বৈরুত বিস্ফোরণের দ্বিতীয় বার্ষিকী: রাজনৈতিক অচলাবস্থা অব্যাহত
(last modified Thu, 04 Aug 2022 12:30:16 GMT )
আগস্ট ০৪, ২০২২ ১৮:৩০ Asia/Dhaka

৪ আগস্ট বৈরুত বিস্ফোরণের দ্বিতীয় বার্ষিকী। ২০২০ সালের ওই বিস্ফোরণে দুই শতাধিক মানুষ নিহত এবং সাড়ে ৬ হাজার আহত হয়েছিল। বিস্ফোরণের ঘটনায় হাসসান দিয়াবের সরকার ইস্তফা দিতে বাধ্য হয়েছিল।

সরকার বিরোধীরা এটাই চেয়েছিল দীর্ঘদিন ধরে। বিস্ফোরণের আগ পর্যন্ত তাদের সেই চাওয়া পূরণ হয় নি। হাসসান দিয়াবের পদত্যাগের পর প্রধানমন্ত্রী মোস্তফা আদিব এক মাস পরই বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে সরকার গঠনে অপারগতার কথা জানান। সাদ হারিরিও ৮ মাস পর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান। শেষ পর্যন্ত নাজিব মিকাতি মন্ত্রীসভা গঠনের দায়িত্ব পান। মিকাতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ছিল নয়া পার্লামেন্ট নির্বাচন করা এবং তিনি ২০২২ সালের মে মাসে নির্বাচন করেছেন। সবাই ভেবেছিল নির্বাচন হয়ে গেলে রাজনৈতিক অচলাবস্থার নিরসন হবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পাবার ৪০ দিন পরও মিকাতি এখন পর্যন্ত নয়া মন্ত্রীসভা গঠন করতে পারেন নি।

বিগত ২ বছরে প্রতিরোধ শক্তি বিরোধী পক্ষ শুরু থেকেই ওই বিস্ফোরণের জন্য হিজবুল্লাহকে দায়ি করার চেষ্টা চালিয়ে এসেছে। সেইসঙ্গে রাজনৈতিক অচলাবস্থার দায়ও তাদের ওপরই চাপানোর চেষ্টা করেছে এবং এখনও করে যাচ্ছে।

এ কারণে হিজবুল্লাহ বৈরুত বিস্ফোরণের দ্বিতীয় বার্ষিকীতে একটি বিবৃতি দিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে: 'গত দুই বছরে আমরা মিডিয়া এবং রাজনৈতিক আক্রমণের ব্যাপক শিকার হয়েছি। সবই ছিল মিথ্যা এবং বানোয়াট অভিযোগ। এসব অভিযোগের কারণে দেশের অভ্যন্তরে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। দেশের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বিনষ্টের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। কিন্তু আমরা রাষ্ট্রদ্রোহী ওই ফেতনাকে অঙ্কুরে বিনষ্ট করার চেষ্টা করেছি। যারা গৃহযুদ্ধ বাধাতে চেয়েছিল তাদের পথও আটকে দিয়েছি'।

এই পরিস্থিতি থেকে প্রমাণ হয়েছে রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তাহীনতা কেবল প্রতিরোধ বিরোধীই নয় বরং লেবাননেরও বিরোধী। মনে রাখতে হবে, লেবাননের জাতীয় ঐক্য ইহুদিবাদী এবং আমেরিকার স্বার্থ বিরোধী। তারা তাই ঐক্য হতে দিচ্ছে না। তারা বৈরুত বিস্ফোরণের প্রকৃত রহস্য উদঘাটন হোক-তাও চায় না। তারা চায় ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করে উদোর পিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপাতে। হিজবুল্লাহকে ওই বিস্ফারণের জন্য দায়ী করে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার পাঁয়তারা করছে তারা।

কিন্তু গেল পার্লামেন্ট নির্বাচনে প্রমাণ হয়েছে জনগণ হিজবুল্লাহর সঙ্গেই রয়েছে। জাতীয় স্বার্থ ও নিরাপত্তার প্রশ্নে জনগণ হিজবুল্লাহকেই প্রাধান্য দেয়।

২০২০ সালের এই দিনে বৈরুত বন্দরের একটি নাইট্রেট বোঝাই গুদামে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটেছিল। বলা হয়ে থাকে ২ হাজার সাড়ে ৭ শ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের মজুদ ছিল ওই গুদামে। এমন এক সময় ওই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল যখন লেবানন মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি ছিল। এমনকি জীবনযাপনের জন্য নিত্য প্রয়োজনীয় মৌলিক চাহিদাগুলো পর্যন্ত নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়েছিল। সরকারের প্রতি জনগণের অবিশ্বাস বেড়ে গিয়েছিল। যার ফলে দেশে রাজনৈতিক অচলাবস্থার সূচনা হয়। বলাবাহুল্য এখনও ওই অচলাবস্থার অবসান হয় নি।#

পার্সটুডে/এনএম/৪

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।