ফালুজা উদ্ধার অভিযান চলছে: যুদ্ধে ইসলামী রীতি মেনে চলার আহ্বান সিস্তানির
(last modified Thu, 26 May 2016 11:56:15 GMT )
মে ২৬, ২০১৬ ১৭:৫৬ Asia/Dhaka

ইরাকের প্রভাবশালী আলেম আয়াতুল্লাহ আলী সিস্তানি উগ্র তাকফিরি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএসআইএল বা দায়েশের কবল থেকে ফালুজা শহর মুক্ত করার অভিযানে যুদ্ধের ময়দানে ইসলামী আদব ও রীতি নীতি মেনে চলার জন্য সেনাবাহিনীর প্রতি আহবান জানিয়েছেন।

আয়াতুল্লাহ সিস্তানি দায়েশের দখলীকৃত বিভিন্ন এলাকা উদ্ধারে সরকার ও জনগণের সহযোগিতায় ব্যাপক সন্তোষ প্রকাশ করে আল আনবার প্রদেশের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ শহর ফালুজা মুক্ত করার অভিযানের ব্যাপারে সেনাবাহিনীকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, ইসলামী জিহাদের ক্ষেত্রে ধর্মীয় কিছু রীতি নীতি রয়েছে যা কিনা অমুসলিমদের সঙ্গে আচরণের ব্যাপারেও মেনে চলতে হবে। ইরাকের প্রভাবশালী এ আলেম এর আগেও আল আনবার প্রদেশের রামাদি শহর এবং সালাউদ্দিন প্রদেশের কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ তিকরিত শহর উদ্ধার অভিযানের প্রাক্কালে মানুষের প্রাণহানি যতটা সম্ভব কমিয়ে আনার জন্য ইরাকের পুলিশ, সেনাবাহিনী ও গণবাহিনীর প্রতি আহবান জানিয়েছিলেন।

দায়েশ সন্ত্রাসীদের সমর্থক মিডিয়াগুলো যখন ইরাকের সেনা ও গণবাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যাপক অপপ্রচার চালাচ্ছে ঠিক তখন আয়াতুল্লাহ সিস্তানি ফালুজা শহর মুক্ত করার অভিযানে অংশগ্রহণকারী সেনাদেরকে এ মানবিয় ও ধর্মীয় উপদেশ দিলেন। দায়েশ সন্ত্রাসীদের সমর্থক আল আরাবিয়া ও আল জাজিরার মতো প্রচার মাধ্যমগুলো গত সোমবার থেকে ফালুজা শহর মুক্ত করার অভিযানের ওপর নানা মিথ্যা খবর ও ছবি প্রচার করছে। তারা ইরাকের সেনা ও গণবাহিনীর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রচারণা শুরু করেছে।

দায়েশ সমর্থক গণমাধ্যমগুলোর প্রচারণা সম্পর্কে ইরাকের কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, ফালুজা শহর উদ্ধার অভিযান শুরুর একই সময়ে দায়েশ সন্ত্রাসীরা তাদের অনুসারীদেরকে সেনাবাহিনীর পোশাক পরে ফালুজার জেলখানায় আটক বন্দীদের হত্যার নির্দেশ দিয়েছে। তারা বন্দী হত্যাকাণ্ডের ছবি ও ভিডিও তুলে রাখারও পদক্ষেপ নিয়েছে। এরপর তারা এসব হত্যাকাণ্ডের দায় ইরাকের সেনাবাহিনী ও গণবাহিনীর ওপর চাপিয়ে দিয়ে সেদেশে শিয়া-সুন্নি বিরোধ বাধানোর ষড়যন্ত্র করছে।

এ ছাড়া, দায়েশ নেতারা ইরাকের সেনা ও গণবাহিনীকে বদনাম করার জন্য তারা যে শহর থেকে পিছু হটছে সেই শহরের ঘরবাড়ি, মসজিদ, অফিস ভবন সবকিছু ধ্বংস করে দিয়ে চলে যাচ্ছে যাতে এসবের জন্য ইরাকি বাহিনীকে দোষারোপ করা যায়।

সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ও তাদের সমর্থক দেশগুলো এর আগে রামাদি ও তিকরিত মুক্ত করার সময়ও ইরাকের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যাপক অপপ্রচার চালিয়েছিল। কিন্তু এবার ফালুজা শহর মুক্ত করার অভিযান শুরুর একই সময়ে দেশটির প্রভাবশালী ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ সিস্তানি দায়েশের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সময় ইসলামী আদব কায়দা মেনে চলার আহবান জানানোর কারণে শত্রুদের প্রচারণা ভেস্তে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ইরাকের বদর আন্দোলনের সিনিয়র নেতা হাদি আল অমেরি বলেছেন, সেদেশের গণবাহিনী মানবিয় গুণাবলী, ধর্মীয় শিক্ষা ও নীতি নৈতিকতার দিক থেকে সর্বোচ্চ গুনের অধিকারী এবং ফালুজার অধিবাসীদের সঙ্গে তারা মানবিয় আচরণই করবে।

রাজধানী বাগদাদ থেকে ৭০ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত ফালুজা শহর মুক্ত করার অভিযান গত সোমবার থেকে শুরু হয়েছে। ইরাকি সেনা কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে খুব শিগগিরি সন্ত্রাসীদের কবল থেকে পুরো ফালুজা এলাকা মুক্ত করতে সক্ষম হবে। ২০১৪ সালে ফালুজা হচ্ছে প্রথম শহর যা দায়েশ সন্ত্রাসীরা দখল করে নিয়েছিল। ইরাকে দায়েশ সন্ত্রাসীদের দু’টি শক্ত ঘাঁটির মধ্যে ফালুজা হচ্ছে অন্যতম। #

পার্সটুডে রেজওয়ান হোসেন/২৬