ইয়েমেনের সুপ্রিম পলিটিক্যাল কাউন্সিল হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, সৌদি আরব যদি যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশটির ওপর সামরিক আগ্রাসন অব্যাহত রাখে তাহলে ইয়েমেনের সেনারাও সৌদি আরবের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা চালাতে থাকবে।
সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি আরামকোর একটি স্থাপনায় ইয়েমেনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে রিয়াদ। সৌদি সরকার বলেছে, হুথিরা ‘বিশ্ব অর্থনীতি ও এর সরবরাহ পথের মূলে’ আঘাত হেনেছে।
ইয়েমেনে হুথি আনসারুল্লাহ আন্দোলন সমর্থিত সেনারা সৌদি আরবের বন্দরনগরী জেদ্দার আরামকো তেল স্থাপনায় আবার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। যেখানে ইয়েমেনের যোদ্ধারা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে সেটি হচ্ছে আরামকো কোম্পানির তেল ডিস্ট্রিবিউশন স্টেশন।
সৌদি আরবের দু’টি তেল স্থাপনায় হামলার কাজে ব্যবহৃত ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ‘ইরানি ছিল’ বলে জাতিসংঘ যে রিপোর্ট দিয়েছে সে বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাওয়াদ জারিফ বলেছেন, দুঃখজনকভাবে জাতিসংঘের সচিবালয় মার্কিন হুমকির কাছে নত হয়েছে।
ইয়েমেনের জনপ্রিয় হুথি আনসারুল্লাহ আন্দোলন সমর্থিত সেনাবাহিনী জানিয়েছে, সৌদি বিমান হামলার জবাবে তারা দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি বিমানবন্দর ও আরামকো তেলস্থাপনায় নতুন করে হামলা চালিয়েছে।
আমেরিকার প্রভাবশালী গণমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, সৌদি আরব গোপনে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করছে। সৌদি আরব যখন অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে এবং আমেরিকা কতটা রিয়াদকে সমর্থন দেবে তা নিয়ে সন্দেহ দানা বাঁধছে তখন ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল এ খবর দিল।
সৌদি আরবের সর্ববৃহৎ তেল স্থাপনা আরামকোর উপর গত সেপ্টেম্বর মাসে যে হামলা হয়েছে তার পেছনে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের হাত রয়েছে বলে নিশ্চিত করতে পারে নি জাতিসংঘ। মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, হামলায় ইরান জড়িত রয়েছে বলে যে অভিযোগ করা হচ্ছে বিশ্ব সংস্থা তাদের তদন্তে তা সত্য বলে সমর্থন করতে পারছে না।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার বলেছেন, ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য আমেরিকা তিন হাজার সেনা মোতায়েন করছে সৌদি আরবে।
সৌদি আরবের বৃহত্তম তেল স্থাপনা আরামকোর ওপর ইয়েমেনের হুথি আনসারুল্লাহ আন্দোলন সমর্থিত সেনাবাহিনীর ড্রোন হামলায় ২০০ কোটি ডলার মূল্যের তেল উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। ব্রিটিশ পত্রিকা ফিনান্সিয়াল টাইমস এ খবর জানিয়েছে।
সৌদি যুবরাজ মুহাম্মাদ বিন সালমানের নেতৃত্বের ব্যাপারে রাজ পরিবারের অনেক সদস্য হতাশ হয়ে পড়েছেন এবং যুবরাজের বিরুদ্ধে সমালোচনা জোরদার হচ্ছে। সৌদি আরবের সর্ববৃহৎ তেল স্থাপনা আরামকোর উপর ইয়েমেনের হুথি আনসারুল্লাহ আন্দোলন এবং তাদের সমর্থিত সেনাদের ড্রোন হামলার পর এই অবস্থা তৈরি হয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স গতকাল এই খবর দেয়।