষ অনুষ্ঠান প্রাণভরে উপভোগ করলাম। বিশেষ এই অনুষ্ঠানের আয়োজনে ছিল আলোচনা, কৌতুক, গল্প এবং ফার্সি গান। ফারসি নববর্ষ সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য পেলাম এই অনুষ্ঠান থেকে; যা আমার আগে জানা ছিলো না। ওই দিনে আয়োজনে যা ছিল তা হলো--

"আবার এসেছে নওরোজ সবার জীবনে

চলো না ঘুরে আসি সবুজ বনে"

এই সুন্দর গানটি দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হলো। কেননা ইরান হলো পার্কের দেশ এবং বনবনানির দেশ। নওরোজ মানে ইরানে বসন্ত। আর বসন্তে বাগানে নানা ফুল ফোটে। আর ইরানিরা খুব সৌন্দর্য প্রিয়। তাই ইরানিরা সৌন্দর্যের স্বাদ পেতে ঘুরতে পছন্দ করেন সবুজ বনে। আর ইরানিদের ঐতিহ্যই হলো সবুজ বনে ঘুরতে যাওয়া। নওরোজের সময় ইরানের মানুষ ঘরবাড়ি, অফিস, পার্ক, রাস্তাঘাট সবকিছু পরিষ্কার করে থাকেন। এটাই তাদের রীতি। এছাড়া ইসলামে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ।

অনুষ্ঠান থেকে জেনেছি যে, ইরান ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আফগানিস্তান, তুর্কিমেনিস্তান, তাজিকিস্তান, তুরস্ক, আজারবাইজান, পাকিস্তান, ভারত এবং ইরাকে জাতীয় পর্যায়ে নওরোজ পালিত হয়। ইরানের শিল্পীর কণ্ঠে একটি ফারসি গান বাজানো হয়। যার অর্থ না বুঝলেও সুর কিন্তু ভালো লাগলো। পরে অবশ্য নাসির মাহমুদ দাদা গানটির বাংলা অনুবাদ করে দেন।

নওরোজ শুরুর একমাস আগে থেকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রস্তুতি নেওয়া হয়। ইরানিরা পরিচ্ছন্ন এবং সৌন্দর্য প্রিয়। তাই তারা পরিষ্কার করতে এবং পরিষ্কার রাখতে খুব পছন্দ করেন। একটি ট্রে তে সুন্দরভাবে সাজিয়ে রাখা হয় ডিম, আয়না, লাল মাছ, কুরআন শরীফ আর থাকে গমের তৈরি বিশেষ খাবার। একটি সুন্দর কৌতুক পরিবেশন করা হয়। সবশেষে টাকা পয়সার অভাবে যারা ঈদের আনন্দ করতে পারে না যাদের যেটুকু আছে তাই দিয়ে অন্যকে সাহায্যের আহবান করা হয়। যাতে সবাই মিলে এদের আনন্দটুকু ভাগ করে নেওয়া যায়।

সব মিলিয়ে জম্পেশ একটা আনন্দঘন এবং মনোজ্ঞ অনবদ্য অনুষ্ঠান উপহার পেয়ে দারুন উপভোগ করলাম। এই অনুষ্ঠানের নেপথ্য কারিগর শ্রদ্ধেয় নাসির মাহমুদ, শ্রদ্ধেয় গাজী আব্দুর রশিদ, শ্রদ্ধেয় আশরাফুর রহমান মহাশয় এবং শ্রদ্ধেয়া আক্তার জাহান মহাশয়াকে জানাই হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা এবং নওরোজের আন্তরিক অভিনন্দন।

পুরো বছরটি সবার জন্য বয়ে আনুক আনন্দ আর আনন্দ এবং হাস্য উজ্জ্বল থাক সবার মুখ। এই কামনায় ইতি টানলাম। ভুল ত্রুটির জন্য ক্ষমা প্রার্থনীয়।

 

শুভেচ্ছা সহ

 

মনীষা রায়

ধুলিয়াখালিসা, মেখলিগঞ্জ, কোচবিহার, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।

 

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/১৪

ট্যাগ