ইরানের সাথে ঘনিষ্ঠ হচ্ছে আরব দেশগুলো: চিন্তিত ইসরাইল
(last modified Sun, 19 Mar 2023 10:15:44 GMT )
মার্চ ১৯, ২০২৩ ১৬:১৫ Asia/Dhaka

ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সচিব আলী শামখানি সম্প্রতি চীন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর শেষ করে আজ ইরাকের কর্মকর্তাদের সাথে সাক্ষাতের জন্য বাগদাদ সফরে গেছেন।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হযরত আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ীর প্রতিনিধি হিসেবে সম্প্রতি তিনি বেইজিং সফর করেন যেখানে চীনের মধ্যস্থতায় ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতা হয় এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। এরপরই তিনি আমিরাত সফরে গিয়ে দুদেশের মধ্যকার সম্পর্ক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন। এ কারণে শামখানির ইরাক সফরকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ইরান ও ইরাকের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ যা কিনা এ অঞ্চলের নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় ভূমিকা রাখবে।

ইরাক হচ্ছে ইরানের দ্বিতীয় বাণিজ্য শরীক দেশ। এ কারণে দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক স্বার্থ সুরক্ষার জন্য বাইরে থেকে চাপিয়ে দেয়া নানা সমস্যা দূর করা এবং ব্যাংকিং সহযোগিতা আরও বাড়ানো খুবই জরুরি। অর্থনৈতিক বিষয়ে সহযোগিতা ছাড়াও সীমান্তে নিরাপত্তা বিষয়ে দুদেশের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি সই আলী শামখানির বাগদাদ সফরের অন্যতম উদ্দেশ্য। 

শামখানির ইরাক সফরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে, আঞ্চলিক সহযোগিতা বিস্তারে এর প্রভাব। ইরানের সাম্প্রতিক সফল কূটনৈতিক তৎপরতার অন্যতম একটি নিদর্শন হচ্ছে তেহরান-রিয়াদ সম্পর্কের উন্নয়ন ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ  চুক্তি সই। এ বিষয়টিকে এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশ ব্যাপক স্বাগত জানিয়েছে। এমনকি যে আমিরাত বেশ ক'বছর ধরে ইরানের সাথে দূরত্ব বজায় রেখে চলতো তারাও ইরানের সাথে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করতে সম্মত হয়েছে। আমিরাতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শেইখ তাহনুন বিন যায়েদ সম্প্রতি  আলী শামখানিকে দেয়া সাক্ষাতে তেহরান-রিয়াদের মধ্যকার সমঝোতার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, এ সমঝোতা সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি এবং নিজেদের উদ্যোগে টেকসই নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় বিরাট ভূমিকা রাখবে। একই সাথে তিনি আবুধাবি ও তেহরানের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক উন্নয়নেও ব্যাপক আগ্রহ প্রকাশ করেন।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, আরব দেশগুলোসহ প্রতিবেশী সব দেশের সাথে ইরানের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা এমন একটি বিষয় যা ইসরাইলের মতো মুসলমানদের ভয়ঙ্কর শত্রুকে চিন্তিত করে তুলেছে। কারণ ইসরাইল সবসময়ই চায় এ অঞ্চলের মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে বিরোধ জিইয়ে রাখতে। এ কারণে তেহরান-রিয়াদ সম্পর্ক স্থাপনের ঘটনায় ইসরাইলি কর্মকর্তারা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। ইসরাইল সবসময়ই ইরানকে এ অঞ্চলের দেশগুলোর জন্য হুমকি হিসেবে তুলে ধরতে চায় এবং এটা দেখাতে চায় যে ইরানের মোকাবেলায় আরব দেশগুলোকে ইসরাইল সুরক্ষা দেবে। এ কারণে সৌদি আরবসহ অন্য আরব দেশকে তেলআবিবের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহী করে তোলার চেষ্টা করছে ইসরাইলি কর্মকর্তারা। এ অবস্থায় ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে ইসরাইল হতাশ হয়ে পড়েছে এবং ইরান বিরোধী জোট গঠনের চেষ্টাও মুখ থুবড়ে পড়েছে।

যাইহোক, ইরান বহুদিন ধরে আরব দেশগুলোর সাথে ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে আর্থ-রাজনৈতিকসহ সব ক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। এ কারণেই ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সচিব আলী শামখানির চীন, আমিরাত ও ইরাক সফরকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।  #    

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১৯  

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।